বাসর রাতে বর নিখোঁজ!
ডেস্ক রিপোর্টঃ বিয়ে করে বাসর রাতে নিখোঁজ হয়ে গেলেন চট্টগ্রামের ফটিকছড়ির প্রবাস ধর (৩০)। এদিক সেদিক খোঁজাখুঁজি করেও তার কোনো খবর না পেয়ে শেষ পর্যন্ত থানায় পুলিশকে জানালেন পরিবারের লোকজন। দায়ের করা হয়েছে জিডিও।
বর সেজে বিয়ে করে বধূ নিয়ে বাড়ি এসেছিলন প্রবাস। একটি দিন পার করলেন সবার সঙ্গে। শুধু বাকি ছিল ফুলশয্যা। সেটিই হওয়ার কথা ছিল সেদিন। কিন্তু বাসর রাতের দিনেই হদিস নেই বরের।
বাসর রাতের দিন বর নিখোঁজের এমনি চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটেছে সেখানকার নাজিরহাট পৌরসভাধীন পূর্ব সুয়াবিল ভাঙ্গাদিঘীর পাড় এলাকায়। নিখোঁজ ব্যক্তি প্রবাস ধর ওই গ্রামের বাবুল ধরের ছেলে। এ ব্যাপারে গত মঙ্গলবার একটি নিখোঁজ ডায়েরি করেন তার বড় ভাই সুবাস ধর।
প্রবাস নাজিরহাট বাজারের শেখর জুয়েলার্সের ম্যানেজার হিসেবে চাকরি করেন। ওই গ্রামের জগমোহন মাস্টার বাড়ির বাবুল ধরের দ্বিতীয় পুত্র প্রবাস ধর গত শুক্রবার সামাজিকভাবে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন বাঁশখালী উপজেলার কালিপুরের পম্পি ধরের সঙ্গে।
গত সোমবার ছিল তাদের ফুলশয্যার রাত। ওই দিন সকালে প্রবাস নাজিরহাট বাজারে কেনাকাটা করতে যান। সকাল দশটায় বাজারে গেলেও দুপুর পার হলেও তার বাড়ি না ফেরায় বাড়ির লোকজন তার ব্যবহৃত মুঠোফোনে ফোন করলে তার মুঠোফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়। এরপর থেকে তাকে সম্ভাব্য সব জায়গায় খোঁজ নিয়েও তার হদিস মিলেনি।
নিখোঁজ হওয়ার দুদিন পার হলেও তার কোনো খোঁজ না পাওয়ায় উদ্বিগ্ন পরিবারের সদস্যরা। গতকাল বুধবার পর্যন্ত তার ফোনটি বন্ধ রয়েছে।
তার মা বকুল বণিক বলেন, আমার ছেলে সকাল ১০টায় ঘর থেকে ১৩ হাজার টাকা নিয়ে নাজিরহাট বাজারের উদ্দেশে বের হয়। তার এক ঘণ্টা পর থেকে তার মোবাইল ফোন বন্ধ। দুইদিন পার হলেও তার কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি। আমি আমার ছেলেকে ফিরে পেতে চাই।’
নববধূ পম্পি ধর বলেন, ‘শ্বশুর বাড়ি আসার পর স্বামীর সঙ্গে টুকটাক কথা হয়েছে। সেদিন ছিল আমাদের ফুল শয্যার রাত। তার কি হয়েছে? কেন তিনি নিখোঁজ কোনোভাবেই মাথায় আসছে না।’
নিখোঁজ প্রবাসের বড় ভাই সুবাস কুমার ধর বলেন, ‘কেন সে নিখোঁজ বুঝতে পারছি না। বিয়ের পর সে হাসিমুখে ঘরে ছিল। কেউ তাকে অপহরণ করে থাকলে অন্তত ফোন আসতো। আমি থানায় ডায়েরি করেছি। আমার ভাইয়ের হদিস পেতে সবার সহযোগিতা চাই।’
প্রবাস ধরের কর্মস্থল নাজিরহাট বাজারের শেখর জুয়েলার্সের মালিক শেখর ধর বলেন, আমার জানা মতে তার সঙ্গে কারো বিরোধ নেই। বিয়ে উপলক্ষে তাকে ছুটি দিয়েছি।’
স্থানীয়রা জানান, প্রবাস ধর বিগত দুই বছর আগে আরও একবার বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হয়েছিলেন। কিন্তু বিয়ের মাত্র দু’মাস পার হতেই তার স্ত্রী বাপের বাড়ি গিয়ে আর আসেননি। একপর্যায়ে সামাজিকভাবে তাদের বিচ্ছেদ ঘটে।
ভূজপুর থানার ওসি একেএম লিয়াকত আলী বলেন, ‘তার নিখোঁজের বিষয়টি সব থানায় পাঠানো হয়েছে। তার হদিস জানতে পুলিশ কাজ করছে।’
তিনি আরও বলেন, কেউ তাকে অপহরণ করেছে কিনা তা আমরা এখনো নিশ্চিত হতে পারিনি। আগের ঘটনার কোন জের ধরে এই ঘটনা ঘটেছে কিনা তা তদন্ত করে দেখছি।