মহানায়কের পাশে একজনকে খলনায়ক বানিয়ে ইতিহাস বিকৃতির চেষ্টা চলছে

জাতিসংঘের সামনে স্থাপিত ভাষার ভাস্কর্য পরিদর্শনে সংসদ সদস্যবৃন্দ। ছবি- এনা।
জাতিসংঘের সামনে স্থাপিত ভাষার ভাস্কর্য পরিদর্শনে সংসদ সদস্যবৃন্দ। ছবি- এনা।

নিউইয়র্ক থেকে এনা : মুক্তধারা ফাউন্ডেশন ও বাঙালি চেতনা মঞ্চের উগ্যোগে গত ১ ফেব্রুয়ারি জাতিসংঘের সামনে এক মাসের জন্য স্থাপিত করা হয় আন্তর্জাতিক শিল্পী খোরশেদ আলম সেলিমের নকশায় এবং শিল্পী মৃনাল হকের তৈরি বাংলা ভাষার ভাস্কর্য। এই ভাস্কর্যটি জনসাধারণের দেখার জন্য উন্মুক্ত রাখা হয়। গত ৯ ফেব্রুয়ারি দুপুরে এই ভাস্কর্য পরিদর্শন করেন জাতিসংঘের মাদক বিষয় সেমিনারে অংশ নিতে আসা জাতীয় সংসদ সদস্য ও আইন এবং বিচার বিভাগীয় সংসদীয় কমিটির চেয়ারম্যান সুরঞ্জিত সেন গুপ্ত, জাতীয় সংসদ সদস্য ও জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়ামের অন্যতম সদস্য কাজী ফিরোজ রশিদ, জাতীয় সংসদ সদস্য মোহাম্মদ এনামুর রহমান, জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশ মিশনের স্থায়ী প্রতিনিধি ও রাষ্ট্রদূত মাসুদ বিন মোমেন।
মুক্তধারা ফাউন্ডেশনের কর্ণধার বিশ্ববিজৎ সাহার স্বাগত বক্তব্যের পর এবং বাঙালি চেতনা মঞ্চের চেয়ারম্যান আব্দুর রহিম বাদশার পরিচালনায় সংক্ষিপ্ত এ অনুষ্ঠানে সকলেই বক্তব্য রাখেন।
এ সময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন আন্তর্জাতিক শিল্পী খোরশেদ আলম সেলিম, রমেশ নাথ, আব্দুল হামিদ, শাহাদাত হোসেন প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত বলেন, আমাদের বাঙালি জাতীয়তাবাদ এবং স্বাধীনতা আন্দোলনের ভিত্তি ছিলো ভাষা আন্দোলন। এটি আমাদের সাংস্কৃতিক জাতীয়তাবাদও বটে। একটিকে বাদ দিয়ে অন্যটিকে চিন্তা করা যায় না। তিনি আরো বলেন, জাতিরজনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার পর চেষ্টা করা হয়েছিলো তেলে জলে মিশিয়ে বাংলাদেশকে পাকিস্তানীকরণের। এখনো আমরা পাকিস্তানী প্রতিধ্বনি শুনতে পাই। তিনি বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়াকে উদ্দেশ করে বলেন, তিনি এখনো আমাদের মুক্তিযুদ্ধের শহীদের সংখ্যা নিয়ে বিতর্ক করার চেষ্টা করছেন। মহানয়কের পাশে খলনায়ক বানিয়ে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসকে বিকৃত করার চেষ্টা করা হচ্ছে। তিনি বলেন, যে রকম স্লোগান রয়েছে- ইসলাম জিন্দা হোতায় হে সেইভাবে বাঙালি জিন্দা রয়েছে, তারা জেগেছে। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার যোগ্য নেতৃত্বেই বাংলা ভাষা আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি লাভ করেছে। সেই ভাষার ঐতিহ্যকে আপনারা প্রবাসে নিয়ে এসেছেন। আজকে জাতিসংঘের সামনে সেই ভাস্কর্য দেখতে পাচ্ছি। এর মাধ্যমে আমাদের নতুন প্রজন্ম উদ্ভুদ্ধ হবে, যারা একদিন জাতিসংঘে বাংলায় কথা বলবে। তিনি আয়োজকদের ভাস্কর্য স্থাপনের জন্য ধন্যবাদ জানান।
কাজী ফিরোজ রশীদ বলেন, আমাদের অর্জন হচ্ছে দুটো। একটি হচ্ছে ভাষা আন্দোলন আর অন্যটি হচ্ছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধ। এই দুটোকে নিয়েই আমরা বেঁচে আছি এবং বেঁচে থাকবো। এই প্রবাসে ভাষার ভাস্কর্য স্থাপন করে আপনারা যে মহান কৃীতি স্থাপন করলেন সে জন্য আপনাদের অভিনন্দন।
এনামুর রহমান বলেন, জাতিসংঘের সামনে এই ভাস্কর্য স্থাপন করে আপনারা বাংলাদেশ এবং বাংলা ভাষাকে সম্মানিত করেছেন।