বেসরকারিখাতে ছেড়ে দেওয়া হচ্ছে সিলেটের ফুটবল একাডেমি
স্পোর্টস ডেস্কঃ সিলেটে অবস্থিত বাংলাদেশ ফুটবল একাডেমির দায়িত্ব নিচ্ছে সাইফ পাওয়ার সমিট। শনিবার সিলেটের খাদিমে অবস্থিত এই ফুটবল একাডেমি পরিদর্শনে এসে এমন তথ্য জানান বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে) এর সভাপতি কাজী সালাউদ্দিন।
আর সাইফ পাওয়ার টেকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক তরফদার রহুল আমিন জানিয়েছেন, আগামী ২০ বছরের জন্য এই একাডেমির দায়িত্ব নিতে চান তারা।
২০০৮ সালে প্রায় ২শ’ কোটি টাকা ব্যয়ে সিলেটের খাদিমে প্রতিষ্ঠা করা হয় বাংলাদেশ ক্রীড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। দেশের প্রথম ফুটবল একাডেমি গড়ে তোলার জন্য এই প্রতিষ্ঠান বাফুফেকে হস্তান্তর করে ক্রীড়া পরিষদ। দীর্ঘদিন অযত্মে পড়ে থাকার পর ২০১৪ সালে ফিফা’র ৪ লাখ ডলারের অনুদানে ৪০ জন ক্ষুদে শিক্ষার্থী নিয়ে চালু হয় বাংলাদেশ ফুটবল একাডেমির কার্যক্রম।
গত বছর থেকে সেনাবাহিনীর আবাসন হিসেবে ব্যবহৃত হওয়ায় বাধাগস্ত হয় একাডেমির কার্যক্রম।
এ অবস্থায় সাইফ পাওয়ার টেককে ফুটবল একাডেমি তত্ত্বাবধানের দায়িত্ব দিচ্ছে বাফুফে। শনিবার সাইফ পাওয়ার টেকের ব্যবস্থাপনা পরিচালককে নিয়ে একাডেমি পরিদর্শনে আসেন বাফুফে সভাপতি। পরিদর্শনকালে ফুটবল একাডেমির অব্যবস্থাপনা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে কাজী সালাউদ্দিন।
পরিদর্শন শেষে কাজী সালাউদ্দিন বলেন, আমরা গত বছর যেভাবে এই একাডেমিকে রেখে গিয়েছিলাম এখন সে অবস্থায় নেই। কিছুটা অব্যবস্থপনা রয়েছে। তবে সেনাবাহিনী কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, দ্রুততম সময়ের মধ্যেই তারা এই একাডেমি ছেড়ে দেবেন।
কাজী সালাউদ্দিন বলেন, সাইফ পাওয়ার টেক এটি ব্যবস্থাপনা করবে। তারা অর্থায়ন করবে। আর সকল সহায়তা দেবে বাফুফে।
তিনি জানান, বেসরকারী উদ্যোক্তা প্রতিষ্ঠান বিদেশী কোচ এনে এখানে আন্তর্জাতিকমানের একাডেমি গড়ে তুলবে। এক থেকে দেড় মাসের মধ্যে এই উন্নয়ন কাজ শুরু হবে। মার্চ থেকে এপ্রিলের মধ্যে আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত করে এই একাডেমির কার্যক্রম শুরু হবে।
ফিফা প্রদত্ত ৪ লাখ ডলার এই একাডেমির অবকাঠামোগত উন্নয়নে ব্যয় করা হয়েছে বলে জানান সালাউদ্দিন।
সাইফ পাওয়ার টেক’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক তরফদার রুহুল আমিন বলেন, এই একাডেমিতে অবকাঠামোগত সকল সুবিধাই রয়েছে। তবে ব্যবস্থাপনায় কিছু ত্রুটি ছিলো। ভালো ভাবে পরিচালনা করা সম্ভব হলে একে আন্তর্জাতিকমানে উন্নীত করা সম্ভব।
তিনি বলেন, এক মাসের মধ্যে আমরা একটা টিম পাঠাবো। কী কী উন্নয়ন করতে হবে তারা ঠিক করবে। উন্নয়ন কাজ শেষ করতে ৩ মাসের মতো সময় লাগবে। এপ্রিল থেকে ৮ থেকে ৯ বছর বয়সী ১৪০ জন শিক্ষার্থী নিয়ে এই একাডেমির কার্যক্রম শুরু করা হবে। তার আগে ইউরোপ ও ল্যাটিন আমেরিকা থেকে কোচ নিয়ে আসা হবে।
রুহুল আমিন বলেন, বাফুফের সাথে চুক্তি এখনো চুড়ান্ত হয়নি। ঢাকায় গিয়েই আমরা চুক্তি চুড়ান্ত করবো। তবে আমরা ২০ বছরের জন্য এই একাডেমির দায়িত্ব নিতে চাই। কারণ প্রথম ১০ বছর আমাদের বিনিয়োগ করতে হবে। ১০ বছর সুফল পাওয়া শুরু হবে। একাডেমির উন্নয়নে প্রতি বছর ৩ থেকে ৫ কোটি টাকা ব্যয় হবে বলে জানান তিনি।
ফুটবল একাডেমির উন্নয়নে বেসরকারি উদ্যোক্তাদের এগিয়ে আসাকে স্বাগত জানিয়েছেন স্থানীয় ক্রীড়া সংগঠকরা। তবে এটাকে ব্যবসা হিসেবে না নিয়ে ফুটবলের উন্নয়নের স্বার্থে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন সিলেট জেলা ক্রীড়া সংস্থার সভাপতি মাহিউদ্দিন সেলিম। ফুটবলের উন্নয়নে দীর্ঘ মেয়াদী পরিকল্পনার অংশ হিসাবে বাফুফের এই সিদ্ধান্ত দেশের ফুটবলে ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে এমন প্রত্যাশা তাঁর।
শনিবার দুপুরে ফুটবল একাডেমি পরিদর্শনকালে বাফুফের সহ-সভাপতি বাদল রায়সহ বাফুরে উর্ধতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।