হারিয়ে যাচ্ছে নরসুন্দরের ক্ষুরের ব্যবসা
রেজওয়ান করিম সাব্বির, জৈন্তাপুর :: সময়ের বির্বতনে আমাদের সমাজ হতে হারিয়ে গেলে চিরচেনা নরসুন্দরের ক্ষুরের ব্যবসা। ক্ষুরের পরিবর্তন হয়ে আসল আধুনিক হেয়ার কাটার। সর্বকালে মানুষ নিজেকে যত বেশি আর্কষনীয় করে তুলতে দেশীয় ভাবে ক্ষুর কেচি ব্যবহারের মাধ্যমে নিজেকে আর্কষনীয় করে তুলত। এজন্য নরসুন্দর বা নাপিতের ভূমিকা ছিল অতুলনীয়। সন্তান জন্ম গ্রহন হতে শুরু করে অবাল বনিতা সকলেই নরসুন্দরের দ¦ারস্থ হতেন। কোন সন্তান জন্ম গ্রহন করলে সন্তানের প্রথম নয়াই বা চুল কাটা হতে একজন নরপতি, নাপিত বা নর সুন্দর দিয়ে। তাই আগে হতে সন্তানের নিকত্মীয়রা দিন ক্ষন টিক করে মহা ধুমধামের সহিত নয়াই করতেন সন্তানদের। এনিয়ে পারিবারিক ভাবে একটি অনুষ্ঠান করা হত। অপরদিকে সনাতন (হিন্দু) ধর্মালম্বীরা সন্তান ভুমিষ্ট কিংবা কারো মৃত্যুতে একই ভাবে অনুষ্ঠান করতেন। সময়ের বির্বতনে আজ এই অনুষ্ঠানটি সহ নরপতির খুরের ব্যবসাটি বিলুপ্ত। গত ৪ মার্চ শুক্রবার দুপরে লালাখাল চা-বাগানে তথ্য চিত্র সংগ্রহ করার কাজে গেলে বিলুপ্ত হওয়া খুরের কাজ চোঁখের সামনে পড়ে।
স্থানীয় লালাখাল চা-বাগানের এক ব্যাক্তি মৃত্যু হয়। আর সেই জন্য মৃত ব্যক্তির সাদ্যনুষ্ঠানের জন্য পরিবারের সকল সদস্যদের চুল, দাড়ী, নোখ কেটে পরিচ্ছন্ন হতে হবে। মৃত ব্যক্তির আত্মার শান্তি লাভের জন্য পরিবারের পক্ষে পূজা অর্চনা করা হবে। সেই জন্য এই আয়োজন। লালাখাল বাগানের সারী নদী সংলগ্ন কুলি বস্তির স্নানের ঘাটের উপরে একটি তেতুল গাছের নিচে বসে একজন নরপতি ৫০উর্দ্ব ব্যক্তির গোফ কাটছেন। অপরদিকে আরেকজন নরপতি একটি শিশুর চুল কাটছেন, সেই সাথে প্রায় ৫০উর্দ্ব আরেক ব্যক্তি এবং একজন শিশু অপেক্ষায় রয়েছেন পরিচ্ছনের কাজ সারার জন্য। তাদের সাথে প্রতিবেদকের আলাপ আলোচনা করে জানা যায় আদের এক নিকত্মীয় মারা গেছেন। তাই স্বল্প পরিসরে তারা এই সাদ্যনুষ্ঠানের আয়োজন করেছেন। মৃত ব্যক্তির আত্মার শান্তি লাভের জন্য তারা পরিচ্ছন্ন হচ্ছেন।
আসলে নরপতির সাথে আলাপ করে নাম প্রকাশ না করার শর্তে এই নরপতি বলেন- একসময় আমাদের এই পেশাটি ছিল সম্মানের। এখন আর আমাদের খুরের পেশা চলে গেছে আভিযাত্যের পর্দার অন্তরালে। তাই এখন খুরের প্রচলন নেই। নিজেরা একান্ত বাধ্য হয়ে ২/১টা ছোট খাট অনুষ্ঠানে আসি। এখন আমাদের আর দাম নেই, আর আধুনিক নরসুন্দর সেন্টারের কাছে আমাদের ঐতিয্যের এই পেশা বিলুপ্ত হয়েছে বলে তিনি জানান।