কানাইঘাট পৌরসভায় আওয়ামী লীগ প্রার্থীর বিজয় ছিনিয়ে নিয়েছে বিএনপি-জামায়াত?

জেলা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে ভোটডাকাতি ও ব্যালট ছিনতাইয়ের অভিযোগ

14384সদ্যসমাপ্ত সিলেটের কানাইঘাট পৌরসভার নির্বাচনী ফলাফল প্রত্যাখ্যান করেছেন আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী বর্তমান মেয়র লুৎফুর রহমান। নির্বাচনী ফলাফল স্থগিত করে এলাকার দুটি কেন্দ্রে পুনঃভোট গ্রহনের দাবি জানিয়েছেন তিনি । এর আগে তিনি স্থানীয় রিটানীং অফিসার বরাবরেও এ আবেদন করেছেন । এখন নির্বচন কমিশন অথিরিীটিতে আপীল করবেন বলে জানিয়েছেন। মেয়র লুৎফুর রহমান শনিবার সিলেট প্রেসকাবে জনাকীর্ন সংবাদ সম্মেলনে ঘোষিত এ নির্বাচনী ফলাফল প্রত্যাখ্যান করেন।
সংবাদ সম্মেলনে দেয়া বক্তব্যে মেয়র লুৎফুর রহমান অভিযোগ করেন, সরকার দল আওয়ামী লীগ প্রার্থীর নৌকা মার্কার নিশ্চিত বিজয়কে ভোট ডাকাতি ব্যালট ছিনতাই ও সন্ত্রাসী তান্ডবের মাধ্যমে হরন করে করা হয়েছে। সরকার বিরোধী বিএনপি-জামায়াত জোট আওয়ামী লীগের নিশ্চিত বিজয়কে ছিনিয়ে নিয়েছে। তিনি জানান, নির্বাচনের দিন বিভিন্ন ভোট কেন্দ্রে আওয়ামী প্রার্থীর বিজয় সুনিশ্চিত দেখে সন্ত্রাসের পথ বেছে নেয় সরকারবিরোধী বিএনপি-জামায়াত জোট। আওয়ামী লীগের ভোটব্যংক নামে খ্যাত দুটি ভোট কেন্দ্র জবরদখল করে নেয় তারা। বিএনপি-জামায়াতের সশস্ত্র ক্যাডাররা পৌর এলাকার দূর্লভপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় ও রামপুর পৌর প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্র দুটি দখলে নিয়ে অস্ত্র ও মুত্যুর ভয় দেখিয়ে ভোটারদের ধাওয়া করে। ভীতিকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করায় দূর্লভপুর ও রামপুর এ দুটি কেন্দ্রের প্রায় একহাজার ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। যাদের সিহংভাগই ছিলেন আওয়ামী লীগ প্রার্থীর নৌকা প্রতীকের ভোটার।
নির্বচনের দিন সরকার বিরোধী বিএনপি জামায়াত জোটের ত্রাস সম্পর্কে তিনি আরো জানান, ওইদিন দুপুরেই তারা আওয়ামী ভোটারদের তিনটি ভোটকেন্দ্র দখলের পায়তারা করলে অনলাইন গনমাধ্যমে তাৎক্ষনিক এ খবর ছড়িয়ে পড়ে। তা সত্বেও নিরাপত্তায় নিয়োজিতরা কেন্দ্রগুলোর নিরাপত্তা জোরদার করেন নি। সংশ্লিষ্টদের কর্তব্যে অবহেলার সুযোগে বেলা ২টায় প্রথমে পৌর এলাকার দূর্লভপুর ভোটকেন্দ্র দখল করে নেয় বিএনপি-জামায়াত জোট। ভোট দিতে আসা লোকজনদের ধাওয়া করে তাড়িয়ে দেয় সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা। আর এ কারনে দুই ঘন্টা এ কেন্দ্রে ভোট গ্রহন বন্ধ থাকে। পরে ভীত-সন্ত্রস্থ ভেটাররা আর ভোট দিতে আসতে পারেন নি। ফলে ওই কেন্দ্রের ৬শ’ পুরুষ ওনারী ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। একই সময়ে বিএনপি-জামায়াত জোট এলাকার রামপুর পৌরপ্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্র দখল করে তিনটি ব্যালট বহি ছিনিয়ে নেয়,যা’ আজো উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। রামপুর কেন্দ্র দখলে নিয়ে সন্ত্রাসীূরা ভোট ডাকাতি ও জাল ভোটের মহোৎসব পালন করে। রামপুর কেন্দ্রে জাল ভোট দিতে গিয়ে বহিরাগত দুই মহিলা গ্রেফতার হয় এবং তাদের প্রত্যেককে ৫শ’ টাকা করে অর্থদন্ডে দন্ডিত করা হয়। ছিনতাই হওয়া ব্যলটবহি উদ্ধার না হওয়ায় কেন্দ্রের প্রিসাইডিং অফিসার বাদী হয়ে মামরাও করেন। মেয়র লুৎফুর রহমানের দাবি, ছিনতাই হওয়া ব্যালটে নারিকেল গাছে প্রতীকে সীল মেরে তা ব্যলট বাক্সে ডুকিয়ে দেয়া হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে মেয়র লুৎফুর রহমানের দাবি, নির্বাচনে যেখানে আওয়ামী লীগ প্রার্থীকে মাত্র ১৭৮ ভোটের ব্যবধানে পরাজিত বলে ঘোষনা করা হয়েছে, সেখানে এই দুই কেন্দ্রের এক হাজার লোক তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারলে আওয়ামী প্রার্থীর বিজয় ছিল একেবারে সুনিশ্চিত। মেয়র লুফুর রহমান বেসরকারীভাবে বিজয়ী ঘোষিত মেয়র প্রার্থী নিজাম উদ্দিন আল মিজানকে আওয়ামী লীগের ‘বিদ্রোহী প্রার্থী’ বলার তীব্র বিরোধীতা করে বলেন, নিজাম উদ্দিন আল মিজান আওয়ামী লীগের কেউ নন। নিজাম বিএনপি-জামায়া জোটের দোসর হিসেবে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছিলেন। এ জন্য আওয়ামী লীগ তাকে নির্বাচনের অনেক আগেই বহিস্কার করে দেয়। বহিস্কৃত ব্যক্তিকে আওয়ামী দলের ‘বিদ্রোহী প্রার্থী’ বলে অভিহিত করার কোন যুক্তিকতা নেই বলে জানান তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক মোস্তাক আহমদ পলাশ, কানাইঘাট পৌর আওয়ামী লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক জামার উদ্দিন,সিলেট জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডের সিনিয়র সদস্য সুবেদার আফতাব উদ্দিন,কানাইঘাট উপজেলা আওয়ামী লীগ নেতা মুছব্বির আলী চাছাই, কানাইঘাট পৌর আওয়ামী লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক সাহেদ আহমদ, জেলা যুবলীগের আব্দুল হাকিম শামীম, যুবলীগ নেতা মীর আব্দুল্লাহ, আওয়ামীলীগ নেতা আব্দুর রহিম, নুরুল হক,মাহবুবুর রহমান, যুবলীগের এনামুল হক প্রমূখ আওয়ামী লীগ ও যুবলীগের দুই শতাধিক নেতা কর্মী।