‘সচিবের বয়স কম, নারী মেম্বারদের রাতে কু প্রস্তাব দেয়’
চেয়ারম্যান-সচিবের পাল্টাপাল্টি অভিযোগ, কুচাই ইউনিয়ন পরিষদের কার্যক্রম ব্যাহত
ডেস্ক রিপোর্টঃ সিলেটের দক্ষিণ সুরমা উপজেলার কুচাই ইউনিয়ন পরিষদের সচিবের বিরুদ্ধে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ তুলেছেন এই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও কয়েকজন ইউপি সদস্য। সচিবের বিরুদ্ধে দক্ষিণ সুরমা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক বরাবরে লিখিত অভিযোগও করেছেন কুচাই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আবুল কালাম।
তবে ইউনিয়ন পরিষদের সচিব মোস্তাফিজুর রহমান অভিযোগ করেন, ইউপি চেয়ারম্যানের অনিয়ম-দুর্নীতি সহযেগীতার না করায় তার বিরুদ্ধে মিথ্যে অভিযোগ তোলা হচ্ছে। চেয়ারম্যান আবুল কালামের বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ এনে জেলা প্রশাসক বরাবরে তিনিও আবেদন করেছেন বলে জানান মোস্তাফিজ।
এদিকে, ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান, সদস্য ও ইউপি সচিবের পাল্টাপাল্টি অভিযোগের কারণে দূর্ভোগে পড়েছেন এই ইউনিয়নের বাসিন্দারা। দ্বন্দের কারণে গত ১১ জানুয়ারি থেকে চেয়ারম্যান ও ইউপি সদস্যরা ইউনিয়ন পরিষদে যাচ্ছেন না। সচিব মোস্তাফিজের বদলির পূর্ব পর্যন্ত ইউনিয়ন পরিষদে যাবেন না বলে জানিয়েছেন তারা। এরফলে ব্যাহত হচ্ছে এই ইউনিয়নের সেবা কার্যক্রম।
তবে সেবা ব্যাহতের অভিযোগ অস্বীকার করে কুচাই ইউনিয়ন চেয়ারম্যান আবুল কালাম বলেন, অফিসে না গেলেও আমরা বাসায় বসে সকল কর্মকান্ড চালাচ্ছি।
জানা যায়, গত ৫ জানুয়ারি ইউপি চেয়ারম্যান আবুল কালামের বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ তুলে জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগ করেন সচিব মোস্তাফিজ।
পরদিন ৬ জানুয়ারি সচিব মোস্তাফিজুর রহমানের বিরুদ্ধে দুর্নীতি অভিযোগ এনে তাকে অন্যত্র বদলির জন্য জেলা প্রশাসকের কাছে আবেদন করেন চেয়ারম্যান আবুল কালাম।
সচিবকে দ্রুততম সময়ের মধ্যে বদলি করার আশ্বাস জেলা প্রশাসক দিয়েছেন বলে জানান চেয়ারম্যান আবুল কালাম।
এই ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য আব্দুস শহীদ বলেন, সচিব মোস্তাফিজ বিভিন্ন সেবা প্রদানের কথা বলে ইউনিয়নের অনেকের কাছ থেকে অনৈতিকভাবে টাকা গ্রহণ করেন।
তিনি বলেন, এছাড়া ইউপি সদস্য (মেম্বার) ও নারী মেম্বারদের সাথেও দুর্ব্যবহার করেন সচিব। ফলে পরিষদের সকল সদস্যই তার উপর বিরক্ত। এই সচিবকে বদলি করার পূর্ব পর্যন্ত চেয়ারম্যান মেম্বারদের কেউ অফিসে যাবেন না।
এ ব্যাপারে কুচাই ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবুল কালাম এই প্রতিবেদককে বলেন, সচিব অনেকের কাছ থেকে টাকা নিয়ে পরিষদের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করেছে। মেম্বারদের সাথেও খারাপ ব্যবহার করে।
আবুল কালাম বলেন, সচিবের বয়স কম। বিয়ে শাদী করে নাই। পরিষদের অনেক নারী মেম্বারদের রাতে ফোন করে সে কু প্রস্তাব দেয়। ইউনিয়ন অফিসের নারী প্রহরীকেও সে ডিস্টার্ব করে।
তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করে কুচাই ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ের সচিব মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ইউপি চেয়ারম্যান আবুল কালাম অনেক প্রকল্পের টাকা আত্মসাত করে ফেলেছেন। নানা দুর্নীতি করেছেন তিনি। তাঁর এসব অনৈতিক কর্মকান্ডে সমর্থন না দেওয়ায় আমার বিরুদ্ধে মিথ্যে অভিযোগ তুলেছেন।
মোস্তাফিজ বলেন, সম্প্রতি ইউপি চেয়ারম্যান জোরপূর্বক আমার অফিসে তালা ঝুলিয়ে দেন। পরবর্তীতে জেলা প্রশাসকের নির্দেশে তালা খুলে দেন।
নিজে রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার দাবি করে মোস্তাফিজ বলেন, আমি ছাত্রলীগের রাজনীতির সাথে জড়িত ছিলাম। আর চেয়ারম্যান বিএনপি নেতা। তাই আমাকে তিনি সহ্য করতে পারছেন না।