আওয়ামী লীগই ‘ডুবিয়েছে’ পাপলুকে!
ডেস্ক রিপোর্টঃ সিলেট জেলা আওয়ামী লীগ থেকে প্রথমে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছিলো স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা সৈয়দ মেজবাহ উদ্দিনকে। পরে কেন্দ্র থেকে দলীয় মনোনয়ন নিয়ে আসেন জাকারিয়া আহমদ পাপলু। সিলেটের গোলাপগঞ্জ পৌরসভায় নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করে পরাজিত হন সাবেক এই মেয়র। এবারের পৌরসভা নির্বাচনে সারাদেশে আওয়ামী লীগ প্রার্থীদের জয়জয়কারের মধ্যে গোলাপগঞ্জে পাপলুর অবস্থান ছিলো ৪র্থ। এই পৌরসভায় মেয়র নির্বাচিত হন আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী সিরাজুল জব্বার চৌধুরী।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, জাকারিয়া আহমদ পাপলুর এই ভরাডুবির পেছনে অন্যতম কারণ ছিলো স্থানীয় আওয়ামী লীগের অসহযোগিতা। স্থানীয় আওয়ামী লীগের অনেক নেতাই বিদ্রোহী প্রার্থী সিরাজুল জব্বারের পক্ষে অবস্থান নেন বলে জানা গেছে। এছাড়া জেলা ও কেন্দ্রীয় নেতাদের অনেকেও সমর্থন যুগিয়েছেন সিরাজুল জব্বারকে।
সিরাজুল জব্বার চৌধুরী স্থানীয় সাংসদ ও শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ বলয়ের নেতা হিসেবে পরিচিত। অপরদিকে জাকারিয়া আহমদ পাপলুর সাথে শিক্ষামন্ত্রীর দূরত্বের বিষয়টিও সিলেটের রাজনৈতিক মহলে আলোচিত। এসব কারণেও পাপলুর পরাজয় তরান্বিত হয়েছে বলে মনে করেন অনেকে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক গোলাপগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের এক নেতা বলেন, ‘দলীয় মনোনয়ন পেলেও পাপলুর পরাজয় চেয়েছেন আওয়ামী লীগ অনেক নেতাই। দলের প্রভাবশালী অনেক নেতা ছিলেন পাপলুর বিপক্ষে। সিরাজুল জব্বারের পক্ষেই কাজ করেছেন তাঁরা।’ তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগই ডুবিয়েছে পাপলুকে।’
সিলেটের অন্য পৌরসভার বিদ্রোহী প্রার্থীদের আওয়ামী লীগ দল থেকে বহিষ্কার করলেও গোলাপগঞ্জের ব্যাপারে ছিলো উদাসীন। তবে জাকারিয়া আহমদ পাপলুর অভিযোগ, কেন্দ্র থেকে সিরাজুল জব্বারকে বহিষ্কার করা হলেও সিলেট জেলা আওয়ামী লীগ তা চেপে যায়।
এদিকে, নির্বাচনের আগে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মিসবাহ উদ্দিন সিরাজসহ জেলা আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতারা সিলেটের অন্য পৌরসভায় নিজদলীয় প্রার্থীদের পক্ষে প্রচারণা চালালেও গোলাপগঞ্জে কেন্দ্রীয় ও জেলা পর্যায়ের শীর্ষ নেতাদের প্রচারণা চালাতে দেখা যায়নি। অন্যান্য পৌরসভা তাঁরা চষে বেড়ালেও গোলাপগঞ্জের ব্যাপারে ছিলেন নীরব। অনেকে গোপনে বিদ্রোহী প্রার্থীর পক্ষে কাজ করেছেন বলেও অভিযোগ আছে।
দীর্ঘকাল মেয়র থাকাকালে বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের কারণে জাকারিয়া আহমদ পাপলুর উপর রুষ্ট ছিলেন স্থানীয় সাংসদসহ সিলেট আওয়ামী লীগের অনেক নেতরাই। উপজেলা আওয়ামী লীগের একটি বৃহৎ অংশকেও নিজের পক্ষে নিয়ে যেতে সক্ষম হন সিরাজুল জব্বার। দলের এই অসহযোগিতায় আগেরবারের বিপুল ভোটে বিজয়ী মেয়রের এবার ঠাঁই হয় চতুর্থ স্থানে।
জাকারিয়া আহমদ পাপলুরও অভিযোগ, দলের অনেক শীর্ষ নেতাই আড়ালে তাঁর বিপক্ষে ও সিরাজুল জব্বারের পক্ষে কাজ করেন।
তবে এমন অভিযোগ অস্বীকার করে সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি লুৎফুর রহমান বলেন, প্রথমে তৃণমূল থেকে অন্য একজনকে দলীয় সমর্থন দেওয়া হয়েছিলো। পরে কেন্দ্র থেকে জাকারিয়া আহমদ পাপলুকে মনোনয়ন দেওয়া হয়। এসব কারণে কিছুটা সমন্বয়হীনতা ছিলো।