নারায়ণগঞ্জবাসীকে যানজট থেকে মুক্তি দিতে শামীম ওসমানের অনুকরণীয় উদ্যোগ
অসহনীয় যানজটে নাকাল নগরবাসীকে যানজট থেকে মুক্তি দিতে নিজেই মাঠে নেমেছেন আওয়ামীলীগের প্রভাবশালী নেতা ও সাংসদ একেএম শামীম ওসমান। নিজ দলের নেতাকর্মী ও বিএনসিসি সদস্যদের নিয়ে নিজেই রাস্তায় নেমে শহরের ট্রাফিক নিয়ন্ত্রনে কাজ করেছেন দিনভর। একই সাথে সাধারন মানুষের মাঝে মাদক, সন্ত্রাস, ভুমিদস্যুতা,ইভটিজিং ও জঙ্গীবাদের বিরুদ্ধে সচেতনতা সৃষ্টি করতে নিজেই বিলি করেছেন হাজার হাজার লিফলেট, সাটিয়েছেন পোস্টার। নগরীকে যানজটমুক্ত রাখতে আগামী ৩দিন এই ক্যাম্পেইনিং চলবে বলে জানা গেছে। এদিকে প্রভাবশালী এই এমপিকে রাস্তায় নেমে যানজট মুক্ত করতে দেখে সাধারন মানুষের মাঝে ব্যাপক সাড়া দেখা গেছে। দিনভর এনিয়ে ছিল আলোচনার ঝড়। অনেককেই বলতে শোনা গেছে, যে কাজটির দ্বায়িত্ব ছিল সিটি কর্পোরেশন ও ট্রাফিক বিভাগের ,স্ েকাজটি কি করে সুন্দরভাবে সম্পন্ন করা যায় তা শামীম ওসমান চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিলেন। আবার কেউ কেউ বলেছেন, শহরের যানজট নিরসন করার দ্বায়িত্ব সিটি কর্পোরেশনের নয় বলে মেয়র আইভী দাবী করে আসলেও তার উচিত ছিল এই দু:সহ যন্ত্রনা থেকে নগরবাসীকে মুক্তি দেয়া। তারা বলেন, শামীম ওসমানের এমন প্রশংসনীয় উদ্যোগের জন্য তাকে ধন্যবাদ দেয়া উচিত।
গতকাল নগরবাসীর অন্যতম প্রধান সমস্যা যানজট নিরসনে পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী দলের নেতাকর্মী ও সরকারী তোলারাম বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ, সরকারী মহিলা কলেজের বিএনসিসি সদস্যদের নিয়ে রাস্তায় নামেন শামীম ওসমান। মোট চারটি দলে বিভক্ত ৪টি টিম শহরের গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে অবস্থান নেয়। শহরের ব্যস্ততম চাষাড়া এলাকায় নিজেই অবস্থান নেন শামীম ওসমান। এসময় তিনি নিজেই চাষাড়া গোলচত্বর এলাকার আশপাশে যানবাহন ও রিকশা চালকদের দিক নির্দেশনা দিতে থাকেন। এক পর্যায়ে তিনি মাইকে যান বাহনের চালক ও যাত্রীদের উদ্দেশ্যে বিভিন্ন দিক নির্দেশনা দিতে থাকেন। ‘কিভাবে গাড়ি পার্কিং করা হবে, কোন গাড়ি কোন স্থানে দাঁড়াবে। রিকশা থাকা যাবে না। রাস্তার পাশে গাড়ি পার্কিং থাকবে না’ সেসব নিয়ে নির্দেশনামূলক বক্তব্য রাখেন শামীম ওসমান। হঠাৎ মাইকে শামীম ওসমানের এমন বক্তব্যে হকচকিয়ে যান অনেক গাড়ি চালক থেকে শুরু করে পথচারী ও বিভিন্ন দোকানে থাকা লোকজন।মাত্র ১৫মিনিটের মধ্যে পাল্টে যায় চিরচেনা চাষাড়া এলাকা। মার্কেটের নিচে ছিল না কোন রিকশার জট, অবৈধ গাড়ী পার্কিং কিংবা যত্রতত্র বাসের যাত্রী উঠানামানো।
এসময় শামীম ওসমান নগরবাসীর উদ্দেশ্যে বলতে থাকেন, পুরো শহরের ট্রাফিক নিয়ন্ত্রনের দ্বায়িত্বে আছেন মাত্র ৬জন ট্রাফিক সদস্য। তাই শুধু সরকার বা পুলিশের উপর নির্ভর না করে আগে নিজেদের পাল্টাতে হবে। তিনি বলেন, সিটি কর্পোরেশন জনগনের ট্যাক্স নিচ্ছে কিন্তু যানজট নিরসনে দ্বায়িত্ব এড়িয়ে যাবে এটা হতে পারে না। শহরের উপর নাসিকের প্লেটযুক্ত(লাইসেন্স) রিকশার সংখ্যা কত তা আমরা জানি না। আর এই রিকশাই হল যানজটের অন্যতম কারণ। শামীম ওসমান বলেন, আমরা চাই দুর্নীতিমুক্ত নারায়ণগঞ্জ। সেই সাথে মাদক, সন্ত্রাস, ভুমিদস্যুতা,ইভটিজিং ও জঙ্গীবাদমুক্ত নারায়ণগঞ্জ গড়তে আমরা বদ্ধ পরিকর। কিন্তু আপনাদের অংশ গ্রহন ও সহযোগীতা ছাড়া এই উদ্যোগ সফল করা অসম্ভব। কারণ, এই শহর আপনাদেরও। তিনি বলেন, বাংলা মায়ের প্রতিচ্ছবি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বপ্ন একটি সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়তে আপনাদের সহযোগীতা চাই। তিনি আরো বলেন, ‘আমরা তিনদিন শহরে থাকবো। ‘চাষাঢ়া মোড়, কালীবাজার মোড় , ২নং রেল গেট, ১ নং রেল গেট’ এ চারটি স্পটে আমরা শুধু ট্রাফিকদের কন্ট্রোল করবো। এ থেকে একটি অভিজ্ঞতা নিয়ে তিনদিন পর সেটা নিয়ে সংশিষ্ট ট্রাফিক পুলিশ, পুলিশ প্রশাসন, জেলা প্রশাসন ও সিটি করপোরেশনের সঙ্গে আলোচনা করে আমাদের অর্জিত অভিজ্ঞতা তাদেরকে দিব যাতে তারা ওই পথ অনুসরণ করলে শহরকে যানজটমুক্ত রাখা যায়।’
এদিকে শহরের অপর তিনটি স্পটেও বিএনসিসির সদস্যদের সাথে দ্বায়িত্ব পালন করেন মহানগর আওয়ামীলীগ ও সহযোগী সংগঠনের শীর্ষ পর্যায়ের নেতারা এবং পরিবহন শ্রমিক-মালিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।