সিলেটে আইনত বিয়ে করেও নিপীড়নের শিকার হিন্দু সাবালক-সাবালিকা
ডেস্ক রিপোর্ট : সিলেটে ধর্ম ও আইনত বিয়ে করেও নিপীড়নের শিকার সনাতন ধর্মের সাবালক ও সাবালিকা। টাকার লোভে ওই যুগল ও পরিবারের উপর চালানো হচ্ছে আইনী, শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন। অমানবিক এ নিপীড়ন থেকে রেহাই পেতে তারা সরকার কর্তৃপক্ষের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। সোমবার (১৮জানুয়ারী) সিলেট জেলা প্রেসকাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে আইনী হয়রানী ও অমানবিক নিপীড়নের এ অভিযোগ করেন নগরীর কাষ্টঘরের বাসিন্দা পুতুল বনিকের পরিবার।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, সিলেট নগরীর কাষ্টঘরের অজিত কুমার দাসের মেয়ে অর্পিতা রাণী দাস (২১) ও এলাকার বাবুল বিকাশ বনিকের পুত্র পার্থ বনিক রণির(৩১) মধ্যে দীর্ঘদিনের প্রেমের গভীর সম্পর্ক। এক পর্যায়ে অর্পিতার পিতা অজিত কুমার দাস সিলেট কোতোয়ালী থানায় একটি সাধারন ডায়েরী করলে স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলরের মধ্যস্থতায় বিষয়টি আপোস মিমাংসা করে দেয়া হয়। কিন্তু অর্পিতা ও রণির সম্পর্কে কোন চ্ছেদ না ঘটায় অর্পিতার পিতা অজিত দাস ছেলে রণির পিতার কাছে ২লাখ টাকা দাবি করেন। টাকা দিলে তিনি তার মেয়েকে পারিবারিকভাবে রণির হাতে তুলে দেবেন বলে জানান। অজিত দাসের এ বেআইনী দাবি মেনে নিতে পারেনি প্রেমিক রণির পরিবার। তাই পারিবারিক ও সামাজিকভাবে তাদের বিয়ে হয়নি। একপর্যায়ে প্রেমের টানে অর্পিতা ও রণি একে অপরের হাত ধরে পালিয়ে যায়। তারা নিজেদের সাবালিকা ঘোষনায় গত ২৬ নভেম্বর সিলেট নগরীর বালুচরস্থ দূর্গাবাড়িতে গিয়ে সনাতন ধর্মীয় শাস্ত্র মতে এক অপরকে বিয়ে করে। গত ২৯নভেম্বর ঢাকায় গিয়ে তারা নোটারী পাবলিকের মাধ্যমে আইনীভাবে তাদের দাম্পত্য জীবনের ঘোষনা দেয়। এসময় রণির পিতা-মাতা পুত্রবধু অর্পিতাকে পারিবারিকভাবে বরন করে নেয় এবং অর্পিতা তাদের ঢাকাস্ত বাসায় অবস্থান করতে থাকে।
এদিকে দাবিকৃত ২লাখ টাকা না পেয়ে অর্পিতার পিতা মেয়ের স্বেচ্ছায় সম্পাদিত ধর্মীয় ও আইনী বিয়ে মেনে নিতে পারেন নি। এ ঘটনায় তিনি গত ১ ডিসেম্বর অর্পিতার স্বামী রণি ও তার পরিবারের সদস্যদের আসামী করে সিলেট কোতয়ালী মডেল থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি ‘মিথ্যা’ অপহরন মামলা করেন। মামলায় পুলিশ ঢাকাস্থ বাসা থেকে অর্পিতা ও তার বৃদ্ধ শশুর বাবুল বিকাশ বনিককে আটক করে সিলেটে নিয়ে আসে। এ সময় অর্পিতার পিতা অজিত ও পুলিশ রণির বৃদ্ধপিতা বাবুল বিকাশ বনিকের সাথে অমানবিক আচরন করে বলে অভিযোগে প্রকাশ।
সংবাদ সম্মেলনে পুতুল বনিক জানান, তার পুত্র রণি ও পুত্রবধূ অর্পিতা সাবালক-সাবালিকা। তাদের দাম্পত্য জীবনে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি সম্পূর্ন আইন ও মানবাধিকার পরিপন্থী। আটকের পর তার পুত্রবধু আদালতে স্বেচ্ছায় রণিকে বিয়ে ও তার সাথে ঘরসংসার করার ঘোষনা দিয়েছেঅর্থলোভী অজিত দাস তাদেরকে মিথ্যে মামলায় হয়রানী করছে। তারা আদালত থেকে জামিন নিলেও তাদের পুত্রবধূ অর্পিতাকে পিত্রালয়ে রেখে তার উপর অমানুষিক নিপীড়ন চালানো হচ্ছে। রণির সাথে বিচ্ছেদ ঘটানোর জন্য তাকে শারিরীক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করা হচ্ছে। সংবাদ সম্মেলনে পুতুল বনিক অবিলম্বে এ ‘মিথ্যা’ মামলা প্রত্যাহার ও তার সাবালিকা পুত্রবধু অর্পিতাকে তাদের ঘরে ফিরিয়ে দিতে সরকারের উর্ধতন কর্তপক্ষের নিকট জোর দাবি জানান।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন পুতুল বনিকের স্বামী বাবুল বিকাশ বনিক ও ছেলে সনি বনিক ওরফে পনি বনিক প্রমূখ।া