জমি সংক্রান্ত বিষয় নয় – মেয়েকে বিয়ের প্রস্তাবও দেওয়া হয়নি
‘জেবুর যন্ত্রনায় অতিষ্ট কচপুরাই চৌধুরী পরিবার’
ডেস্ক রিপোর্টঃ ‘জেবু চৌধুরী মামলা করেছেন। অপপ্রচার চালিয়েছেন। এখন প্রতি রাতেই সশস্ত্র সন্ত্রাসী বাহিনী দিয়ে মহড়া দিচ্ছেন। তার যন্ত্রনায় অতিষ্ট হয়ে পড়েছে ওসমানীনগরের কচপুরাই গ্রামের বনেদি চৌধুরী পরিবার।’
বুধবার সিলেট জেলা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে এ কথা জানিয়েছেন চৌধুরী পরিবারের আরেক সন্তান রোকশানা বেগম চৌধুরী।
সাংবাদিক সম্মেলনে তিনি দাবি করেন, ‘মিজান এলাহী নামের এক ব্যক্তির ইন্ধনে গোটা চৌধুরী পরিবারের মান সম্মান নিয়ে খেলা করছেন জেবু চৌধুরী। জমি সংক্রান্ত বিষয় নয়। তার মেয়েকে বিয়ের প্রস্তাবও দেওয়া হয়নি। কেবলমাত্র ব্যক্তি আক্রোশের কারনেই জেবু চৌধুরী এমনটি করছেন।’
সাংবাদিক সম্মেলনে তিনি বলেন, জেবু বেগম সাংবাদিক সম্মেলনে নিজেকে তার পিতার একমাত্র সন্তান হিসেবে দাবি করেছেন-যা মিথ্যাচার করেছেন। আবার জেবু বেগমের মামলার আসামি আমার পিতা মিফতা চৌধুরী হচ্ছেন- সুন্দর বিবির সন্তান। মায়ের পক্ষের সৎ চাচাত ভাইকে জেবু বেগম চৌধুরী সাংবাদিক সম্মেলন করে ডাকাত হিসেবে অভিহিত করেছেন। কোন ভদ্র ঘরে সন্তান এমনটি করতে পারে তা কল্পনা করা যায় না। তবে, বাস্তব হচ্ছে জেবু বেগম চৌধুরী সেটি করেছেন।
তিনি বলেন, জেবু বেগমের নিজের সম্পত্তির বিনিয়ে টাকা খরচ করে ফুফা ও ফুফু তাকে লন্ডনী পাত্র উসমানপুর ইউনিয়নের কুতুবপুর গ্রামের মনির মিয়ার সঙ্গে বিয়ে দেন। পরপর ৪ সন্তানের মা হওয়ার পর মনির মিয়ার সঙ্গে আর ঘর করা হয়নি জেবু বেগমের। লন্ডনেই জেবু বেগমের ডিভোর্স হয়। এরপর জেবু বেগমের সঙ্গে বিয়ে হয় ফেঞ্চুগঞ্জের মল্লিকপুর গ্রামের দুর সম্পর্কের ভাইপো রবিউলের সঙ্গে। এ তরফাও জেবু বেগমের ৪ সন্তান রয়েছে। আমরা এখন শুনতে পাচ্ছি দ্বিতীয় স্বামীর সঙ্গেও জেবু বেগমের বনিবনা হচ্ছে না। পারিবারিক কারনে দ্বিতীয় স্বামীকেও হয়রানী করেছে এবং ঘটনাটি পুলিশ পর্যন্ত গড়িয়েছে। তবে, সবচেয়ে বড় প্রশ্ন- জেবু বেগমের স্বামী, সন্তান রয়েছে। কিন্তু তাদের লন্ডনে রেখে তিনি কার সঙ্গে দেশে এসেছেন, কোথায় বসবাস করছেন? তার অবস্থান সম্পর্কে পরিবারের কেউ অবগত নয়।
তিনি বলেন, জেবু বেগমের সম্পত্তি কচপুরাই গ্রামে পরিত্যক্ত অবস্থায় রয়েছে। কোনো স্থাপনা নেই সেখানে। আর আমার ভাইয়ের জন্য তার মেয়ের বিয়ে প্রস্তাব পাঠানোর বিষয়টিও ডাহা মিথ্যা। যেখানে জেবু বেগমের অত্যাচারে আমার পরিবার অতিষ্ট সেখানে বিয়ের প্রস্তাব দেওয়ার যৌক্তিতা নেই। জেবুর চরিত্র ও উগ্র মনোভাবের কারনে পরিবারের সঙ্গে দুরত্ব সৃষ্টি হয়। আর লুৎফা চৌধুরীর প্রতি নিরব সমর্থন রয়েছে দেশে থাকা স্বজন আমার পরিবারের সদস্যদের।
তিনি বলেন, জেবু বেগম চৌধুরী কবে দেশে এসেছেন সেটি আমার পরিবার কিংবা এলাকার কেউ জানেন না। কারন, তিনি দেশে এলেও নিজের বাড়ি কিংবা কোনো আত্মীয় স্বজনের বাড়ি যাননি। এরপর থানা থেকে খবর মিলে জেবু বেগমকে মারধোর ও লুটপাটের অভিযোগে থানায় মামলা হয়েছে। যে মামলায় আসামি হয়েছেন আমার পিতা ও চাচার পরিবারের সকল সদস্য। এমনকি মা, চাচি ও ভাবী, স্বামীর বাড়িতে থাকা আমার চাচাত বোনকেও আসামি করা হয়েছে। বনেদী ঘরে মহিলারা যেখানে সম্পূর্ন পর্দানশীল হয়ে রক্ষনশীল জীবন যাপন করেন সেখানে তারা মামলার আসামি হবেন সেটি আমরা কোনো দিনই কল্পনা করেনি। কিন্তু জেবু বেগম চৌধুরী দুটি পরিবারের সব সদস্যকেই আসামি করেছে। মামলার ঘটনাটি এলাকায় জানাজানি হওয়ার স্থানীয় গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গ হতবাক হয়েছেন। যে এলাকায় জেবু চৌধুরী কয়েক বছর ধরে দেখা যায়নি সেখানে তাকে মারধোর ও স্বর্ণ লুটপাটের ঘটনা কীভাবে ঘটল সেটিই হয়ে দাড়িয়েছে বড় প্রশ্ন। জেবু বেগম চৌধুরীর দুরভিসন্ধির অভিযোগ তোলে তিনি বলেন, জেবু বেগমের সঙ্গে এসে মিলিত হয়েছে দুর সম্পর্কের আরেক স্বজন বালাগঞ্জের আলোচিত মিজান এলাহী। মিজান এলাহী-ই হচ্ছে এখন জেবু চৌধুরী চালকদার। মিজান এলাহী খুবই চালাক লোক। লন্ডনী হলেও তার রয়েছে নিজস্ব ক্যাডার বাহিনী। জমি, জমা নিয়ে নিজ এলাকায় তার সঙ্গে বহু মানুষের বিরোধ রয়েছে। এ নিয়ে মামলার অন্ত নেই। মিজান এলাহী হচ্ছে আমাদের পাশের অংশের আরেক পরিবারের জামাই। তার শ্যালক আসাদ ও রুবেলের সঙ্গে আমার পিতা মিফতা চৌধুরী ও চাচাতো ভাই শহীদুল চৌধুরীর জমি সংক্রান্ত বিরোধ রয়েছে। শ্যালকদের পক্ষ নেওয়া মিজান এলাহীর সঙ্গে আমার পিতা ও চাচার পরিবারের বিরোধ পুরনো। আর মিজান এলাহী এখন আমারই গোষ্টির ফুফু জেবু বেগম চৌধুরীর সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপন করে মিথ্যা ঘটনা সাজিয়ে মামলা করিয়েছে। আর ওই মিথ্যা মামলায় সাক্ষী করা হয়েছে তারই দুই শ্যালক আসাদ ও রুবেলকে। তিনি আর বলেন, বেশ কয়েক বার আমার চাচাত ভাই ব্যবসায়ী শহীদুল চৌধুরীকে অস্ত্র ও মাদক দিয়ে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চালিয়েছে। আমাদের বাড়িতে দুই বার র্যাব পাঠিয়েছে। সাংবাদিক সম্মেলনে তিনি বলেন, জেবু চৌধুরী এক ইঞ্চি জমি বেদখল হয়নি। তার উপর কোনো হামলার ঘটনা ঘটেনি। আর তার মেয়েকে বিয়ের প্রস্তাব দেওয়া হয়নি। এছাড়া আমার পিতা কিংবা ভাইদের বিরুদ্ধে কোনো ডাকাতির মামলা হওয়া তো দুরের কথা, কখনো ফৌজদারী কোনো মামলা হয়নি। এদিকে, গত কয়েক দিন ধরে ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসী দ্বারা আমার পিতা ও চাচার বাড়ির আশপাশে মহড়া দেওয়া হচ্ছে। সাংবাদিক সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, এলাকার প্রবীন মুরব্বী মো. শফিউল আলম দুদু, মো. আকছিস মিয়া, হাফিজ মো. ইউনূস আলী, মো. মুমিন মিয়া. মো. ফুয়াদ মিয়া, মজনু মিয়া চৌধুরী, সুমন মিয়া, জহুর আলী ও টিটু মিয়া।