আগামী ২৬শে মার্চ নিউইয়র্কে স্বাধীনতা প্যারেড
নিউইয়র্ক থেকে এনা: ‘একটি বাংলাদেশ তুমি জাগ্রত জনতার, সারা বিশ্বের বিস্ময় তুমি আমার অহংকার …।’ এই চেতনাকে সামনে রেখে মুক্তধারা ফাউন্ডেশন উত্তর আমেরিকার সকল বাংলা সংবাদ মাধ্যম এবং সাংস্কৃতিক-সামাজিক-রাজনৈতিক-আঞ্চলিক সংগঠনগুলোর সহযোগিতায় আগামি ২০২১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবসের মহা গৌরবের ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে ছয়বছরব্যাপী এক কর্মসূচি ঘোষণা করেছে। ২৬মার্চ ২০১৬ নিউইয়র্কে বাংলাদেশের পতাকা হাতে প্যারেড কর্মসূচির মাধ্যমে শুরু হতে চলেছে এই কর্মসূচি। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে যোগ দেবেন বাংলাদেশের আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। বিশেষ অতিথি হিসেবে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে ওয়াশিংটনে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ জিয়াউদ্দীন, জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি মাসুদ বিন মোমেন এবং নিউইয়র্কস্থ বাংলাদেশের কনসাল জেনারেল শামীম আহসানকে। গত ১মার্চ জাতিসংঘের সামনে অবস্থিত ডাচবাংলা আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের ভাস্কর্য সরিয়ে ফিলাডেলফিয়া নেয়ার সময় অনানুষ্ঠানিক এক ঘোষণায় মুক্তধারা ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা বিশ্বজিত সাহা উপরোক্ত তথ্য জানান।
গত ১ ফেব্রুয়ারি থেকে টানা ২৯দিন পুরো ফেব্রুয়ারি মাস জাতিসংঘ সদর দপ্তরের সামনে ডাচবাংলা আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের ভাস্কর্যটি স্থাপনের মাধ্যমে আমেরিকার মূলধারায় বাঙালির গৌরবোজ্বল ভাষা আন্দোলনের ইতিহাস নবরূপে জাগ্রত হয়। গত ২০ ফেব্রুয়ারি জাতিসংঘের সামনে শহীদ মিনারে আমেরিকার মূলধারার প্রতিনিধিবৃন্দের ভাষা শহীদদের শ্রদ্ধা জ্ঞাপন ও গভর্ণর এন্ড্রু ক্যুমো কর্তৃক পরপর দ্বিতীয়বারের মত ২১ ফেব্রুয়ারিকে নিউইয়র্ক স্টেট কর্তৃক আন্তর্জাতিক স্বীকৃতির রেজ্যুলেশন পাস এবং ২২ ফেব্রুয়ারি থেকে মাসব্যাপী আমেরিকার পোস্টাল ডিপাটমেন্ট কর্তৃক একুশের শহীদদের শ্রদ্ধা জানিয়ে স্মারক সীলমোহর প্রকাশ এর মাধ্যমে মুক্তধারা ফাউন্ডেশন ২০১৬ সালের আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসকে মহিমান্বিত করে। উল্লেখ্য, ভাস্কর্যটি এরপরে থাকবে একমাস ফিলাডেলফিয়াতে। এরপর আমেরিকার বিভিন্ন স্টেটে প্রদর্শন শেষে কানাডায় প্রদর্শনের ব্যাপারেও আলোচনা চলছে বলে আয়োজকরা জানিয়েছেন।
মাসব্যাপী একুশের কর্মসূচি সমাপনের শেষদিন সংগঠনটি আরো জানিয়েছে, তারা ইতিমধ্যে জ্যাকসন হাইটসের ডাইভারসিটি প্লাজায় ২৬মার্চ শনিবার সকাল ১০টা থেকে সমাবেশ করার এবং সেখান থেকে ৭৩ স্ট্রীট হয়ে পিএস ৬৯ মিলনায়তন পর্যন্ত প্রধান রাস্তা দিয়ে প্যারেড করার অনুমতি পেয়েছে। ১০টা থেকে সাড়ে৫টা পর্যন্ত থাকবে স্বাধীনতার গান, কবিতা, আবৃত্তি ও চিত্রাংকন প্রতিযোগিতা। সাড়ে ৫টায় শুরু হবে প্যারেড। পিএস ৬৯ মিলনায়তনে থাকবে স্বাধীনতার চলচ্চিত্র প্রদর্শনী। মুক্তিযুদ্ধেও ছবি ও গ্রন্থ প্রদর্শনী। এছাড়া থাকবে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে বর্হিবিশ্বে বীরত্বপূর্ণ অবদানের জন্য সম্মাননা প্রদান। এই অনুষ্ঠানটিকে ব্যতিক্রমী ও অর্থবহ করার জন্য ইতিমধ্যে ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে যেসব আমেরিকান অবদান রেখেছেন তাদের আমন্ত্রণ জানানো শুরু করা হয়েছে। নিউইয়র্ক স্টেট এবং সিটির আমেরিকার মূলধারার রাজনীতিবিদ ছাড়াও উত্তর আমেরিকার বিভিন্ন স্থানে বসবাসরত মুক্তিযোদ্ধাদের আমন্ত্রণ জানানোর কাজ চলছে। আয়োজকরা আরো জানান, যারাই যোগ দেবেন তাদের সকলের হাতে তুলে দেয়া হবে বাংলাদেশের পতাকা। আয়োজকরা জানিয়েছেন, স্বাধীনতা দিবসের ৫০ বছরের রজত জয়ন্তী অনুষ্ঠানে যাতে সকলে সমবেত হতে পারেন তার জন্য সকল সংগঠনের নাম ‘গর্বিত অংশীদার’ হিসেবে প্রকাশ করা হবে বলে সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে। আগামি ২৬ মার্চ অনুষ্ঠান শেষে তারা আগামি ৫ বছরের কর্মসূচিও এক এক করে তারা ঘোষণা করবেন বলে জানিয়েছেন।