১৪ ডিসেম্বর নিহত বুদ্ধিজীবীরা শহীদ হন কীভাবে : গয়েশ্বর
ডেস্ক রিপোর্টঃ মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের সংখ্যা নিয়ে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার বক্তব্যের জেরে উত্তপ্ত আগুনে আরো ঘি ঢাললেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়। তিনি এবার একাত্তরে ১৪ ডিসেম্বর নিহত বুদ্ধিজীবীদের শহীদ হওয়া নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন।
শহীদ বুদ্ধিজীবী প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘২৫ মার্চ যেসব সাধারণ মানুষ নিহত হয়েছে তারা পাকিস্তানিদের হামলার বিষয়ে অজ্ঞাত ছিল। কিন্তু ১৪ ডিসেম্বর যেসব বুদ্ধিজীবী নিহত হয়েছে, তারা পাকিস্তানিদের হামলা ও বরবরতা সম্পর্কে জানতো। এমনকি শেষদিন পর্যন্ত তারা পাকিস্তান সরকারের অধীনে চাকরি করেছেন, অফিসে গিয়েছেন এবং নিয়মিত বেতন নিয়েছেন। তাহলে তারা শহীদ হন কীভাবে?’
শুক্রবার সন্ধ্যায় জাতীয় প্রেসক্লাবে ‘স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ও রিজভী আহমেদ’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় গয়েশ্বর চন্দ্র রায় এ কথা বলেন। আলোচনা সভার আয়োজন করে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ন্যাশনালিস্ট এক্স স্টুডেন্ট অ্যাসোসিয়েশন (রোনেসা)।
বুদ্ধিজীবীদের শ্রদ্ধা জানাতে ফুল দেয়া নির্বোধের কাজ বলেও মনে করেন বিএনপির এ নেতা। বললেন, ‘তারা নির্বোধের মতো মারা গেলো, আর আমাদের মতো নির্বোধেরা শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসে ফুল দেয়। আবার না গেলে নাকি পাপ হয়।’
মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের সংখ্যা নিয়ে বিএনপি চেয়ারপারসনের বক্তব্যের যুক্তিখণ্ডন করে গয়েশ্বর চন্দ্র বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের সংখ্যা নিয়ে অফিসিয়াল কোনো রেকর্ড নাই। শেখ মুজিবের একটি সাক্ষাৎকারের মাধ্যমে শহীদের সংখ্যা ত্রিশ লক্ষ প্রমাণিত হয় না। এর সংখ্যা বেশি বা কম হতে পারে।’
গয়েশ্বর চন্দ্র বলেন, ‘বেগম খালেদা জিয়া বলেছেন- শহীদের সংখ্যা নিয়ে বিতর্ক আছে। তবে তিনি বলেননি- শহীদদের সংখ্যা ৩০ লক্ষ থেকে কম বা বেশি। যেহেতু, মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের সংখ্যা নিয়ে অফিসিয়াল কোনো রেকর্ড নাই, তাই এর জন্য একটি গণজরিপ দরকার।’ তিনি মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়কে জরিপ করে শহীদদের সঠিক সংখ্যা জানানোর আহ্বান জানান।
একই অনুষ্ঠানে বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আহমেদ বলেন, ‘আওয়ামী শাসক দল যা ভাববে তারা ব্যতিক্রম কেউ ভাবলেই ‘ব্লাসফেমি’ কথা উঠে। যেসব বিষয়ে বিতর্ক রয়েছে, তা নিয়ে কেউ কথা বললেই বলা হয় জনগণকে বিভ্রান্ত করা হচ্ছে।’
আয়োজক সংগঠনের সভাপতি অধ্যক্ষ বাহার উদ্দিন বাহারের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরো বক্তব্য দেন- সাবেক সংসদ সদস্য সৈয়দা আশিফা আশরাফি পাপিয়া, সংগঠনের সহ-দপ্তর সম্পাদক সাইফুল ইসলাম টিটু, সাবেক ছাত্রনেতা অ্যাডভোকেট নূরুজ্জামান তপন প্রমুখ।