পরকীয়ার জেরে জাপানি এমপির পদত্যাগ

1172_35ডেস্ক রিপোর্টঃ প্রথম জাপানি সংসদ সদস্য হিসেবে ‘পিতৃত্বকালীন ছুটি’র আবেদন করে চাঞ্চল্য তৈরি করেছিলেন লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) কেনসুকে মিয়াজাকি। তবে তার সন্তানের জন্ম হওয়ার আগেই তিনি জড়িয়ে পড়েন পরকীয়া সম্পর্কে। এই খবর মিডিয়াতে ছড়িয়ে পড়লে গতকাল সংসদ সদস্যের পদ থেকে তিনি সরে দাঁড়িয়েছেন। এ খবর জানিয়েছে বিবিসি ও বৃটিশ গণমাধ্যম গার্ডিয়ান। খবরে বলা হয়, গত মাসেই পিতৃত্বকালীন ছুটির আবেদন করেছিলেন কেনসুকে মিয়াজাকি। চলতি মাসের প্রথম সপ্তাহে তার সন্তানের জন্ম হওয়ার কথা ছিল। এই সময়ে স্ত্রী ও সন্তানকে সময় দেয়ার অধিকার দাবি করে তিনি আবেদন করেন ছুটির জন্য। জাপানে সন্তানদের দেখভালের জন্য পুরুষদের ছুটি নেয়ার রেওয়াজ তেমন নেই। আর সে কারণেই তিনি তার সহকর্মীদের সমালোচনার মুখেও পড়েন। তবে তার নতুন এই ধারণাকে সমর্থন করেন জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো অ্যাবে। ৫ই ফেব্রুয়ারি মিয়াজাকির স্ত্রী মেগুমি কানেকো, যিনি নিজেও লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির একজন রাজনীতিবিদ, সন্তানের জন্ম দেন। আর এর পরপরই জাপানের ট্যাবলয়েড শুকান বুনশান মিয়াজাকির পরকীয় প্রেমের কাহিনী ফাঁস করে দেয়। ট্যাবলয়েডটিতে ছাপানো এক ছবিতে মিয়াজাকিকে দেখা যায় অন্য আরেকজন নারীর সঙ্গে। এই নারী একজন বিকিনি মডেল ও প্রফেশনাল কিমানো পোশাকের ডিজাইনার। ট্যাবলয়েডটি বলছে, মিয়াজাকির সন্তান জন্মগ্রহণের মাত্র কয়েকদিন আগে তোলা হয়েছে এই ছবি। একদিকে পিতৃত্বকালীন ছুটির আবেদন, অন্যদিকে পরকীয়া সম্পর্ক- দুই মিলিয়ে মিয়াজাকি তীব্র সমালোচনায় মুখে পড়েন। আর সে কারণেই গতকাল এক সংবাদ সম্মেলনে নিজের পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছেন তিনি। তার পরকীয়ার খবর মিডিয়াতে হৈ চৈ ফেলে দেয়ার ঘটনার জন্য ক্ষমাও প্রার্থনা করেছেন। সংবাদ সম্মেলনে মিয়াজাকি পরকীয়ার খবর স্বীকার করে নেন। তিনি জানান, জানুয়ারিতে জাপানের সংসদ অধিবেশন শুরুর পূর্বে মিয়াজাকি ও অন্য সংসদ সদস্যদের পোশাকের দায়িত্বে ছিলেন ওই মডেল। তাদের মধ্যে শারীরিক সম্পর্কের কথাও স্বীকার করেন মিয়াজাকি। তবে বর্তমানে তাদের মধ্যে আর যোগাযোগ নেই বলেও জানান তিনি। মিয়াজাকি এই পরকীয়ার সম্পর্ককে তার স্ত্রী ও সন্তানের প্রতি চরম অবিচার বলে দুঃখপ্রকাশ করেন। মিয়াজাকি বলেন, ‘আমি আমার স্ত্রীর কাছে সবকিছু খুলে বলেছি। তার প্রতি এই নিষ্ঠুর আচরণের জন্য আমি গভীরভাবে অনুতপ্ত।’ মিয়াজাকি আরও বলেন, ‘পিতৃত্বকালীন ছুটির জন্য আমি আবেদন করেছি যা আমার খামখেয়ালি আচরণের সাথে অসঙ্গতিপূর্ণ। আর তাই আমি আমার পদ থেকে সরে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’ উল্লেখ্য, জাপানে পিতৃত্বকালীন ছুটি নেয়ার নজির খুব কম। বেসরকারি কোম্পানিতে কর্মরত পুরুষের মাত্র দুই দশমিক তিন শতাংশ এই ছুটি নিয়ে থাকেন। তবে জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো অ্যাবে ২০২০ সাল নাগাদ এই পরিমাণকে ১৩ শতাংশে উন্নীত করতে চান।