সিলেটে টিউশনি দেয়ার নামে টিউটর মিডিয়ার প্রতারণা!
ডেস্ক রিপোর্টঃ সিলেটে সাকসেস টিউটর মিডিয়া নামক একটি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে টিউশনি প্রদানের নামে প্রতারণার অভিযোগ ওঠেছে। টিউশনি প্রত্যাশী শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে টাকা নিয়ে টিউশনি না দেয়ার অভিযোগ ওঠেছে এ প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে। এতে ক্ষোভ দেখা দিলে বন্ধ করে দেওয়া হয় টিউটর মিডিয়ার কার্যালয়।
জানা যায়, নগরীর জিন্দাবাজারের ফরিদ প্লাজায় অফিস করে কার্যক্রম শুরু করে এই টিউটর মিডিয়া। টিউশনি প্রত্যাশী শিক্ষার্থীদের টিউশনি পেতে সহায়তা করে তারা। ফেসবুকের পাবলিক ‘সাসকেস টিউটর মিডিয়া, সিলেট’ নামে গ্রুপ করে তারা বিভিন্ন টিউশনির বিজ্ঞাপন দিতে থাকে।
এই গ্রুপে দিয়ে দেখা যায়, গ্রুপে সদস্য রয়েছেন ৮৭৫ জন। এতে বিভিন্ন টিউশনির বিজ্ঞাপন পোস্ট করা হয়েছে।
ভূক্তভোগী একাধিক টিউশনি প্রত্যাশী জানান, সাকসেস টিউটর মিডিয়ার মাধ্যমে টিউশনি পেতে তাদের সদস্য হতে হয়। সদস্য হওয়ার জন্য প্রথমে ৩শ’ টাকা দিয়ে নিবন্ধন করতে হয়। এরপর ফেসবুক পেইজে দেওয়া টিউশনির বিজ্ঞপ্তি দেখে আগ্রহী হলে নিবন্ধিত সদস্যরা টিউটর মিডিয়ার সাথে যোগাযোগ করতে পারেন। এসময় দু’পক্ষের আলোচনা চূড়ান্ত হলে প্রথমেই টিউশনি প্রত্যাশীকে প্রাপ্ত টিউশনির সম্মানীর ৭০শতাংশ টিউটর মিডিয়াকে অগ্রিম দিয়ে দিতে হয়। সম্মানীর ৭০ শতাংশ টাকা প্রদানের পর টিউটর মিডিয়া থেকে জানানো হয়, টিউশনির ব্যাপারে পরবর্তীতে বিস্তারিত তথ্য জানানো হবে।
কয়েকজন টিউশনি প্রত্যাশী অভিযোগ করেন, টাকা দিয়ে রেজিস্ট্রেশন করে এবং বিজ্ঞাপন দেখে কাঙ্ক্ষিত টিউশনির সম্মানীর ৭০ শতাংশ অগ্রিম প্রদান করেও তাদেরকে কোনো টিউশনি দেওয়া হয়নি। এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে টিউটর মিডিয়ার পক্ষ থেকে সময়ক্ষেপণ করা হয়। অনেক সময় টিউশনি বাতিল হয়ে গেছে বলে জানানো হয়। তবে প্রদত্ত টাকা ফেরত দেওয়া হয় না।
গত দুই মাসে এরকম প্রায় ৫০ জন প্রতারণার শিকার হয়েছেন বলে জানা গেছে। এদের বেশিরভাগই শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী।
হয়রানির শিকার হওয়া শাবি’র বিবিএ’র ছাত্র সৌরভ দেবনাথ সাগর বলেন, ডিসেম্বরে টিউটর মিডিয়ার ফেসবুক গ্রুপে একটি টিউশনের বিজ্ঞাপন দেখে তাদের সাথে যোগাযোগ করি। এরপর প্রথমেই ৩শ’ টাকা দিয়ে রেজিস্ট্রেশন করি। টিউশনিতে প্রতি মাসে সম্মানী বাবদ ৩৫শ’ টাকা দেওয়া হবে জানিয়ে তারা আমার কাছে এই সম্মানীর ৭০ শতাংশ ২ হাজার টাকা দাবি করে। তখন তারা জানিয়েছিলো ৫ জানুয়ারি থেকে টিউশনিতে যোগদান করতে হবে। আমি ১৮ জানুয়ারি পর্যন্ত অপেক্ষা করি। কিন্তু তারা কেউ আর যোগাযোগ করেনি। পরে আমি ১৮ জানুয়ারি যোগাযোগ করলে তারা ৩০ জানুয়ারি আসতে বলে। নির্ধারিত তারিখে তাদের অফিসে গেলে তারা পরে আসতে বলে। এরপর আমি ফোন কল করলেও তারা রিসিভ করে না। অফিসে গিয়েও পাওয়া যায় না।
একই ধরণের অভিযোগ করেন শাবি’র ইংরেজি বিভাগের ছাত্র মেহেদি হাসান রেজা, বিবিএ’র জনি দেব, সাইফুল ইসলাম খানসহ আরো কয়েকজন প্রমুখ।
প্রতারণার শিকার লিডিং ইউনিভার্সিটির ছাত্র তানভীর হাসান বলেন, প্রায় ৫০ জন শিক্ষার্থী এরকম প্রতারণার শিকার হয়েছেন।
এ ব্যাপারে সাসকেস টিউটর মিডিয়ার পরিচালক ও শাবি’র নৃবিজ্ঞানের শিক্ষার্থী মামুনুর রশীদ বলেন, আমরা অন্য মিডিয়ার মাধ্যমে এবছর কিছু টিউশনি এনেছিলাম। পরবর্তীতে টিউশনিগুলো বাতিল হয়ে যায়। একারণে কিছুটা সমস্যা হয়েছে।
তবে কারো সাথে প্রতারণা করা হয় নি উল্লেখ করে তিনি বলেন, সবার টাকা আমার ফেরত প্রদান করবো।
কার্যালয় বন্ধ থাকা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে আমরা দু’দিন কার্যালয় বন্ধ রেখেছি। শনিবার থেকে তা পুনরায় চালু করা হবে।