শিশু যৌন নির্যাতনে অভিযুক্ত বাংলাদেশি শান্তিরক্ষীরাও!
ডেস্ক রিপোর্টঃ প্রথমবারের মতো মধ্য আফ্রিকা প্রজাতন্ত্রে শিশুদের যৌন নির্যাতনের সঙ্গে জড়িত শান্তিরক্ষীদের জাতীয়তা প্রকাশ করেছে জাতিসংঘ। এতে সন্দেহভাজনের তালিকায় আছে বাংলাদেশের শান্তিরক্ষীরাও।
বিবিসির খবরে বলা হয়, নিউইয়র্কে শুক্রবার (৩০ জানুয়ারি) এক সংবাদ সম্মেলনে জাতিসংঘের সহকারী মহাসচিব (ফিল্ড সাপোর্ট) অ্যান্থনি ব্যানবেরি কান্নাজড়িত কণ্ঠে যৌন নির্যাতনের নতুন অভিযোগগুলো ঘোষণা করেন। এই সমস্যা মোকাবেলায় সম্ভাব্য সব কিছুই করা হচ্ছে বলে জানান তিনি।
মধ্য আফ্রিকান প্রজাতন্ত্রে জাতিসংঘ ও ইউরোপীয় শান্তিরক্ষীদের বিরুদ্ধে শিশুদের যৌন নির্যাতনের অভিযোগ নিয়ে অনেকটা হিমশিম খাচ্ছে জাতিসংঘ।
মধ্য আফ্রিকার দেশটিতে মুসলিম-খ্রিস্টান সংঘাত থামাতে ২০১৩ সাল থেকে বিদেশি সৈন্য রয়েছে। প্রথমে যায় ফ্রান্সের সৈন্যরা। পরের বছর জাতিসংঘ শান্তিরক্ষীও মোতায়েন করা হয় দেশটিতে। সেখানে বর্তমানে ১০ হাজারের বেশি বিদেশি সৈন্য কাজ রয়েছে।
২০১৫ সালে এই দেশটিতে বিদেশি সৈন্যদের দ্বারা শিশুদের যৌন নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছিল। সংবাদ সম্মেলনে নতুন ১২টি অভিযোগ তুলে ধরেন জাতিসংঘের সহকারী মহাসচিব, যা নিয়ে ঘটনার সংখ্যা বেড়ে ২২টি হল।
ছয়টি শিশু অভিযোগ করেছে, বাংলাদেশ, কঙ্গো, নাইজার, মরক্কো ও সেনেগালের শান্তিরক্ষীদের দ্বারা যৌন নির্যাতনের শিকার হয়েছে তারা। ছয়টি শিশুর অভিযোগ ফ্রান্স, জর্জিয়া ও আরেকটি ইউরোপীয় দেশের সৈন্যদের দিকে।
শিশুদের অভিযোগ অনুযায়ী, ঘটনাগুলো ঘটেছে ২০১৪ সালে দেশটির রাজধানী বাঙ্গির বিমানবন্দরের পাশের একটি শরণার্থী শিবিরের কাছে।
বিবিসি জানিয়েছে, এই শিশুদের কয়েকজন (১৪ থেকে ১৬ বছর বয়সী) অভিযোগ করেছে যে জর্জিয়ার সৈন্যরা তাদের ধর্ষণ করেছে।
ফরাসি সৈন্য দ্বারা যৌন নিগ্রহের শিকার হওয়ার অভিযোগ করেছেন সাত বছর বয়সী একটি মেয়ে এবং নয় বছর বয়সী একটি ছেলে।
তবে কতটি ঘটনায় বাংলাদেশি কতজন সৈন্যের সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ এসেছে, সে বিষয়ে বিস্তারিত কিছু জানানো হয়নি।
এই অভিযোগ ওঠার পর গত মাসে একটি স্বাধীন তদন্ত সংস্থা জাতিসংঘ শান্তিরক্ষীদের যৌন নির্যাতনে জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়ার কথা জানিয়েছিল। এখন জাতিসংঘও তা স্বীকার করল।
শান্তিরক্ষীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ নিয়ে বাংলাদেশসহ সংশ্লিষ্ট অধিকাংশ দেশ তদন্ত শুরু করেছে বলে জাতিসংঘ কর্মকর্তাদের উদ্ধৃত করে রয়টার্স জানিয়েছে। নাইজার ও সেনেগালের সৈন্যদের বিরুদ্ধে অভিযোগ জাতিসংঘই তদন্ত করছে।
সংবাদ সম্মেলনে অ্যান্থনি ব্যানবারি বলেন, “যারা জাতিসংঘের হয়ে শান্তি রক্ষার কাজ করে, যারা নিরাপত্তা দেওয়ার কাজ করে; এই ধরনের অভিযোগ তাদের কতটা ক্ষুব্ধ করেছে, তা বলে বোঝানোর নয়।”
নির্যাতিতদের জন্য জাতিসংঘের পক্ষ থেকে সম্ভাব্য সব কিছু করার আশ্বাস দিয়ে তিনি বলেন, এর বিচার হবে যাতে ভবিষ্যতে আর এমন ঘটনা না ঘটে।
শান্তিরক্ষীদের বিরুদ্ধে এই অভিযোগের বিষয়ে জাতিসংঘ মানবাধিকার সংস্থার মুখপাত্র রুপার্ট কলভিল জেনেভায় সাংবাদিকদের বলেন, এটা কীভাবে বিস্তৃত হচ্ছে, সেন্ট্রাল আফ্রিকান রিপাবলিকের ঘটনাই তা মেলে ধরেছে।