সিলেটের সেই ফজলুকে মামলা থেকে অব্যাহতি : আড়ালেই থেকে গেলেন মূল হিতৈষী

fazlu-miah-And-Alomgir-Kumkডেস্ক রিপোর্টঃ সিলেটে ২২ বছর বিনাদোষে কারাভোগের পর মুক্তি পাওয়া ফজলু মিয়া মামলা থেকেও অব্যাহতি পেয়েছেন। সিলেটের চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের বিচারক ফজলু মিয়াকে চলমান মামলা থেকে চূড়ান্তভাবে অব্যাহতি দিয়েছেন। ৫৪ ধারায় আটক হওয়ার পর কোনো আত্মীয়-স্বজনের সন্ধান না পাওয়ায় তিনি দীর্ঘ ২২ বছর সিলেট কারাগারে ছিলেন। পরিবারের নিকট আত্মীয়ের সঙ্গে ডিএনও টেস্টে মিল পাওয়ায় নবনিযুক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের বিচারক সাইফুজ্জামান হিরো বৃহস্পতিবার তাকে মামলার দায় হতে পরিবারের জিম্মায় অব্যাহতি দেন। ব্লাস্টের সিলেট বিভাগের প্রধান সমন্বয়ক অ্যাডভোকেট ইরফানুজ্জামান চৌধুরী জানিয়েছেন, জামিনে থাকা ফজলু মিয়াকে সঠিক আত্মীয়ের হাতে তুলে দিতে নিকট আত্মীয়ের ডিএনএ টেস্ট চেয়েছিলেন বিজ্ঞ আদালত। বুধবার ফজলুর নানা হাসমত উল্লাহ, মামা মফিজদ্দিন ও বোন হামিদা বেগমের ডিএনএ টেস্টের রিপোর্ট আদালতে পৌঁছে। বৃহস্পতিবার দুপুরে সিলেটের চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ফজলু মিয়াকে অব্যাহতি প্রদান করেন।
তবে এই ফজলু মিয়ার অব্যাহতিতে মূল হিতৈষী যে সিলেটের আলোচিত সেই কুমকুম মানু তা সকলের আড়ালে থেকে গেলেও ফাকি দিতে পারেনি সুরমা টাইমস’র অনুসন্ধানী চোখকে। অনুসন্ধানে জানা যায়, ২০১৫ সালের অক্টোবর মাসের ২৭ তারিখ সিলেট আওয়ামীলীগের এক কেন্দ্রীয় নেতার রোষানলে পড়ে কারাবরন করেন প্রয়াত চিত্রনায়ক সালমান শাহের মামা আলমগীর কুমকুম চৌধুরী যাকে সিলেটে একনামে কুমকুম মামু নামে সবাই চিনে।
এই কুমকুম মামু কারাগারে থাকাকালীন অবস্থায় জানতে পারেন ফজলু মিয়ার কথা। তখন তিনি ফজলু মিয়ার সাথে দেখা করে তার জীবনের করুন কাহিনী শুনে অত্যন্ত ব্যাতীত হন। প্রতিজ্ঞা করেন কারাগার থেকে বের হলেই ফজলু মিয়ার মুক্তির ব্যাপারে সর্বাত্মক চেষ্টা করবেন।
অল্পদিনের মধ্যেই কারামুক্তি লাভ করেন কুমকুম মামু। ভূলে যাননি ফজলু মিয়ার কথা। তিনি যোগাযোগ করেন ঢাকায় তার পরিচিত এক খ্যাতনামা সাংবাদিকের সাথে। ফজলু মিয়ার বিস্তারিত বর্ণনা করেন ওই সাংবাদিকের সাথে। তিনি ওই সাংবাদিককে অনুরোধ করে বলেন, টাকা খড়ি যা লাগে আমি দেব কিন্তু তুমি নিরিহ ফজলু মিয়ার মুক্তির ব্যাপারে আমাকে সাহায্য কর।
ঢাকার ওই সাংবাদিকও জনকল্যানে কুমকুম মামুর চেয়ে কোন অংশে কম যান না। ফজলু মিয়ার এমন করুন কাহিনী শুনে তিনি নিজেই খোজ নেন সিলেট কারাগারে। যোগাযোগ করেন ব্লাস্টের সাথে। আর এভাবেই ফজলু মিয়ার কথা রটে যায় সারা দেশে/বিশ্বে। বিভিন্ন সংগঠন, সংবাদমাধ্যম ও আপামর জনতা ফজলু মিয়ার পাশে দাঁড়ায়। বিনা বিচারে বন্দী ফজলু মিয়া ফিরে পান আরেক নতুন জীবন।