তাসকিন-সানির জন্য অঝোরে কাঁদলেন মাশরাফি

3স্পোর্টস ডেস্ক :: অবৈধ বোলিং অ্যাকশনের অভিযোগে ফর্মে থাকা তাসকিন আহমেদ ও স্পিনার আরাফাত সানির ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের নিয়ন্ত্রক সংস্থা আইসিসি।

বাংলাদেশের মানুষ একে ষড়যন্ত্র হিসেবে দেখছে। ফলে এ নিয়ে ক্ষোভ এখন সর্বত্র। সোশ্যাল মিডিয়া থেকে রাজপথ- সর্বত্র ক্ষোভের আগুন ছড়িয়ে পড়ছে।

তবে এ ঘটনায় সম্ভবত সবচেয়ে বেশি রক্তক্ষরণ হয়েছে অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজার বুকে। তাই তো রবিবার এক সংবাদ সম্মেলনে তার চোখে পানি দেখা গেছে। আর সংবাদ সম্মেলন শেষে অঝোরে কাঁদলেন টাইগার দলপতি।

সানির বোলিং অ্যাকশন অবৈধ মানতে পারলেও তাসকিনেরটা মানতে পারছে না কেউই। তাসকিনকে অবৈধ ঘোষণা করে আইসিসি তার নিজের আইনই ভঙ্গ করেছে বলে অভিযোগ ক্রিকেটবোদ্ধাদের।

বিশ্বকাপের জন্য তাসকিন-সানিদের নিয়ে আলাদা পরিকল্পনা সাজিয়েছিলেন মাশরাফি। কিন্তু তাদের সামপ্রতিক নিষেধাজ্ঞার জন্য নতুন করে ভাবতে হবে মাশরাফিকে। আর এতদিন দলের সঙ্গে থাকা প্রিয় দুই সতীর্থকে হারানোয় সংবাদ সম্মেলনে চোখের পানি ধরে রাখতে পারেননি অধিনায়ক মাশরাফি।

শনিবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আইসিসি জানায়, বাংলাদেশের স্পিনার আরাফাত সানি ও পেসার তাসকিন আহমেদের বোলিং অ্যাকশনে ত্রুটি থাকায় তাদের সাময়িকভাবে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে বোলিং করা থেকে বিরত থাকতে হবে। এর একদিন পরই আজ চেন্নাই স্টেডিয়ামে মুখ খোলেন মাশরাফি।

তিনি জানান, তাসকিন এবং সানির জন্য পুরো দলের ছন্দ চলে গেছে। পুরো দল এখন আপসেট। আমি জানতাম আইসিসি তরুণ ক্রিকেটারদের উৎসাহ দেয়। আমি বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডকে (বিসিবি) এ ব্যাপারে দ্রুতই পদক্ষেপ নেয়ার আহবান জানাচ্ছি।

তাসকিনের রিপোর্টের সঙ্গে আইসিসির সিদ্ধান্তের কোনো মিল খুঁজে পাওয়া যায়নি। যে ম্যাচে (নেদারল্যান্ডস) তাসকিনের বোলিং অ্যাকশন নিয়ে আম্পায়াররা উদ্বেগ প্রকাশ করেন সেই ম্যাচে তাসকিনের কোনো নির্দিষ্ট ডেলিভারির কথা তারা সন্দেহজনক হিসেবে জানাননি। কিন্তু তাকে অবৈধ বলা হয়েছে একটি নির্দিষ্ট ডেলিভারির জন্য।

রিপোর্টে বলা আছে, তাসকিনের শুধু বাউন্সারে সমস্যা ছিল। কিন্তু আশ্চর্যজনক হলো, যে ম্যাচে তাসকিনের বোলিং নিয়ে সন্দেহ করা হয়েছিল সেই ম্যাচে তিনি কোনো বাউন্সারই দেননি! চেন্নাইতে পরীক্ষাগারে মাত্র ৩ মিনিটে ৯টি বাউন্স দিতে বলা হয় তাকে। যেখানে তিনটিতে সমস্যা ধরা পড়ে বলের গতি কম হয়ে যাওয়ার কারণে। তাসকিনের দেওয়া স্পট ডেলিভারি ও ইয়র্কারেও কোনো সমস্যা পাননি বায়োম্যাকানিক্যাল পরীক্ষকরা।

এ প্রসঙ্গে মাশরাফি জানান, নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে তাসকিনের বলে সন্দেহ করার মতো কোনো বিষয় ছিল না। সে নিজের স্বাভাবিক বলটিই করেছে। আমার বিশ্বাস সে ম্যাচে তাসকিন কোনোভাবেই অবৈধ ডেলিভারি দেয়নি। এটাও বিশ্বাস করি তার বোলিংয়ে কোনো ত্রুটি নেই।

সংবাদ সম্মেলনে মাশরাফি আরো বলেন, আমরা শুনেছি পরীক্ষার মাধ্যমে তাসকিনের অ্যাকশনে এমন অবৈধ কিছু পাওয়া যায়নি। তারপরও কেন তাকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে? এর উত্তর আমার জানা নেই। তবে ব্যক্তিগতভাবে আমি মনে করি, তাসকিনের প্রতি সুবিচার করা হয়নি।

এদিকে, আইসিসির এই সিদ্ধান্তটাকে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডও (বিসিবি) ভাল চোখে দেখেছে না। বোর্ডের একটি সূত্র মতে, তাসকিন ইস্যুতে যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ না করায় ক্রিকেটের নিয়ন্ত্রক সংস্থাটির সিদ্ধান্তে বিপক্ষে রিভিউ চাওয়ার পরিকল্পনা করছে বোর্ড। এজন্য আইনজীবীদের শরণাপন্ন হওয়ার কথা ভাবছে বিসিবি।