প্রতিমন্ত্রী, এমপি সহ ২১ জনকে হুমকি দিয়ে আনসারুল্লাহর নামে চিঠি
ডেস্ক রিপোর্টঃ সরকারের এক প্রতিমন্ত্রী, সরকারদলীয় সাংসদ সহ মোট ২১ জনকে হত্যার হুমকি দিয়ে আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের নামে এক চিঠি ডাকযোগে নাটোর প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক দুলাল সরকার বরাবর পৌঁছেছে।
বৃহস্পতিবার (২১ জানুয়ারি) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ডাক মারফত এ চিঠি পেয়েছেন বলে সংবাদমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন দুলাল সরকার।
নাটোর প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক দুলাল সরকার জানান, নাটোর প্রেসক্লাবে হলুদ খামে ডাকযোগে একটি চিঠি আসে। চিঠিটি খোলার পর আনসারুল্লাহ বাংলা টিম-১১ নামের একটি সংগঠন নাটোরের মন্ত্রী, সংসদ সদস্যসহ মোট ২১ জনের নাম উল্লেখ দেখতে পাওয়া যায়। প্রাথমিকভাবে বিষয়টি পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।
চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, আনসারুল্লাহ বাংলা টিম-১১ রাজশাহী বিভাগের নাটোর জেলায় প্রথম আঘাতেই যাদের নিশ্চিহ্ন করবে তাদের একটি প্রাথমিক তালিকা দেয়া হলো। স্বল্প সময়ে আরো একটি নামের তালিকা দেয়া হবে বলেও চিঠিতে উল্লেখ করা হয়।
চিঠিতে যাদের হুমকি দেয়া হয়েছে তারা হলেন- তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক এমপি, নাটোর-২ (সদর ও নলডাঙ্গা) আসনের সাংসদ শফিকুল ইসলাম শিমুল, নাটোর-১ (লালপুর-বাগাতিপাড়া) আসনের সাংসদ আবুল কালাম আজাদ, নাটোর সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শরিফুল ইসলাম রমজান, জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক গোলাম মোর্ত্তুজা, নাটোর জজকোর্টের পিপি সিরাজুল ইসলাম, নাটোর প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক দুলাল সরকার, জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম জেমস, জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট মালেক শেখ, সাংসদ শফিকুল ইসলাম শিমুলের এপিএস আকরামুল ইসলাম, বাংলাদেশ মহিলা আওয়ামী যুবলীগের যুগ্ম সম্পাদক ও নাটোর-৪ (গুরুদাসপুর-বড়াইগ্রাম) আসনের সাংসদ আব্দুল কুদ্দুসের মেয়ে কুহেলী কুদ্দুস মুক্তি, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি আব্দুল্লাহ আল সাকিব বাকি, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক শফিউল আযম স্বপন, নলডাঙ্গা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অধ্যাপক এসএম ফিরোজ, আওয়ামী লীগ নেতা শহিদুল ইসলাম বকুল, এইচ এম জাকির, আর্জু শেখ, আসাদ, ফেরদৌস, ভোলা ও বুলবুল।
চিঠিতে আরও বলা হয়, পশ্চিমা বিশ্বে ইহুদি নাসারাদের ইসলাম বিরোধী ঘৃণ্য চক্রান্তের সঙ্গে আজ যুক্ত হয়েছে উপমহাদেশের হিন্দু কাফের মুরতাদ চক্র। যার প্রত্যক্ষ ফসল- যালেম, কাফের আওয়ামী লীগের বাংলার মসনদে অধিষ্ঠান। কাল্পনিক যুদ্ধাপরাধীদের বিচার, জঙ্গি দমনসহ নানা অজুহাতে দীনি মুজাহিদদের দমন ও ধ্বংস করাই তাদের প্রধান কর্ম। এই বেদীন ও কুফরকে সহযোগিতার জন্য তৈরি করা হয়েছে একদল তান্ত্রিক। এরাই মূলত আধুনিকতা ও বিজ্ঞান চিন্তার নামে বিভ্রান্ত করছে। নতুন প্রজন্মকে ধর্মের মিথ্যা ও ভুল ব্যাখ্যার মাধ্যমে কৌশলে তাদের মনে জন্ম দিচ্ছে ইসলামবিরোধী ধারণা। এই তথাকথিত বুদ্ধিজীবী, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব, ব্লগার, বাম ও মুক্তিযুদ্ধ চেতনা ব্যবসায়ীরাই আজ ইসলামের প্রধান দুশমন। এদের সম্পর্কে পাক কোরআনে পরিষ্কারভাবে বলা আছে, ‘তারা চায় যে, তারা যেমন, তোমরাও তেমনি কাফের হয়ে যাও, সব সমান হয়ে যাও। তাদের বন্ধুত্বকে গ্রহণ করো না যে পর্যন্ত না তারা আল্লাহর পথে আসে। অতঃপর তারা যদি বিমুখ হয় তবে তাদের যেখানে পাবে হত্যা কর। (সুরা আল নিসা-৮৯)।
“এই কাফেরদের যোগসাজশে নিষিদ্ধ করা হয়েছে অনেক ধর্মীয় সংগঠন। সম্প্রতি নিষিদ্ধ করা হয়েছে আনসারুল্লাহ বাংলা টিমকে। কিন্তু ইসলামি জিহাদি আদর্শে বলিয়ান এই টিমকে কোনো নশ্বর মানবসৃষ্ট সরকারের আদেশের পরোয়া করে না।”
এ ব্যাপারে নাটোরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মুনশী সাহাবুদ্দিন সংবাদমাধ্যমকে জানান, আতঙ্ক ছড়ানোর জন্য কোনো মহল এই ধরনের চিঠি পাঠিয়ে থাকতে পারে। তারপরও বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে খতিয়ে দেখা হচ্ছে।