সিলেটে জেঁকে বসেছে শীত দুর্ভোগে হত দরিদ্ররা
ডেস্ক রিপোর্টঃ জেঁকে বসেছে শীত। তীব্রতায় কাঁপছে পুরো সিলেট। গত কয়েক দিনে হাঁড় কাপানো শীতে কাবু হয়ে পড়েছেন এখানকার কয়েক লাখ দরিদ্র মানুষ। দিনের বেশির ভাগ সময় মিলছে না সূর্যের দেখা। ঘন কুয়াশায় ছেঁয়ে থাকছে চারিদিক। সবচেয়ে বেশি কষ্টে আছেন ছিন্নমূল ও নিম্ন আয়ের সাধারণ মানুষ। বিশেষ করে সরকারি ও বেসরকারিভাবে শীতবস্ত্র বিতরণ শুরু না হওয়ায় দূর্ভোগ বেড়েছে শীতার্ত হতদরিদ্রদের। তাদের যেন কষ্টের শেষ নেই। শীত বস্ত্র না থাকায় বিভিন্ন স্থানে আগুন জ্বালিয়ে কষ্ট নিবারণের চেষ্টা করছেন।
দক্ষিণ সুরমার রেলওয়ে ষ্টেশন, বাসটার্মিনাল ও নগরীর বিভিন্ন মার্কেটের বারান্দায় হত-দরিদ্র মানুষ গুলো কষ্টে সময় পার করছেন। ক্বীন ব্রীজ এলাকায় অনেকে বস্তা গায়ে দিয়ে শীত থেকে বাঁচার চেষ্টা করতে দেখা গেছে। বিশেষ করে সুরমা নদীর তীরবর্তী এলাকার বসবাসকারী দরিদ্র মানুষর একেবারে কাহিল। শীতবস্ত্র না থাকায় এদের অনেকেই এক কাপড়ে কাটাচ্ছেন দিনগুলো। প্রচন্ড শীতের কারণে দিনমজুররা কৃষি জমির কাজ করতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। গত কাল সুর্যেরও দেখা মিলেনি।
গতকাল শনিবার সকাল থেকেই ঘন কুয়াশা আচ্ছন্ন ছিল সিলেট। এদিকে এ বছর আগেভাগে শীত ঝেঁকে বসায় সিলেটজুড়ে গরম কাপড়ের কদর বেড়েছে। বিশেষ করে সীমান্ত এলাকার লোকজন রয়েছেন আরো বেশি কষ্টে। এসব এলাকায় শীত বস্ত্রের মারাত্মক সঙ্কট দেখা দিয়েছে। শীতে গরম কাপড়ের চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় দাম বেশী চাইছেন বিক্রেতারাও।
গতকাল সিলেটের রেজিস্ট্রারি মাঠ, হকার মার্কেট ও নগরীর বিভিন্ন ফুটপাতে সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে সিলেটে প্রচুর গরম কাপড়ের সমাগম ঘটেছে। তবে কাপড়ের দাম বেশী। এ অবস্থায় অনেকেই বাধ্য হয়ে বেশীদামে গরম কাপড় কিনছেন। বিভিন্ন অভিজাত বিপণী বিতান থেকে উচ্চবিত্ত ও মধ্যবিত্ত পরিবারের লোকজন শীতবস্ত্র কিনলেও সাধারন লোকজনকে কাপড় কিনতে হিমশিম খেতে হচ্ছে বলে অনেকেই জানান। গতকাল সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১৫.৪ সর্বোচ্চ তাপমাত্র ছিল ২০.৬ ডিগ্রী।
এছাড়া সিলেট ওসমানী মেডিকের কলেজ হাসপাতাল সূত্র জানায়, প্রচন্ড শীতের কারনে শীতজনিত রোগীর সংখ্যাও দিন দিন বাড়ছে। তবে শিশু রোগীর সংখ্যা বেশি। দণি সুরমার ভার্থখলা কবির কটন এন্ড ডেকোরস হোমের ব্যবস্থাপনা পরিচালক কবির আহমদ বলেন, সুরমা নদীর তীরবর্তী এলাকার বেশিরভাগ মানুষ হতদরিদ্র। তীব্র শীতে ও হিমেল হাওয়ায় ওইসব এলাকার অসহায় মানুষ ও কলোনী এলাকার মানুষ কষ্টে রয়েছেন। তিনি বলেন, আমার প্রতিষ্টানে প্রতিদিন প্রচুর লেপ-তোষক বিক্রি হচ্ছে, অর্ডারও আসছে প্রতিদিন, দোকানের কর্মচারীরা কাজ করে শেষ করতে পারছেনা। রাগীব-রাবেয়া মেডিবেল কলেজ হাসপাতালের শিশু রোগ বিশেষঞ্জ ডাঃ মোঃ রবিউল হাসান জানান, সিলেটে প্রচন্ড শীতের কারণে শিশু রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। প্রতিদিন অনেক শিশুকে শাসকষ্ট, ডায়রিয়া, নিমোনিয়াসহ নানান রোগে আক্রান্তহয়ে হাসপাতালে ভর্তি হতে হচ্ছে।
সিলেটের আবহাওয়াবিদ সাঈদ আহমদ চৌধুরী বলেন, বাতাসে জলীয় বাষ্পের পরিমাণ ৭৯% ছিল বিধায় অতিরিক্ত ঠান্ডা অনুভুত হয়। কুয়াশার কারনে সূর্যের দেখা মিলছেনা। আর কুয়াশা থাকায় শীতের প্রভাব একটু বেশী রয়েছে। আকাশে হালকা কুয়াশা জমে আছে। আরও ৩/৪ দিন এ অবস্থা থাকতে পারে এবং এর পরপরই আরো বেশি শীত পড়তে পারে বলে আশংকা করা যাচ্ছে।