আমরা একদিকে বিচার করছি, অন্যদিকে উন্নয়ন করছি: শেখ হাসিনা
ডেস্ক রিপোর্টঃ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আমার কাছে কোনো দাবি করতে হবে না। বাংলাদেশের কোন জায়গায় কি সমস্যা তা আমি জানি। আমার উপর আপনার ভরসা রাখুন। সব দাবি পূরণ হবে।
যুদ্ধাপরাধীদের বিচার প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন, বঙ্গবন্ধু যুদ্ধাপরাধীদের বিচার শুরু করেছিলেন। কিন্তু জেনারেল জিয়া অবৈধভাবে ক্ষমতায় এসে এই বিচার বন্ধ করে দেন। আমরা আবার ক্ষমতায় এসে বিচার শুরু করি। এই বিচার অব্যাহত থাকবে। আমরা একদিকে বিচার করছি, অন্যদিকে উন্নয়ন করছি।
বৃহস্পতিবার (২১ জানুয়ারি) সিলেট আলিয়া মাদ্রাসা মাঠে বিশাল জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে সিলেটবাসীর বিভিন্ন দাবিদাওয়ার প্রেক্ষিতে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগ আয়োজিত এই জনসভায় শেখ হাসিনা আরো বলেন, ২০৪১ সালের মধ্যে দক্ষিণ এশিয়ায় উন্নত দেশে পরিণত হবে বাংলাদেশ। বাংলাদেশকে ক্ষুধা ও দারিদ্রমুক্ত দেশে গড়ে তোলা হবে। ২০২১ সালের মধ্যে মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হবে। ইতোমধ্যে ৭৫ ভাগ মানুষ বিদ্যুৎ পেয়েছেন ২০২১ সালের মধ্যে দেশের প্রতিটি ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসলেই দেশে উন্নয়ন হয়, দেশ এগিয়ে যায়। বাংলাদেশ এখন বিশ্বে উন্নয়নের রোল মডেল।
বাংলাদেশে মাটিতে কোনো জঙ্গিবাদ-সন্ত্রাসের ঠাঁই নেই উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদ দমন করেছি। মানুষের মনে স্বস্তি ফিরিয়ে এনেছি। দেশকে উন্নয়নের ধারায় ফিরিয়ে এনেছি।
বিএনপির সমালোচনা করে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী বলেন, বিএনপি সরকারের আমল ছিলো সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদে আমল। বাংলা ভাই সৃষ্টির আমল। এরা এখনো জীবন্ত মানুষকে পুড়িয়ে হত্যা করে। পৃথিবীর ইতিহাসে এমন বর্বরতার নজির নেই।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, যারা পেট্রোল বোমা দিয়ে মানুষ পুড়িয়েছে তাদের ক্ষমা নেই। তাদের প্রত্যেকের বিচার হবে। আওয়ামী লীগ হত্যার রাজনীতিতে বিশ্বাস করে না। আওয়ামী লীগ চায় দেশে উন্নয়ন।
শিক্ষা ও চিকিৎসাক্ষেত্রে তাঁর সরকারের অবদানের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়তে আমরা কম্পিউটার শিক্ষাকে সার্বজনীন করেছি, মাধ্যমিক পর্যন্ত বাধ্যতামূলক করেছি। মাধ্যমিক পর্যন্ত বিনামূল্যে বই প্রদান করা হচ্ছে। ১ কোটি ২০ লক্ষ শিক্ষার্থীকে বৃত্তি ও উপবৃত্তি দেওয়া হচ্ছে। চিকিৎসাসেবাকে জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছিয়েছি। শিশু ও মাতৃমৃত্যুর হার কমেছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, গত ৭ বছরে আমরা ৩০ লাখ লোককে বিদেশে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করেছি। দেশে কর্মসংস্থান সৃষ্টি করেছি। এদেশের কোনো মানুষ যাতে কষ্ট না পায়, বেকারত্বের অভিশাপ নিয়ে কেউ যাতে কষ্ট না পায় সে লক্ষ্যে কাজ করছি। বেসরকারিকরণকে আমরা উন্মুক্ত করেছি। সারাদেশে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল হবে। সেখানে বিনিয়োগ হবে, কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে। দেশে রিজার্ভ এখন ২৭ বিলিয়নের উপরে। অর্থনীতির চাকা খুব সচল।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ওসমানী বিমানবন্দরকে আন্তর্জাতিকমানে উন্নীত করেছি। রিফুয়েলিং স্টেশন নির্মাণ করেছি। অচিরেই তা চালু হবে।
৪ টা ২৭ মিনিটে শুরু হওয়া প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য শেষ হয় ৪টা ৫৩ মিনিটে। ২৬ মিনিট ব্যাপী বক্তব্যে তিনি বলেন, সিলেটে মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করা হবে।
বিএনপি নেত্রীর সমালোচনা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশের মানুষ যখন শান্তিতে থাকে তখন একজনের মনে অশান্তি দেখা দেয়। তার মনে শান্তি নেই। তাই দেশের মানুষের শান্তি তিনি সহ্য করতে পারেন না। আওয়ামী লীগ এদেশকে স্বাধীন করছে, তাই আওয়ামী লীগ সবসময় দেশের উন্নয়নের চিন্তা করে কিন্তু যারা উড়ে এসে ক্ষমতায় জুড়ে বসে তারা কেবল লুটপাটের চিন্তা করে।
মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি বদরউদ্দিন আহমদ কামরানের সভাপতিত্বে এই জনসভায় আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখেন।