জেলা ছাত্রলীগের কমিটি বাতিলের দাবিতে ছয় দিনের কর্মসূচী ঘোষণা
ডেস্ক রিপোর্টঃ সিলেট জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে ব্যর্থ আখ্যায়িত করে এই কমিটি বাতিলের দাবি জানিয়েছেন বিদ্রোহীরা। সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক অছাত্র, বিবাহিত, ছিনতাকারী, শিবির-ছাত্রদল থেকে অনুপ্রবেশকারীদের দিয়ে জেলা ছাত্রলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করেন বলে অভিযোগ করেন তারা।
আজ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টায় নগরীর একটি হোটেলে সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময়কালে জেলা ছাত্রলীগের বিদ্রোহী নেতারা এসব অভিযোগ করেন। এসময় জেলা কমিটি বাতিলের দাবিতে ছয় দিনের কর্মসূচীরও ঘোষণা করেন তারা।
কর্মসূচীর মধ্যে রয়েছে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক এবং সিলেট জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকের কাছে স্মারকলিপি প্রদান, সকল কলেজে বিক্ষোভ, কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে অনাস্থা প্রাচীর গড়া, গণস্বাক্ষর অভিযান প্রভৃতি।
বৃহস্পতবার মতবিনিময়কালে ছাত্রলীগের কমিটিবিরোধী নেতারা লিখিত বক্তব্যে বলেন, ২০১৪ সালের ৮ সেপ্টেম্বর কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি এইচ.এম. বদিউজ্জামান সোহাগ এবং সাধারণ সম্পাদক সিদ্দিকী নাজমুল আলম সিলেটে এসে শাহরিয়ার আলম সামাদকে সভাপতি এবং রায়হান চৌধুরীকে সাধারণ সম্পাদক করে এক বছরের জন্য সিলেট জেলা ছাত্রলীগের কমিটি ঘোষণা করেন। দায়িত্ব গ্রহণের পর সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদক সংগঠনের গতিশীলতা আনয়ন করতে কোনরুপ পদক্ষেপ গ্রহণ করেননি। কোন উপজেলা পর্যায়ে কার্যক্রম ব্যতিত এবং উপজেলার নেতৃবৃন্দের সাথে কোনরুপ সাংগঠনিক যোগাযোগ ছাড়াই বেশ কয়েকটি উপজেলা কমিটি বাতিল করেন। আজ অবদি একটি উপজেলা কমিটি গঠন করা সম্ভব হয়নি। জেলা ছাত্রলীগের তৃনমূল কর্মীদের নিয়ে কোন কর্মীসভা পর্যন্ত করতেও ব্যর্থ হয়েছে। শুধুমাত্র আওয়ামীলীগের সভা সমাবেশ যোগদান এবং কেন্দ্রীয় কর্মসূচি পালনের মধ্যেই সিলেট জেলা ছাত্রলীগের কার্যক্রম সীমাবদ্ধ ছিল।
এমতাবস্থায় সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদক তৃণমূল ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে মেয়াদ উত্তীর্ণ কমিটিকে নিজের অনুসারী এবং ঘনিষ্টজনদের নিয়ে পূর্নাঙ্গ করতে তৎপর হয়ে উঠেন। যার ফলস্বরুপ অভিভাবক সংগঠন আওয়ামীলীগ নেতৃবৃন্দ এবং স্থানীয় ছাত্রলীগের নেতৃবৃন্দের সাথে কোন আলোচনা না করেই নিজস্ব বলয় ভারি করার জন্য অছাত্র, বিবাহিত, চাঁদাবাজ, ছিনতাকারী, শিবির ছাত্রদল থেকে অনুপ্রবেশকারী, হত্যা মামলার আসামী এবং অর্থের বিনিময়ে অরাজনৈতিক ব্যক্তিদের নিয়ে পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করেন। এমন হঠকারী, অবিবেচক এবং গঠনতন্ত্রবিরোধী সিদ্ধান্ত ছাত্রলীগের অন্তঃপ্রাণ নেতা-কর্মীরা মেনে নিতে পারছি না।
লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, আমরা বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদক এস.এম.জাকির হোসাইনের নেতৃত্বের সকল আন্দোলন সংগ্রামে অংশগ্রহণ করে আসছি। অতীতেও ছাত্র শিবির বিতাড়ন, বিএনপি জামাতের অগ্নিসংযোগ আন্দোলন মোকাবেলা এবং ৫ জানুয়ারীর নির্বাচনেও ঐক্যবদ্ধ ছিলাম। আমাদের শেষ আশ্রয়স্থল প্রাণপ্রিয় নেত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা। আমরা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শ নিয়ে রাজনীতি করি। এই কমিটি মেনে নেওয়া মানে আমাদের রক্তের সাথে বেইমানী করা, আদর্শের সাথে বেইমানী করা।
কমিটি বিরোধী নেতারা বলেন, ৮ ডিসেম্বর মাজার জিয়ারত আর শহীদ মিনারে ফুল দেওয়ার নামে যে কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের নেতৃত্বে রামদা মিছিল ও আগ্নেয়াশ্রেয় প্রদর্শণ হয়, সেই কমিটির নেতৃত্ব আমরা কিভাবে মেনে নিব?
বক্তারা ছাত্রলীগের সভাপতি সাইফুর রহমান সোহাগ এবং সাধারণ সম্পাদক এস.এম.জাকির হোসাইনের কাছে অনতিবিলম্বে গঠিত কমিটি বাতিল করে সিলেটের ছাত্রলীগকে রক্ষা করার দাবি জানান।
মতবিনিময়কালে উপস্থিত ছিলেন জেলা ছাত্রলীগের সিনিয়র সহ সভাপতি নিজাম উদ্দিন, সহ সভাপতি হোসাইন আহমদ চৌধুরী, শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক মওদুদ আহমদ আকাশ, সাংস্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদক সম্পাদক বিপ্লব কান্তি দাস, গণ শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক কনক পাল অরূপ, আইন সম্পাদক টিপু রঞ্জন দাস, উপ ছাত্র বিষয়ক সম্পাদক বখতিয়ার আকরাম চৌধুরী অনিক, পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক সাদিকুর রহমান প্রমুখ।
কমিটিতে যাদেরকে পদ দেওয়া হয়ে তাদের নামের তালিকা
১। হোজায়েল আহমদ বাপ্পী (অর্থ সম্পাদক) সাবেক প্রচার সম্পাদক
মদনমোহন কলেজ ইসলামী ছাত্র শিবির। একাদিক মামলার আসামী এবং তার পিতা জামাতের রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত।
২। শাক্কুর আহমদ জনি- যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক।
রিকু বড়–য়া হত্যা মামলার ৩ নং আসামী। মামলা নং- ১৮/১২১ শাহপরান থানা। রিকু বড়–য়ার ভাই লাভলু বড়–য়া জেলা যুবলীগের সদস্য।
৩। মোঃ জুবায়ের খান- যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক।
টুলটিকর ইউয়িনের বালুচর, সাবেক ছাত্রদল নেতা। জেলা টমটম ব্যবসায়ী সমিতির সাংগঠনিক সম্পাদক।
৪। সুলেমান হোসেন চৌধুরী- সহ-সভাপতি ।
অছাত্র, বিবাহিত এক পুত্র সন্তানের জনক, পুত্রের নাম: সাকিব, স্ত্রীর নাম: দিপা।
৫। মোঃ ছয়েফ আহমদ- সহ-সভাপতি।
অশিক্ষিত, ছাত্রদল থেকে অনুপ্রবেশকারী এবং অস্ত্রবাজ, শাহপরান থানার একাদিক মামলার আসামী।
৬। জাকারিয়া মাহমুদ রহমান- সমাজ সেবা সম্পাদক
অশিক্ষিত, চিহ্নিত সন্ত্রাসী, উপশহর এলকায় চাদাঁবাজ ৬১ জন ব্যবসায়ীর স্মারক লিপি প্রদানসহ একাদিক মামলার আসামী।
৭। আদিরাজ উজ্জ্বল- দপ্তর সম্পাদক
সঠিক নাম মুহিবুর রহমান উজ্জ্বল, অশিক্ষিত ৮ম শ্রেণীতে অধ্যায়নকালে ইভটিজিং এর দায়ে স্কুল থেকে বহিষ্কৃত।
৮। মারুফুল হাসান মারুপ- সহ সম্পাদক
বিবাহিত এবং এক সন্তানের জনক।
৯। সৌরভ আহমদ তালুকদার- সহ সম্পাদক
যুক্তরাজ্য বিএনপির সাধারণ সম্পাদক কয়ছর আহমদের ভাগ্না। যুক্তরাজ্যে সফরকালে শেখ হাসিনার গাড়ীবহরে হামলাকারী। সাবেক ছাত্রদল নেতা।
১০। সাইফুর রহমান- সহ-সভাপতি- অশিক্ষিত, ফার্মেসী ব্যবসায়ী।
১১। নিলয় কিশোর ধর জয়- প্রচার সম্পাদক- অশিক্ষিত, মির্জাজাঙ্গল এলাকর চিহ্নিত অপরাধী এবং নেশাখোর।
১২। সাহেদ আহমদ- সহ-সভাপতি- অছাত্র, দর্জী ব্যবসায়ী, উপশহর আছমা টেইলার্স।
১৩। মোঃ হাবিব আহমদ- সহ-সম্পাদক- সাবেক ছাত্রদল নেতা, অশিক্ষিত, নন্দিতা সিনেমা হলের দালাল।
১৪। আব্দুল রাহী রিফাত- উপগণ যোগাযোগ সম্পাদক
ছাত্রদল থেকে অনুপ্রবেশকারী, জামান গ্রুপ।
১৫। মোঃ তানভির হোসেন- উপ গণশিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক
বিবাহিত, অশিক্ষিত, ছিনতাকারী, জাল আলীর ছোট ভাই।
১৬। মিজানুর রহমান মিজান- সহ সম্পাদক-অশিক্ষিত।
১৭। মুহিবুর রহমান মুহিব- উপ পাঠাগাড় সম্পাদক
ছাত্রদল থেকে অনুপ্রবেশকারী
১৮। আলী হোসেন- সহ সভাপতি
অশিক্ষিত, অর্থ আত্মসাৎকারী, একাধিক অপরাদের অপরাধী।
১৯। তোফায়েল আহমেদ সানী- যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক
ছাত্রদল থেকে অনুপ্রবেশকারী
২০। এ.কে.এম চৌধুরী জাবেদ- সাহিত্য বিষয়ক সম্পাদক
অছাত্র, রাজাম্যনশন ব্যবসায়ী কমিটির সদস্য, ছাত্র শিবির থেকে অনুপ্রবেশকারী
২১। কামরান হোসেন খান- সাংগঠনিক সম্পাদক- ট্রাভেলস ব্যবসায়ী, মাসুদ ট্রাভেলস, রাজা ম্যানশন।
২২। সোহেল আহমদ মুননা- সহ সভাপতি- ইউনিপেটু এর মাধ্যমে অর্থ আত্মসাৎকারী, আদম ব্যবসায়ী।
২৩। অনিরুদ্ধ মজুমদার পলাশ- সহ সভাপতি- নারীনির্যানত মামলায় কারাভোগকারী।
২৪। ইমরান চৌধুরী- সহ সভাপতি- করিমউল্লাহ মার্কেটের ব্যবসায়ী ও অছাত্র।