তাহিরপুর সীমান্ত থেকে ২চোরাচালানীকে ধরে নিয়েগেছে বিএসএফ

তাহিরপুর প্রতিনিধি: সুনামগঞ্জের তাহিরপুর সীমান্ত দিয়ে প্রতিদিন সরকারের লক্ষলক্ষ টাকার রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে ওপেন পাচাঁর করা হচ্ছে চুনাপাথর,কয়লা,ঘোড়া ও মাদকদ্রব্য। এসবের বিনিময়ে দেশীপণ্য মাছ,হাঁস,মোরগ,শাক-সবজি,ভৈজ্যতেল,সিরামিকের থালা-বাসন,জগ,গ্লাস,মোবাইল সীম ও কার্ড ভারতে পাঠাচ্ছে চোরাচালানীরা। লাউড়গড় সীমান্তের ১২০৩নং পিলার সংলগ্ন যাদুকাটা নদী দিয়ে ভারত থেকে কয়লা,মাদক ও ঘোড়া পাচাঁর করার সময় ২চোরাচালানীকে ধরে নিয়ে গেছে ভারতীয় বিএসএফ। আটককৃত চোরাচালানীরা হলেন,উপজেলার বাদাঘাট ইউনিয়নের শাহিদাবাদ গ্রামের আনোয়ার হোসেন ও লাউড়গড় গ্রামের সোহাগ মিয়া।
স্থানীয়রা জানায়,প্রতিদিনের মতো গতকাল সোমবার ভোরে সীমান্তের লাউড়গড় বিজিবি ক্যাম্প সংলগ্ন যাদুকাটা নদী দিয়ে বিজিবি সোর্স আব্দুল গফ্ফার,নুরু মিয়া,নবীকুল ও জজ মিয়া ভারত থেকে কয়লা,মাদক ও ঘোড়া পাচাঁর করার সময় তাদের ২সহকারী চোরাচালানী সোহাগ মিয়া ও আনোয়ার হোসেনকে ধরে নিয়ে যায় বিএসএফ। এখনও পর্যন্ত তাদেরকে ফেরত দেওয়া হয়নি। এব্যাপারে লাউড়গড় বিজিবি ক্যাম্প কমান্ডার আব্দুল হাকিম জানান,আটককৃত ২চোরাচালানীদের ফেরত আনার জন্য চেষ্টা চলছে। এদিকে গত শনিবার ৯টায় উপজেলার উত্তর শ্রীপুর ইউনিয়নের টেকেরঘাট সীমান্তের রজনীলাইন গ্রামের ইয়াবা ও হেরুইন চোরাচালানী হেকমত আলী(২৭),তার সহযোগী কুতুব উদ্দিন(৩৫) ও মোহাম্মদ আলী(৪০)কে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। সীমান্ত চোরাচালান প্রতিরোধে পুলিশ চিহ্নিত মাদক চোরাচালানীদের গ্রেফতার করলেও চোরাচালান বন্ধের ব্যাপারে কোন ব্যবস্থা নিচ্ছেনা বিজিবি। এব্যাপারে বড়ছড়া ও চাঁরাগাঁও শুল্কস্টেশনের ব্যবসায়ীসহ এলাকাবাসী জানান,দেশের অর্থনৈতিক মেরুদন্ড ভেঙ্গে দিয়ে নিজেদের পকেট ভারী করার জন্য বিজিবি ও চোরাচালানীরা মিলেমিশে সীমান্তের রজনীলাইন,লাকমা,টেকেরঘাট,বড়ছড়া,বুরুঙ্গাছড়া, লালঘাট,বালিয়াঘাট,পাটলাই নদী,চাঁরাগাঁও,কলাগাঁও,জঙ্গলবাড়ি,চানপুর,গারোঘাট, বারেকটিলা,যাদুকাটা নদী,মুকশেদপুর, পুরান লাউড় ও লাউড়গড় এলাকা দিয়ে ওপেন চোরাচালান করছে। ভারত থেকে প্রতিবস্তা কয়লা পাচাঁরের জন্য ৮০টাকা,প্রতিট্রলি চুনাপাথর ১০০টাকা,নুড়ি পাথর ও মরাপাথর প্রতিট্রলি ৫০টাকা,১টি ঘোড়া ৩হাজার টাকা,ভারতীয় কাঠ ১টি থেকে ৬০টাকা,মদ,গাঁজা, হেরুইন,ইয়াবা ও নাসির উদ্দিন বিড়ির জন্য সাপ্তাহিক ২০হাজার হারে প্রতিটি বিজিবি ক্যাম্পের নামে চাঁদা উত্তোলন করা হচ্ছে। আর এসব চাঁদার টাকা উত্তোলনের জন্য প্রতিটি ক্যাম্পে সোর্স হিসেবে মৌখিকভাবে নিয়োগ করা হয়েছে চোরাচালান,চাঁদাবাজি ও মাদক পাচাঁর মামলার জেলখাটা আসামীদের। এসকল সোর্স নামধারী বিভিন্ন মামলার আসামীদেরকে দিয়ে কয়লা,চুনাপাথর ও মাদকদ্রব্য পাচাঁর করতে গিয়ে সীমান্তের লালঘাটে কয়লার গুহায় চাপা পড়ে ১জন,লাকমায় ৩জন,চাঁরাগাঁয়ে ২জন,যাদুকাটা নদীতে ডুবে ৫জন ও চানপুরে ২জনের মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া বিএসএফের হাতে আটক হয়ে জেল খেটেছে শতশত নিরীহ কয়লা ও পাথর শ্রমিক।
এব্যাপারে জানতে বিজিবির টেকেরঘাট কোম্পানীর কমান্ডার মহিউদ্দিনের সরকারী মোবাইল নাম্বারের কল করলে সাংবাদিক পরিচয় পেয়ে তিনি লাইন কেটে দেন। তাহিরপুর থানার ওসি মোহাম্মদ শহিদুল্লাহ বলেন,সীমান্ত চোরাচালান প্রতিরোধের দায়িত্ব মূলত বিজিবির,কিন্তু আইনশৃংখলা রক্ষার স্বার্থে আমরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিচ্ছি।
সুনামগঞ্জ ২৮ব্যাটালিয়নের বিজিবি অধিনায়ক গোলাম মহিউদ্দিন বলেন,সীমান্ত চোরাচালান প্রতিরোধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হবে।