বিশ্বনাথে যুক্তরাজ্য প্রবাসীর ১৭ লাখ টাকা আত্মসাৎ : থানায় অভিযোগ দায়ের
বিশ্বনাথ প্রতিনিধি: সিলেটের বিশ্বনাথে উপজেলার দেওকলস ইউনিয়নের কান্দিগ্রাম গ্রামের বাসিন্দা যুক্তরাজ্য প্রবাসী ফখরউদ্দিনের প্রায় ১৬ লাখ ৬১ হাজার টাকা আতœাসৎ’র অভিযোগে থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। প্রবাসীর ভাই সালাহউদ্দিন ৪ জনের নাম উল্লেখ করে অভিযোগ পত্রটি দায়ের করেছেন। অভিযুক্তরা হলেন একই উপজেলার জগতপুর গ্রামের কবির মিয়ার কন্যা রিপা বেগম (৩২), পুত্র রাহাত মিয়া (২৭), তানভীর মিয়া (২৫) ও মৃত রশিদ আলীর পুত্র কবির মিয়া (৫৭)।
লিখিত অভিযোগে প্রকাশ : তাঁর প্রবাসী ভাই ফখরউদ্দিনের সাথে প্রথম অভিযুক্ত রিপা বেগমের বিবাহ দুই পরিবারের অভিভাবকদের মতামতের ভিত্তিতে নির্ধারণ করা হয়। কিন্তু ফখরউদ্দিন দেশে এসে বিবাহ করা সম্ভব হচ্ছেনা বলে রিপা বেগমকে তাঁর (ফখর) খরছে রিপা বেগমকে স্টুডেন্ট ভিসায় যুক্তরাজ্যে পাঠানোর সিদ্ধান্ত গ্রহন করেন দুই পরিবারের সদস্যরা। এজন্য দক্ষিণ সুরমা উপজেলাস্থ ব্র্যাক ব্যাংক লিঃ-এর শাখায় রিপা বেগমের নামে একটি একাউন্ট (যার নং ৬৩০৯১০২৫৬২৬০৮০০১) করা হয়।
লিখিত অভিযোগে বাদী আরোও উল্লেখ করেছেন, এরপর রিপা বেগম আইইএলটিএস-এ ভর্তি ও অন্যান্য খরছ নির্বাহের জন্য তাঁর (রিপা) পিতা কবির মিয়ার কাছে নগদ ১ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা প্রদান করেন বলে বাদী উল্লেখ করেছেন। স্টুডেন্ট ভিসা পাওয়ার পর রিপা বেগমের ব্যাংক ষ্টেটমেন্টের জন্য ফখরউদ্দিন যুক্তরাজ্যের লন্ডন শহরের তাবাস্সুম ট্রেভেল এন্ড টুর-এর মোহাম্মদ জালিলুলউদ্দিনের মাধ্যমে ২০১৩ সালের ২৯ এপ্রিল থেকে ২০১৪ সালের ১৮ মার্চ পর্যন্ত ১১ লাখ ২৯ হাজার ৫শত টাকা এবং সুন্দরবন মানি ট্রান্সফার এর মাধ্যমে ১ লক্ষ ৫০ হাজার টাকাসহ মোট ১২ লাখ ৭৯ হাজার ৫শত টাকা রিপা বেগমের দক্ষিণ সুরমা উপজেলাস্থ ব্র্যাক ব্যাংক লিঃ-এ থাকা একাউন্টে (যার নং ৬৩০৯১০২৫৬২৬০৮০০১) জমা করে। এর পাশাপাশি যুক্তরাজ্য একটি কলেজে ভর্তি ফি হিসেবে আরও ২ লাখ ৩২ হাজার টাকা জমা দেওয়া হয়। সব কিছু ঠিক হওয়ার পর রিপা বেগম বৃটিশ হাইকমিশনে গিয়ে ইন্টারভিউ দিতে ও ফখরউদ্দিনকে বিবাহ করতে অস্বীকার করেন।
বাদী উল্লেখ করেছেন, এমতাবস্তায় বাদী রিপা বেগমের পরিবারের কাছে তাঁর (রিপা) ব্যাংক একাউন্টে প্রবাসী ফখরউদ্দিন প্রেরিত ১২ লাখ ৭৯ হাজার ৫শত টাকা, কলেজের একাউন্ডে জমাকৃত ২ লাখ ৩২ হাজার টাকা এবং বাদীর কাছ থেকে রিপা বেগমের পিতার নেওয়া নগদ ১ লাখ ৫০ হাজার টাকাসহ মোট ১৬ লাখ ৬১ হাজার ১শত টাকা ফেরত চাওয়া হলে অভিযুক্তরা তা দিতে অস্বীকার করেছে বলে বাদী তাঁর লিখিত অভিযোগে উল্লেখ করেছেন।
স্টুডেন্ট ভিসায় যুক্তরাজ্যে যাওয়া ও প্রবাসী ফখরউদ্দিনের সাথে বিবাহ হওয়ার কথা স্বীকার করে ও টাকার অভিযোগ মিথ্যা দাবী করে সাংবাদিকদের রিপা বেগম বলেন, তাঁদের (ফখর) খরছে সবকিছু হওয়ার কথা প্রথমে হলেও পরবর্তি সময়ে ফখরউদ্দিন ও তাঁর ভাইয়েরা নিজেদের কথা থেকে সরে এসে আমার পিতার কাছে ৭ লাখ টাকা যৌতুক হিসেবে দাবি করে। আর আমার পিতা তা অপারগতা জানালে তাঁরা ক্ষিপ্ত হয়ে সিলেটের এসপি-ডিবি আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন। আর সব অভিযোগই মিথ্যা প্রমাণিত হয়েছে। এরপর দক্ষিণ সুরমা এলাকা থেকে তাঁরা (সালাহউদ্দিন গং) আমাকে (রিপা) কিডনাফ করলে গেলে পুলিশের হাতে গ্রেপ্তারও হয়। তাঁরা ভবিষ্যতে এব্যাপারে আমাকে (রিপা) কোন হয়রাণী করবে না বলে দক্ষিণ সুরমা থানায় বন্ড দিয়ে ছাড়া পায়, যার কপি আমার কাছে আছে।
অভিযোগপত্র প্রাপ্তির সত্যতা স্বীকার করে তদন্তকারী কর্মকর্তা বিশ্বনাথ থানার এসআই সুমন চন্দ্র সরকার বলেন, এব্যাপারে তদন্ত সাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।