কুলাউড়ার মানসিক ভারসাম্যহীনকে বিএসএফ’র বর্বর নির্যাতন
কুলাউড়া সংবাদদাতা : মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলার শরীফপুর সীমান্ত থেকে ধরে নিয়ে যাওয়া মানসিক ভারসাম্যহীন ইরা মিয়ার (৬০) ওপর বর্বর নির্যাতন চালিয়েছে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)। বন্দুকের বাট দিয়ে ভেঙে দেওয়া হয়েছে তার দ’টো দাঁত। তাঁর পায়ের তলায় বৈদ্যুতিক শক দিয়ে পুড়িয়ে দেওয়া হয়। এক মাস দুই দিন পর গত শুক্রবার রাতে তাঁকে একই সীমান্ত দিয়ে ফেরত পাঠানো হয়। তাঁর বাড়ি মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার মরাজানের পাড় গ্রামে।
পুড়ে যাওয়া পায়ের তলা দেখাচ্ছেন ইরা মিয়া l ছবি: প্রথম আলোইরা মিয়ার ছেলে জাবেদ মিয়া বলেন, ধরার পর ওই রাতেই তাঁর বাবাকে ক্যাম্পে আটকে বন্দুকের বাঁট দিয়ে নির্যাতন করে দুটি দাঁত ভেঙে দেয় বিএসএফ। তাঁর পায়ের তলায় বৈদ্যুতিক শক দিয়ে পুড়িয়ে দেওয়া হয়। পরদিন ৪ জানুয়ারি তাঁর বিরুদ্ধে অনুপ্রবেশের অভিযোগে ত্রিপুরার উনকোটি জেলার কৈলাসহর থানায় মামলা করে বিএসএফ। পুলিশ তাঁকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠায়। তাঁর মানসিক ভারসাম্যহীনতার চিকিৎসা-সম্পর্কিত ও স্থানীয় শমশেরনগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের প্রত্যয়নপত্র পাঠিয়ে ভারতে আত্মীয়স্বজনের মাধ্যমে মামলা পরিচালনা করা হয়। সেখানে ডাক্তারি পরীক্ষা ও পুলিশের তদন্ত প্রতিবেদনে তিনি মানসিক ভারসাম্যহীন প্রমাণিত হয়। শুক্রবার কৈলাসহর আদালত তাঁকে ছেড়ে দেয়। রাত নয়টার দিকে শরীফপুর সীমান্তের ১৮৬২ নম্বর খুঁটি এলাকা দিয়ে গোপনে তাঁকে বাংলাদেশে ফেরত পাঠায় বিএসএফ। বিএসএফের নির্যাতনে তাঁর বাবা এখন বেশ অসুস্থ। তাঁকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে বাড়ি নিয়ে আসা হয়েছে।
ধরে নিয়ে যাওয়ার পরপরই বিএসএফ তাঁকে নির্যাতন করে বলে জানিয়েছেন ইরা মিয়া। এ সময় তিনি কেঁদে ফেলেন। তিনি এত দিন ত্রিপুরার কৈলাসহর কারাগারে বন্দী ছিলেন।
শরীফপুর বিজিবি ক্যাম্পের নায়েক সুবেদার রফিকুল ইসলাম বলেন, তিনি ইরা মিয়াকে ফেরত পাঠানোর কথা জানেন না। তবে গত ৩ জানুয়ারি ধরে নিয়ে যাওয়ার পর থেকে ইরা মিয়াকে ফেরত দিতে কয়েক দফা বৈঠক করে বিএসএফের ওপর চাপ সৃষ্টি করা হয়।
শ্রীমঙ্গল ৪৬ নম্বর বিজিবির ব্যাটালিয়ন কমান্ডার লেফটেন্যান্ট কর্নেল নাসির উদ্দীন বলেন, তিনি এখন ছুটিতে আছেন। ইরা মিয়াকে ফেরত পাঠানোর বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখবেন।