বঙ্গবন্ধুর কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরের দাবি জোরদার
অহী আলম রেজা :: পুরো পাকিস্তানের রাজনৈতিকনেতারা বঙ্গবন্ধু ও বাঙালিদের দাবির প্রতি একাত্মতা প্রকাশ করতে শুরু করেছেন। ন্যাপের সভাপতি খান আবদুল ওয়ালী খান এ দিন সকালে বিমানযোগে করাচি থেকে ঢাকায় পৌঁছে বিমানবন্দরে সাংবাদিকদের জানান, সংকট উত্তরণের লক্ষ্যে আওয়ামী লীগ প্রধান শেখ মুজিবুর রহমানের সঙ্গে আলোচনার জন্য খোলা মন নিয়ে ঢাকায় এসেছেন। এ সময় তিনি সামরিক শাসন প্রত্যাহার ও নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর বিষয়ে শেখ মুজিবুর রহমানের দাবির সঙ্গে একমত পোষণ করেন। জাতীয় পরিষদের সংখ্যালঘিষ্ঠ পাঁচটি দলের পার্লামেন্টারি পার্টির নেতারা লাহোরে এক সভায় অবিলম্বে সামরিক শাসন প্রত্যাহার ও বঙ্গবন্ধুর কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরের দাবি জানান।
একাত্তরের এই দিনে জাতীয় পরিষদের সাবেক সদস্য আবদুল হাকিম এবং বরেণ্য চিত্রশিল্পী জয়নুল আবেদিন পাকিস্তান সরকারের দেয়া খেতাব ও পদক বর্জন করেন। এদিন সকালে রমনা পার্কে ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ এক জনসভার ডাক দেয়। অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের উদ্যোগে শীতলক্ষ্যা নদীতে একটি নৌ মিছিল বের হয়। এদিকে চট্টগ্রামে অনুষ্ঠিত এক সমাবেশ থেকে মুক্তি অর্জন না হওয়া পর্যন্ত সকল ধরনের বিলাসদ্রব্য বর্জন করার ঘোষণা দেয়া হয়। বেগম উমরতুল ফজলের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এই সমাবেশে কালো ব্যাজ ধারণের জন্য নারী-পুরুষ সবার প্রতি আহ্বান জানানো হয়।
একাত্তরের এই দিনে বিশেষ বিমানযোগে ঢাকা ত্যাগ করেন ঢাকায় নিযুক্ত জাতিসংঘ ও পশ্চিম জার্মানি দূতাবাসের কর্মচারী, তাদের পরিবার। ইতালি, ফ্রান্স, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও কানাডার ২৬৫ নাগরিকও ঢাকা ছেড়ে যান। খবরটি খুব দ্রুত গোটা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে।
জাতিসংঘ প্রতিনিধিসহ বিদেশি কূটনীতিকরা নিরাপত্তার অভাবে ঢাকা ত্যাগ করতে পারেন উত্তাল মার্চের শুরু থেকে এমন সংবাদ ছড়িয়ে পড়লে বিদেশি দূতাবাস ও মিশন অফিসগুলোতে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়। কিন্তু সে নিরাপত্তায়ও বিদেশিদের আতঙ্কমুক্ত করতে পারেনি পাকিস্তান সরকার। বরং বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিয়ে বিভিন্ন দেশে পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীর সমালোচনা চলতে থাকে।