স্বপ্নে দেখা ধর্ষক ২৮ বছর কারাগারে
ডেস্ক রিপোর্টঃ যুক্তরাষ্ট্রের এক নারী স্বপ্নে দেখলেন যে এক লোক তাঁকে ধর্ষণ করেছেন। এরপর তিনি পুলিশকে জানালেন এবং ওই লোককে পুলিশ ধরে নিয়ে আদালতে সামনে হাজির করল। আদালতে তাঁকে ৪৮ বছরের কারাদণ্ড দিয়ে দিলেন। ঘটনাটি ১৯৮৮ সালের। এরই মধ্যে জীবনের ২৮ বছর কারাগারে কাটিয়ে দিয়েছেন হতভাগা লোকটি।
বার্তা সংস্থা এপি জানায়, লোকটির নাম ক্ল্যারেন্স মোসেস-এল। প্রাথমিক অবস্থায় পুলিশ ওই নারীকে জিজ্ঞাসা করলে তিনি আসল আসামির নাম বলেছিলেন। কিন্তু ধর্ষণের একদিনেরও বেশি সময় পর ওই নারী পুলিশকে বলেন, তিনি স্বপ্নে দেখেছেন মোসেস-এল তাঁকে ধর্ষণ করেছেন।
মোসেস-এল দীর্ঘদিন ধরে নিজেকে নিষ্পাপ দাবি করলেও তাঁর কথা কানে তোলেনি পুলিশ বা আদালত। এমনকি ধর্ষণের পর ডিএনএর প্রমাণও পুলিশ ছুড়ে ফেলে দেয়।
সর্বশেষ ২০১৩ সালের ডিসেম্বরে এল সি জ্যাকসন নামের এক লোক ধর্ষণের কথা স্বীকার করে কারাগারে চিঠি লিখলে আসল ঘটনা বেরিয়ে আসে। চিঠিতে বলা হয়, তিনি বিশ্বাসই করতে পারছেন যে মোসেস-এল ধর্ষণে অভিযুক্ত হয়েছেন। কারণ একই সময় তিনি ওই নারীর সঙ্গে যৌনকর্ম করেছেন।
যুক্তরাষ্ট্রের কলোরাডো অঙ্গরাজ্যের রাজধানীর ডেনভারের বিচারক মোসেস-এলকে এ শাস্তির রায় দেন। আদালতকে ওই নারী বলেছিলেন, পানাহার শেষে বাড়ি ফেরার পথে তিনি ধর্ষণ ও হামলার শিকার হয়েছেন।
পুলিশ শরীরের দাগ ও জামাকাপড়ের প্রমাণ ছুড়ে ফেলে দিয়েছিল। যদিও বিচারক এগুলো সংরক্ষণ করতে বলেছিলেন, যাতে পরীক্ষা করে বোঝা যায় মোসেস-এল নিষ্পাপ নাকি দোষী।
মোসেস-এলের কাছে লেখা ওই চিঠিতে এলসি জ্যাকসন বলেন, ‘আমি আপনাকে কী বলব আমার জানা নেই। অন্ধকারে কী হয়েছিল চলুন তা আলোয় নিয়ে আসি।’
চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে গত জুলাইয়ে শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। এতে সাক্ষ্য দেওয়ার সময় জ্যাকসন বলেন, যৌনকর্মের সময় তিনি রেগে যান এবং ওই নারীর মুখে আঘাত করেন। ঘটনার বর্ণনা দিয়ে ওই নারী পুলিশকে বলেছিলেন, তিনি ঘুমে শুয়ে পড়েছিলেন এবং এ সময় একটি লোক তাঁর ঘাড়ে হাত দেন এবং তাঁকে ধর্ষণ করেন।
জ্যাকসন এই মামলায় অভিযুক্ত হননি। তবে ১৯৯২ সালে এক মা ও তাঁর মেয়েকে ধর্ষণে দোষী সাব্যস্ত হন তিনি। আগের ঘটনাটি যেখানে ঘটেছে, সেখান থেকে দেড় মাইল দূরে মা-মেয়ের এই ঘটনা।
বিচারকরা মোসেস-এলকে মুক্তি দিয়ে দেবেন বলে আশা করা হচ্ছে। নতুন করে বিচার শুরু করার আদেশ দিয়ে ডেনভার অঞ্চলের বিচারক কানডেইস গেরডেস বলেন, জ্যাকসনের রক্তের গ্রুপের সঙ্গে ধর্ষণের শিকার নারীর শরীরে পাওয়া রক্তের গ্রুপ মিলে গেছে।
আইনজীবী গেইল জনসন বলেন, ‘তিনি (ক্ল্যারেন্স মোসেস-এল) খুব উল্লসিত। তিনি খুব খুশি যে, তিনি শেষ পর্যন্ত এ মামলায় ন্যায়বিচার পাচ্ছেন।’ কলোরাডোর দক্ষিণ-পূর্বে বেন্ট কাউন্টি কারেকশনাল ফ্যাসিলিটিতে রাখা হয়েছে মোসেস-এলকে।