নারায়ণগঞ্জে ৫ খুন : সন্দেহের তালিকায় ভাগ্নে মাহফুজ
ডেস্ক রিপোর্টঃ নারায়ণগঞ্জে আলোচিত পাঁচ খুনে স্ত্রী, দুই সন্তান ও ভাইবৌ হারানো শফিকুল ইসলামের ভাগ্নে মাহফুজকে সন্দেহ করছে পুলিশ। শনিবার রাতে শহরের ২ নম্বর বাবুরাইল এলাকার প্রবাসী ইসমাইলের পাঁচতলা বাড়ির একতলার পূর্ব পাশের ফ্ল্যাটে ওই পাঁচজনের লাশ পাওয়া যায়। নিহতরা হলেন- তাসলিমা বেগম (৪০), তার ছেলে শান্ত (১০), মেয়ে সুমাইয়া (৫), ভাই মোরশেদুল (২৫) ও তাসলিমার জা লামিয়া (২৫)।
তাসলিমার স্বামী শফিকুল ইসলাম ঢাকায় একটি প্রাইভেট কোম্পানির গাড়ির চালক। তার ছোট ভাই নিহত লামিয়ার স্বামী শরীফ মিয়া ঢাকার মোতালেব প্লাজায় মোবাইল ফোন সার্ভিসিংয়ের কাজ করেন। পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন, মাহফুজ তার ছোট মামীকে অশালীন প্রস্তাব দিত। এ নিয়ে পারিবারিক সালিশও হয়। বিষয়টি শফিকুল রোববার সকালে নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানায় দায়ের হত্যা মামলায়ও উল্লেখ করেছেন।
তাসলিমার খালা রমিজা খাতুন বলেন, “১৫ দিন আগে মামী লামিয়াকে কুপ্রস্তাব দেওয়ার অভিযোগে মাহফুজকে জুতাপেটা করা হয়। এরপর পারিবারিক সালিশেও তাকে বকাঝকা করা হয়।”
তবে তাসলিমার কাছে পাওনা টাকা নিয়ে দেওয়া হুমকির বিষয়টিও গুরুত্বের সঙ্গে দেখছে পুলিশ। নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানা ওসি আব্দুল মালেক জানান, জিজ্ঞাসাবাদের জন্য শফিকুলের ভাগ্নে মাহফুজ ও মোরশেদের খালাতো ভাই শাহজাদাকে আটক করা হয়েছে। এছাড়া আটজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে।
পুলিশ সুপার ড. খন্দকার মহিদ উদ্দিন রোববার সাংবাদিকদের বলেন, “হত্যাকাণ্ডের পেছনে ব্যক্তিগত সম্পর্ক বা দেনা-পাওনার বিষয় থাকতে পারে। আমরা আশা করছি, আগামী ৭২ ঘণ্টার মধ্যে রহস্য উদঘাটন করতে পারব।”
শফিকুল মামলার এজাহারে উল্লেখ করেছেন, তার স্ত্রী তাসলিমার কাছে ঢাকার কলাবাগান এলাকার নাজমা, শাহজাহানসহ কয়েকজন প্রায় ১২ লাখ টাকা পেত, যা মাসিক চক্র বৃদ্ধি হারে সুদে নেওয়া। পাওনা টাকার জন্য তারা প্রায়ই নারায়ণগঞ্জের বাসায় এসে হুমকি দিত। তাসলিমার ভাই মোশারফ হোসেন ওরফে মোরশেদের কাছেও ব্যবসায়ীক কারণে অনেকে টাকা পেত।
এছাড়া তার ছোটভাই শরীফের স্ত্রী লামিয়ার কাছে ‘যৌন আবেদন’ করত ভাগ্নে মাহফুজ। লামিয়া বিষয়টি তার স্বামী শরীফ ও জা তাসলিমাকে জানিয়েছিলেন।
“আমার সন্দেহ উক্ত ব্যক্তিগণসহ অজ্ঞাতনামা দুস্কৃতিকারীরা পরস্পরের যোগসাজশে গত ১৫ জানুয়ারি রাত সাড়ে ১০টার পর থেকে ১৬ জানুয়ারি রাত ৮টা ২০ মিনিটের মধ্যে ভোতা অস্ত্র দিয়ে গুরুতর জখম করে গলায় ফাঁস লাগিয়ে পাঁচ জনকে হত্যা করেছে। হত্যাকাণ্ডের পর থেকে তাসলিমা ও মোরশেদের মুঠোফোনে পাওয়া যাচ্ছে না।”
পুলিশ মামলাটি গ্রহণ করে প্রাথমিক তথ্য বিবরণীতে আসামির ঘরে অজ্ঞাতনামা আসামিরা উল্লেখ করেছে।
দণ্ডবিধির ৩০২/৩৪ ধারায় (পরিকল্পিতভাবে পরস্পরের যোগসাজশে খুন করার অপরাধ) দায়ের মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে সদর মডেল থানার এসআই হামিদুল ইসলামকে।