‘তিন মোড়ল দলের কোনো খেলোয়াড় প্রশ্নবিদ্ধ হয়নি’
ডেস্ক রিপোর্ট :: বোলিং অ্যাকশনে ত্রুটির কারণে বাংলাদেশের ২ জন বোলার তাসকিন আহমেদ এবং আরাফাত সানির ওপর আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে সাময়িক নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে আইসিসি। আইসিসি বলছে, চেন্নাইতে পরীক্ষার পর দেখা গেছে, ২ জনের কারোরই বোলিং অ্যাকশন বৈধ নয়। এর ফলে আইসিসি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে খেলার আর সুযোগ নেই এই ২ জন বাংলাদেশি বোলারের।
টুর্নামেন্টের মাঝপথে দলের ২ জন খেলোয়াড়ের ওপর নিষেধাজ্ঞা বাংলাদেশ দলের ওপর কী প্রভাব ফেলবে?
আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ভাষ্যকার শামীম আশরাফ চৌধুরী মনে করেন, তাসকিন, সানি না থাকায় এর একটা প্রভাবতো বাংলাদেশ দলের ওপর পড়বেই।
শামী আশরাফ চৌধুরী বিবিসিকে বলেন, তাসকিন বিশেষ করে যেভাবে বোলিং অ্যাটাক শুরু করছিল-খেলার শুরুতে যেভাবে বল করতে হয়, প্রথমেই ব্যাটসম্যানদের যে ধরনের চাপ প্রয়োগ করতে হয় এবং প্রথম পাওয়ার প্লে ওভারগুলোতে যেভাবে নিয়ন্ত্রিত বোলিং করতে হয় সেদিক থেকে খুব ভালো বোলিং করছিল। এক ধরনের রিদমের মধ্যে ছিল তাসকিন। সেদিক থেকে বাংলাদেশ দলকে বিপাকেই ফেলবে।
অন্যদিকে আরাফাত সানিও কিন্তু যে যে উইকেট স্পিন ফ্রেন্ডলি সেখানে বাড়তি বাঁক আদায় করতে সক্ষম। ২ জন দক্ষ খেলোয়াড়কে বাংলাদেশ হারাতে যাচ্ছে অবশ্যই এটা প্রভাব ফেলবে বলে তিনি বলেন।
এখন দলকে পুনর্গঠিত করার জন্য বাংলাদেশ কী করতে পারে?
শামীম আশরাফ চৌধুরী বলেন, বোলারদের নিয়ে প্রশ্ন এটাইতো প্রথম নয়। এর আগেও বাংলাদেশের ৩ জন বোলার সোহাগ গাজী, আল আমিন হোসেন, আব্দুর রাজ্জাক তাদের বোলিং অ্যাকশান নিয়েও আইসিসি প্রশ্ন তুলেছিল। এরপর তারা আবার পরীক্ষা দিয়ে আন্তর্জাতিক খেলায় ফিরে এসেছে। তাসকিন, সানিরও এই সুযোগ রয়েছে। তারা ডমেস্টিক খেলতে পারবে কিন্তু আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা দূর করতে এখন বোর্ডের উচিত হবে যতো তাড়াতাড়ি সম্ভব তাদের ত্রুটিগুলো শুধরে আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্টে ফিরিয়ে আনার জন্য দ্রুত কাজ করা।
এর আগে ৩ জন বোলারের বোলিং অ্যাকশন নিয়ে প্রশ্ন, এখন আবার ২ জনের ওপর নিষেধাজ্ঞা-বাংলাদেশের বোলারদের বোলিং অ্যাকশন নিয়ে বারবার প্রশ্ন উঠছে কেন?
এ প্রসঙ্গে শামীম আশরাফ চৌধুরী বলেন, অনেকে মনে করছেন বাংলাদেশকে টার্গেট করা হচ্ছে কিনা। কিন্তু আমি সেটা সম্পূর্ণ বিশ্বাস করছি না। আমার মনে হচ্ছে অন্য কিছু। সুনীল নারায়ণের মতো বোলার, সাঈদ আজমল, মুত্তিয়া মুরালিধরণ, মোঃ হাফিজ এদের বোলিং অ্যাকশন নিয়েও কিন্তু প্রশ্ন তোলা হয়েছিল।
লক্ষ্য করবেন তিন মোড়ল যারা আইসিসি নিয়ন্ত্রণ করছে- অর্থাৎ ভারত, অস্ট্রেলিয়া ও ইংল্যান্ড- তাদের কোনো দল থেকে কোনো খেলোয়াড়ের ওপর কিন্তু কোনো কিছুই প্রশ্নবিদ্ধ হয়নি। সুতরাং শুধু যে বাংলাদেশের ওপর প্রশ্ন উঠছে তা নয়। হয়তো এর থেকেও বড় কিছু। বাংলাদেশও এর আওতায় পড়ে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, তবে এখন বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের উচিত ডমেস্টিকে খেলার সময় কোনো খেলোয়াড়ের খেলা নিয়ে একটুও যদি সন্দেহ আসে তাহলে সেটাই রেকটিফাই করে দেখতে হবে এ ধরনের পরিস্থিতি এড়াতে। আমরা আইসিসিকে আর সুযোগ দিতে চাই না। এ ধরনের পরিস্থিতি আমাদের অন্য কোনো বোলার ফেইস করুক এটা চাই না।
তাসকিন আহমেদ ও আরাফাত সানির পরিবর্তে বাংলাদেশ দলে জায়গা পাওয়া শুভাগত হোম ও সাকলাইন সজীবও খেলায় ভূমিকা রাখতে পারবে বলে মনে করেন শামীম আশরাফ চৌধুরী।
কিন্তু এ ২ জনের যে আন্তর্জাতিক ম্যাচে খেলার অভিজ্ঞতা কম সেটাও উল্লেখ করে শামীম আশরাফ চৌধুরী বলেন, বিপিএলে ভালো খেলেছিল শুভাগত হোম। আর সাকলাইন সজীব লম্বা বোলার, হাইট থেকে বল করতে পারে। ভারতের মাঠে আলাদা বাউন্স আছে সেটা কাজে লাগাতে পারে যেটা আরাফাত সানি হয়তো করতে পারতোনা।
শামীম আশরাফ চৌধুরী বলেন, কেউ জানে না- এটা হয়তো ‘শাপে বর’ও হতে পারে।