নবীগঞ্জে শিশুকে বেঁধে নির্যাতন, ভিডিও ইন্টারনেটে প্রচার, ৩ জনকে আটক করেও ছেড়ে দিল পুলিশ

16074ডেস্ক রিপোর্টঃ সিলেটে শিশু সামিউল আলম রাজন হত্যা নিয়ে আলোচনা এখনো থামেনি। গত বছরের ৮ জুলাই চুরির অপবাদ পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছিলো শিশু রাজনকে। সারা দেশে প্রতিবাদের ঝড় ওঠা এই হত্যাকান্ডের ঘটনায় ৪ জনের ফাঁসির রায়ও হয়েছে।

রাজন হত্যার রেস কাটার আগেই এবার হবিগঞ্জের নবীগঞ্জে বিস্কুট চুরির দায়ে এক শিশুকে গাছের সাথে বেঁধে নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে। নির্যাতনের দায়ে পুলিশ তিনজনকে আটক করলেও পরে মুচলেকা নিয়ে ছেড়ে দেয়।

শুক্রবার সকালে দবির হোসেন নামে ওই শিশুকে গাছের সাথে বেঁধে নির্যাতন করা হয়। রাজন হত্যার দৃশ্য মোবাইল ফোনে ধারণ করে ইন্টারনেটে ছেড়ে দিয়েছিলো ঘাতকরা। দবিরকে নির্যাতনের দৃশ্যও মোবাইল ফোনে ধারণ করে হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়া হয়।

এ ঘটনায় সোমবার দিনব্যাপী উপজেলার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে ওই ঘটনার সাথে জড়িত থাকার দায়ে বনকাদিপুর গ্রামের লুৎফুর রহমানের ছেলে মেহেদী হাসান নাইম (১৩), তার ভাই বড় ভাই মিছবাহ উদ্দিন (২৭) ও ভিডিও ক্লিপ ধারণকারী একই গ্রামের চুনু মিয়ার ছেলে রেজাউল করিম (১৪)কে আটক করা হয়।

পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায় উপজেলার কামারগাঁও বাজার, সাইনবোর্ড, জিয়াপুর ও নতুন বাজার এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে জাতীয় ও স্থানীয় পত্রিকা বিক্রি করছে আসছে ইসন উল্লাহর ছেলে দবির। গত শুক্রবার সকালে স্থানীয় বাজারের হাবিব রেষ্টুরেন্টের পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় সপত্রিকা কেনার কথা বলে তাকে ডাক দেয় রেস্টুরেন্টের মালিক মোহাম্মদ চৌধুরী। পরে পত্রিকার দাম পরিশোধে অস্বীকার করেন তিনি। এক পর্যায়ে দবির ওই রেস্টুরেন্ট থেকে এক প্যাকেট বিস্কুট নিয়ে চলে যেতে চাইলে তাকে পত্রিকার টাকা নিতে ডাকেন।

সেসময় দবির ফিরে আসলে রেস্টুরেন্টের মালিক মোহাম্মদ চৌধুরী ও রেস্টুরেন্টে থাকা মিছবাহ ও তার সহযোগিরা দবিরকে ধরে দোকানের পেছনে নিয়ে বেধড়ক মারপিট করে। তার চিৎকারে আশপাশের লোকজন এগিয়ে আসলে তারা দবিরকে কাছের একটি নির্জন জঙ্গলে নিয়ে যায়। সেখানে নিয়ে একটি গাছের সাথে বেঁধে অমানুষিক নির্যাতন ও মারপিট করে। এসময় তারা তার সাথে তাকা পত্রিকা বিক্রির টাকা ও একটি মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নিয়ে যায়। এবং এই মারপিটের দৃশ্যের ভিডিও মোবাইল ফোনে ধারন করে ইন্টারনেটে ছেড়ে দেয় রেজাউল নামের স্থানীয় এক যুবক। এই ভিডিও ক্লিপকে কেন্দ্র করে উপজেলা জুড়ে নানা আলোচনার সৃষ্টি হয়।

এ ব্যাপারে নবীগঞ্জ থানার ওসি মোঃ আব্দুল বাতেন খাঁন বলেন, ‘যদিও শুক্রবারে ঘটনাটি ঘটেছে তবে এখন পর্যন্ত কোন অভিযোগ আসেনি। সোমবার ঘটনার খবর পেয়ে পুলিশ বিভিন্ন স্থানে অভিযান পরিচালনা করে। এবং ঘটনার সাথে জড়িত সন্দেহে ৩জন কে আটক করা হয়। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। পরে ভিকটিমের কোন অভিযোগ না থাকায় মুচলেকার মাধ্যমে আটকৃতদের ছেড়ে দেওয়া হয়।’

স্থানীয় ব্যক্তিবর্গের উপস্থিতিতে বিষয়টি সামাজিকভাবে সমাধান করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।