দুই শিশু হত্যা : অন্যদের যোগসাজশ খুঁজছে পুলিশ

Alvi-nusra20160307054717ডেস্ক রিপোর্ট ::  রামপুরার বনশ্রীতে নুসরাত আমান অরনী ও আলভী আমান হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় তাদের মা মাহফুজা মালেক জেসমিন ছাড়া অন্যদের যোগসাজশ খুঁজছেন তদন্ত কর্মকর্তারা। ইতোমধ্যে কয়েকজনকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ করেছে রামপুরা থানা পুলিশ। জিজ্ঞাসাবাদের তালিকায় রয়েছেন মাহফুজা ও তাদের বাবা আমানের ভাই-বোন ও আত্মীয়স্বজন।

এদিকে, এই হত্যাকাণ্ডের তদন্তভার মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। সোমবার সকালে আনুষ্ঠানিকভাবে এই মামলার গুরুত্বপূর্ণ নথিপত্রসহ সবকিছু হস্তান্তর করে রামপুরা থানা পুলিশ।

এর আগে গত সোমবার বনশ্রীতে নিজেদের বাসায় দুই শিশু অরণী ও আলভীকে বিছানায় মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়। তাদের মৃত্যুর পর পরিবার দাবি করে, চাইনিজ রেস্তোরাঁ থেকে আনা খাবার খেয়ে তারা মারা গেছে। তবে পরদিন ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে ময়নাতদন্তে মেলে হত্যাকাণ্ডের আলামত।

ঘটনার দুই দিন পর বুধবার জামালপুর থেকে শিশু দুটির বাবা, মা ও খালাকেও জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ঢাকায় নিয়ে আসে র্যা ব। জিজ্ঞাসাবাদে তার মা মাহফুজা হত্যাকাণ্ডের বিষয়টি স্বীকার করেন। তবে তার সঙ্গে আরো কেউ জড়িত রয়েছে কি না? কেউ তাকে প্রভাবিত করে হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকারে বাধ্য করছে কি না বিষয়টি তদন্ত করছে পুলিশ।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) অতিরিক্ত কমিশনার মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘মাহফুজার সংসারে আর্থিক টানাপোড়া ছিল। এখান থেকে হতাশা কাজ করতে পারে। তিনি ছাড়াও অন্য কারো যোগসাজশ আছে কি না বা অন্য কারো দায় আড়াল করতে নিজে দায় স্বীকার করেছেন কি না তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’

এদিকে, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মাহফুজাকে হত্যাকারী বললেও বিষয়টি মানতে নারাজ তার পরিবার। মাহফুজার ভাই জাকির হোসেন সরকার জাগো নিউজকে বলেন, পুলিশ দাবি করলেও আমার বোন (মাহফুজা) নিজ মুখে সবার সামনে বলেনি যে সে তার সন্তানদের হত্যা করেছে।

এ ঘটনায় মাহফুজার বিরুদ্ধে রামপুরা থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন তার স্বামী আমান উল্লাহ। মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, ‘মাহফুজা মালেক জেসমিন মানসিক অসুস্থতা থেকেই দুই সন্তানকে হত্যা করেছেন। ছেলে ও মেয়ের পরীক্ষার ফলাফল খারাপ হওয়ায় মানসিকভাবে টেনশনে ছিলেন তিনি। টেনশনে তার মাথায় যন্ত্রণা হয়। একারণেই তিনি দুই সন্তানকে হত্যা করে।’

দুই শিশুকে ‘হত্যার’ পেছনে মাহফুজার মানসিক সমস্যার বিষয়টি আমলে নিয়েছে পুলিশ। তবে তাদের এই ধারণাকেও ভুল দাবি করছেন মাহফুজার ছোট বোন আফরোজা মালেক মিলা। তিনি জাগো নিউজকে বলেন, তার বিরুদ্ধে সব অভিযোগ কাল্পনিক। দুশ্চিন্তার কারণে অন্তত সে তার নিজের বাচ্চাদের মেরে ফেলবে না। তাছাড়া অরণী ভালো ছাত্রী ছিল বলেও জানান তিনি।

এদিকে, আদালতের অনুমতি নিয়ে মাহফুজাকে মনরোগ বিশেষজ্ঞ দেখানো হতে পারে বলে জানিয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর একটি সূত্র।