পুলিশ হেফাজতে স্বামী নিহত, স্ত্রীও নিখোঁজ এক মাস ধরে

Police Remandরাজধানীর মিরপুর থানা পুলিশের হেফাজতে নিহত ঝুট ব্যবসায়ী মাহবুবুর রহমান সুজনের স্ত্রী প্রায় এক মাস ধরে নিখোঁজ রয়েছেন। সুজন ও লুসির পরিবারের অভিযোগ, মামলার আসামি পুলিশের বরখাস্ত সদস্যরাই লুসিকে গুম করেছে। তারা লুসির দ্রুত খোঁজ দাবি করেছেন। ২০১৪ সালের জুলাই মাসে পুলিশ হেফাজতে সুজন মারা যান। এ ঘটনায় নিহতের স্ত্রী মমতাজ সুলতানা লুসি বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেন।
লুসির পরিবারের অভিযোগ, মামলার প্রতিপক্ষ বিষয়টি আপস করতে দীর্ঘ দিন ধরে চাপর দিয়ে আসছেন। আপস না করায় তাকে গুম করা হতে পারে। লুসির অনুপস্থিতিতেই তার পক্ষে আদালতে আইনজীবী পরিবর্তন এবং সাক্ষ্যগ্রহণের তারিখ পেছানোর দুটি আবেদন জমা দিয়েছেন এক আইনজীবী। পরিবারের তথ্য অনুযায়ী, ২০১৪ সালের ১৩ জুলাই ঝুট ব্যবসায়ী সুজন মিরপুর থানা পুলিশের হাতে গ্রেফতারের পর নির্যাতনে মারা যায়।
স্বামী হত্যার বিচার চেয়ে ওই সময়কার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সালাহউদ্দিন খান ও এসআই জাহিদসহ ১০ জনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করেন সুজনের স্ত্রী লুসি। এরপর বিচার বিভাগীয় তদন্তে এসআই জাহিদসহ পাঁচজনকে অভিযুক্ত করা হয়।
এদিকে সুজন হত্যা মামলায় ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতে সাক্ষ্য দিতে যাওয়ার পথে গত ৬ জানুয়ারি নিখোঁজ হন লুসি। নিহত সুজনের মা শাহিদা বেগম জানান, গত ৬ জানুয়ারি আদালতে যাওয়ার পর থেকে লুসিকে আর পাওয়া যাচ্ছে না। এমনকি তার ব্যবহৃত মোবাইলফোনটিও বন্ধ। শাহিদার বেগমের অভিযোগ, মামলার প্রধান আসামি এসআই জাহিদের মা মোবাইলে যোগাযোগ করে বিষয়টি আপসের কথা বলেন।
তিনি বলেন, জাহিদের মায়ের দাবি ছিল তার ছেলে জেল থেকে বের করে হলে সারাজীবন কৃতজ্ঞ থাকতেন। জাহিদের মা সুজনের ছেলেমেয়েকে দেখাশোনার কথাও বলেন। সুজনের ভাই জহিরুল ইসলাম সবুজ বলেন, লুসি ভাবীকে কোনো পুলিশ সদস্যই কোথাও বন্দী করে রেখেছেন। জাহিদের কোনো লোক বা পলাতক আসামিরা এ কাজ করতে পারেন। তিনি বলেন, এ ঘটনায় শাহ আলী থানায় নিখোঁজের সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়েছে।
সবুজ জানান, গত ২১ জানুয়ারি লুসির পক্ষের আইনজীবীও সাক্ষ্যগ্রহণের তারিখ পরিবর্তন চেয়ে আদালতে দুটি আবেদন করেন। সরকারপক্ষের আইনজীবীরা বলেছেন, লুসির নিখোঁজের ব্যাপারে তাদের কাছে কোনো কিছু জানা নেই।
এ বিষয়ে জাতীয় মহিলা আইনজীবী সমিতির নির্বাহী পরিচালক অ্যাডভোকেট সালমা আলী বলেন, লুসির পরিবারের দাবি যে চাপের মুখে কোনোভাবে তাকে লুকিয়ে রাখা হয়েছে। কোনো নিখোঁজ ব্যক্তিকে খুঁজে বের করা সাংবিধানিকভাবে রাষ্ট্রের দায়িত্ব। সূত্র: যুগান্তর