ভিক্ষা নয়, কর্মসংস্থানের মাধ্যমে বাঁচার অধিকারের দাবি

IMG_6459নিরাপত্তা নিশ্চিতের পাশাপাশি সরকারি-বেসরকারি উদ্যোগে কর্মসংস্থান সৃষ্টির পাশাপাশি প্রতিবন্ধীদের জন্য বিভিন্ন উদ্যোগ সমন্বয়ের মাধ্যমে বাস্তবায়নের দাবি জানান মানববন্ধন থেকে বক্তারা।

‘ভিক্ষা নয়, কর্মসংস্থানের মাধ্যমে বাঁচার অধিকারের দাবি’ নিয়ে শনিবার (১৯ ডিসেম্বর) সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে আয়োজিত মানববন্ধনে অংশ নেন শতাধিক প্রতিবন্ধী ব্যক্তি।

উক্ত মানববন্ধনের প্রধান অতিথি আলোকিত প্রতিবন্ধী সমিতি উপদেষ্টা ও বাংলাদেশ অনলাইন অ্যাক্টিভিষ্ট ফোরাম (বোয়াফ) সভাপতি কবীর চৌধুরী তন্ময় বলেন, প্রতিবন্ধীরাও মানুষ। পরিবার, সমাজ, রাষ্ট্র তথা জাতিসংঘ সনদ অধিকার রয়েছে প্রতিবন্ধীদের। কিন্তু বাস্তবতার নীরিখে আমরা সে অধিকার কতটুকু নিশ্চিত করতে পেরেছি, সরকারের প্রয়োজনীয় গ্রহণ করা উদ্যোগের পরিপ্রেক্ষিতে তাঁদের মর্যাদা আদৌ নিশ্চিত হয়েছে কি-না তা খতিয়ে দেখা একান্ত প্রয়োজন।

তিঁনি আরও বলেন, বাংলাদেশ সরকার ২০১৩ সালে প্রতিবন্ধীদের অধিকার প্রতিষ্ঠা ও সুরক্ষা আইন প্রণয়ন করেছে। প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচিতে অন্তর্ভুক্ত করা হলেও প্রতিবন্ধী শিশু নারী আজও ধর্ষণের শিকার হচ্ছে। প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের ভাতা এবং পরীক্ষায় অতিরিক্ত সময় প্রদানের ব্যবস্থা করেছে। প্রতিবন্ধীদের যাতায়াতের জন্য পরিবহনে আসন বরাদ্দের ব্যবস্থা করা হলেও বিভিন্ন সময়ে প্রতিবন্ধীদের হয়রানীর শিকার দেখা যায়। সরকারি হাসপাতালগুলোতে প্রতিবন্ধীদের চিকিৎসা প্রদানের জন্য বিশেষ ইউনিট খোলা হলেও স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত হচ্ছে না। ইউনিয়ন, উপজেলা, পৌরসভা ও সিটি কর্পোরেশনগুলোতে প্রতিবন্ধী ব্যক্তির সুরক্ষা বিষয়ক কমিটি গঠনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এসব উদ্যোগ অবশ্যই প্রশংসনীয়। কিন্তু প্রয়োজনীয় সমন্বয়ের অভাবে এসব ভালো উদ্যোগ ঠিকমতো বাস্তবায়িত হচ্ছে না বলে প্রতীয়মাণ।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিঁনি বলেন, আমরা অনেকেই প্রতিবন্ধী ব্যক্তিকে পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্রের বোঝা মনে করি। অথচ সব মানুষের মতোই প্রত্যেক প্রতিবন্ধী ব্যক্তির মধ্যে কোনো না কোনো প্রতিভা লুকিয়ে আছে। সঠিক পরিচর্যা ও কর্মপরিকল্পনা, কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারলে প্রতিবন্ধীরাও তাঁদের লুকায়িত প্রতিভার বিকাশ ঘটাতে সক্ষম।

বাংলাদেশে প্রায় ২ কোটিরও বেশী প্রতিবন্ধী বিভিন্ন ভাবে হয়রানী ও ভিক্ষাপ্রথার মতন অপসংস্কৃতির শিকার হচ্ছে। বিশাল এই জনগোষ্ঠি প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের পারিবারিক, সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা নিশ্চিত করার পাশাপাশি সরকারী ও বেসরকারী উদ্যোগে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করার দাবি জানান অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি কবীর চৌধুরী তন্ময়।

হ-রাইজন ওয়েলফেয়ার অর্গানাইজেশন এর সভাপতি ডেভিড এ হালদার এর সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- আলোকিত প্রতিবন্ধী সমিতির উপদেষ্টা-মিজানুর রহমান মিজান, হ-রাইজন ওয়েলফেয়ার অর্গানাইজেশনের উপদেষ্টা- মোঃ মনিরুজ্জামান (শাশ্বত মনির), (আইইএম) পরিবার পরিকল্পনা ও উপদেষ্টা-মোঃ আকতারুজ্জামান, বেলজিয়াম আওয়ামী লীগ’র সভাপতি-বজলুর রশিদ বুলু, সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক-পিটার গোনছালবেছ প্রমুখ।