২০ দলীয় জোট থেকে বেরিয়ে গেল ইসলামী ঐক্যজোট
ডেস্ক রিপোর্টঃ বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় ঐক্যজোট থেকে বেরিয়ে গেল ইসলামী ঐক্যজোট। এখন থেকে ২০ দলের সাথে তাদের আর কোনো সম্পর্ক নেই বলে জানিয়েছেন দলটির চেয়ারম্যান মাওলানা মো. আবদুল লতিফ নেজামী।
বৃহস্পতিবার দুপুরে ইঞ্জিনিয়ার ইনস্টিটিউশনে ত্রি-বার্ষিক জাতীয় কনভেনশনে সভাপতির বক্তব্যে তিনি এ ঘোষণা দেন। ২০ দলীয় জোটের শরিক দলগুলো মধ্যে অন্যতম একটি ইসলামী ঐক্যজোট। ১৯৯৮ সালে চারদলীয় জোট প্রতিষ্ঠার সময় থেকে মুফতি ফজলুল হক আমিনীর নেতৃত্বাধীন ইসলামী ঐক্যজোট বিএনপির সঙ্গে জোট বেঁধে ছিল।
মাওলানা মো. আবদুল লতিফ নেজামী বলেন, ‘ইসলামী ঐক্যজোট মনে করে, সকল ইসলামী দল, সংগঠন ওলামায়ে কেরাম ও ইসলাম মনস্ক লোকদের সমন্বয়ে একটি সংগঠিত, সমন্বিত ইসলামী শক্তি গড়ে তোলা অপরিহার্য। তাই সকল ইসলামী দল, সংগঠন ও ওলামায়ে কোরামকে এ কাজে এগিয়ে আসা উচিৎ। কেননা রাজনৈতিক ক্ষেত্রে ওলামায়ে কেরামের ঐক্যবদ্ধতার অনিবার্যতা দিন দিন ব্যাপক ও প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠেছে।’
নেজামী বলেন, ‘ইসলামী ঐক্যজোট স্বকীয়তা বজায় রেখে নিজেদের সাংগঠনিক তৎপড়তায় মনযোগী হবে। কেননা স্বকীয়তার অন্তঃপ্রেরণায় ইসলামী ঐক্যজোট স্বতন্ত্র। তাই এখন থেকে ইসলামী ঐক্য স্বকীয়তা বজায় রেখে জোটের কর্মতৎপড়তা চালিয়ে যাবে এবং ইসলামী ঐক্যজোট ঘোষণা করছে যে, ২০ দলের সাথে আমাদের আর কোনো সম্পর্ক নেই।’
কনভেশন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে আব্দুল লতিফ নেজামী বলেন, ‘জোট ছেড়ে দেয়ার জন্য কোনো চাপ ছিল না। বিএনপির বিরুদ্ধেও আমাদের কোনো অভিযোগ নেই। নিজেদের দলে বেশি সময় দেয়ার জন্যই জোট থেকে বের হওয়ায় সিদ্ধান্ত হয়েছে।’
উল্লেখ্য, আবদুল লতিফ নেজামীর নেতৃত্বাধীন ইসলামী ঐক্যজোট দীর্ঘদিন ধরে ২০ দলীয় জোট থেকে বেরিয়ে যাওয়ার গুঞ্জন চলছিল। গত ১৬ ডিসেম্বর বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতির সংবর্ধনায় দলটির চেয়ারম্যানসহ বেশ কয়েকজন শীর্ষ নেতার যোগদানের পর এই গুঞ্জন আরো জোরালো হয়। সর্বশেষ আজ তা বাস্তবে রূপ নিলো। এদিকে বিকেলে জরুরি প্রেস ব্রিফিং ডেকেছে বিএনপি। ধারণা করা হচ্ছে এ বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরতেই এ ব্রিফিং ডাকা হয়েছে।
২০১২ সালের ১৮ এপ্রিল নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে আন্দোলনে থাকা চারদলীয় জোট কলেবর বেড়ে ১৮ দলীয় জোট হয়। বিএনপি ছাড়া সে সময় জোটের বাকি শরিকরা ছিল জামায়াতে ইসলামী, ইসলামী ঐক্যজোট, খেলাফত মজলিশ, বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি (বিজেপি), লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি (এলডিপি), কল্যাণ পার্টি, জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি (জাগপা), ন্যাশনাল পিপলস পার্টি (এনপিপি), ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক পার্টি (এনডিপি), লেবার পার্টি, ইসলামিক পার্টি, বাংলাদেশ ন্যাপ, ন্যাপ ভাসানী, মুসলিম লীগ, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম, পিপলস লীগ ও ডেমোক্রেটিক লীগ। পরে পর্যায়ক্রমে জাতীয় পার্টি (কাজী জাফর) ও সাম্যবাদী দলের একাংশ এই জোটে যোগ দিলে তা ২০ দলীয় জোটে পরিণত হয়।