চিকিৎসক ও জনবল সংকটে মৌলভীবাজার ২৫০ শয্যা আধুনিক হাসপাতাল

Moulvibazar-250-Hospitalবিশ্বজিৎ রায়, কমলগঞ্জ প্রতিনিধি : মৌলভীবাজার জেলার সাতটি উপজেলার ১৫ লক্ষ মানুষের জন্য সেবার একমাত্র ভরসা ২৫০শয্যা মৌলভীবাজার আধুনিক হাসপাতাল। হাসপাতালটি জনবল সংকটের কারনে পর্যাপ্ত সরকারি সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন সাধারণ মানুষ।
জানা যায়, ১৯৮৪ সালে ৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতাল হিসেবে এর কার্যক্রম শুরু হলেও পরবর্তীতে ২০১২ সালে এটিকে ২৫০ শয্যা আধুনিক হাসপাতালে রূপান্তরিত করা হলেও নিয়োগ দেয়া হয়নি পর্যাপ্ত জনবল।
বর্তমানে ২৫০ শয্যা হাসপাতালে তত্বাবধায়ক, ১৯ জন চিকিৎসকসহ, দ্বিতীয়, তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণীর মোট ৫০জন কর্মচারী সংকট রয়েছে। যার ফলে, হাসপাতালে সেবার মান প্রতিনিয়ত কমছে ও গড়ে উঠছে প্রাইভেট কিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার। প্রতিদিন বর্হি বিভাগে হাজারও রোগীর চিকিৎসা সেবার পাশাপাশি ২৭৫ জন রোগীকে অন্ত:বিভাগে চিকিৎসা দিচ্ছে মাত্র ৩৩ জন চিকিৎসক। আধুনিক হাসপাতালে সব ধরনের পরীক্ষার নিরীক্ষার ব্যবস্থা থাকলেও বর্হিবিভাগের ডাক্তাররা রোগীদেরকে পরীক্ষা পরার্মশ দিলে জনবল সংকটের অজুহাতে ৩য় ও ৪র্থ শ্রেণীর কর্মচারীরা বিভিন্ন ডায়াগনস্টিক সেন্টারের কার্ড রোগীর হাতে ধরিয়ে দিচ্ছেন। এতে তারা ডায়াগনস্টিক সেন্টার থেকে ২০-৩০% পাচ্ছেন কমিশন পেলেও আর্থিক ভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছেন রোগীরা।
এদিকে, ডাক্তাররা রোগীদের পরীক্ষা করে নানা রকম ঔষধ লিখে থাকলেও হাসপাতাল ডিসপেনসারীতে তা পাওয়া যায় না । চাহিদামত ঔষধ না পাওয়ায় অধিকাংশ ক্ষেত্রেই তা বাইরে থেকে বেশী দাম দিয়ে কিনে আনতে হচ্ছে রোগীদের।
গতকাল হাসপাতালে সেবা নিতে আসা জুলেখা বিবি নামে এক বৃদ্ধা মহিলার কাছে হাসপাতাল থেকে কেমন সেবা পেলেন জানতে চাইলে সিলেটী আঞ্চলিক ভাষায় কান্না বিজড়িত কন্ঠে বলেন, “বাবা আমি গরিব মানুষ হাসপাতালে আইছলাম সরকারী ডাক্তার দেখাইয়া ঔষধ নিতাম, অখন বাড়িত যাইবার টেকা নাই“। তার সাথে আলাপ চারিতায় জানা গেল, ডাক্তার তাকে চেক আপ করার পর ব্যবস্থাপত্রে যে সব যে ক‘টি ঔষধ লিখে দিয়েছেন তার কোনটিই তিনি হাসপাতালে পাননি। পাশাপাশি কয়েকটি পরীক্ষার রিপোর্ট নিয়ে তার সাথে পুনঃরায় দেখা করার জন্য পরামর্শ দেন। ডাক্তার হাসপাতালে সরকারী খরছে পরীক্ষার পরামর্শ দিলেও সংশ্লিষ্ট পরীক্ষক সরকারী ভাবে পরীক্ষা নিতে গেলে রির্পোট পেতে দেরী হবে এই অজুহাতে বাহির থেকে পরীক্ষা করানোর জন্য বলেন। বাইরে পরীক্ষা করাতে গিয়ে তার সাথে যা টাকা কড়ি ছিল সব শেষ, এখন তার বাড়ী যাবার ভাড়ার টাকাটা পাবেন কোথায়। এইবলে তিনি কান্নায় ভেঙে পড়েন। শুধু জুলেখাই নয়, এভাবে সেবা নিতে এসে চোখে জল নিয়ে প্রতিদিন ফিরে য়েতে হচ্ছে অসহায় নেক রোগীকেই।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত তত্ত্ববধায়ক ডাঃ সুব্রত কুমার রায় বলেন, জনবল সংকটের কারণে দৈনন্দিন কার্যক্রম কিছুটা ব্যাহত হচ্ছে। সীমিত জনবল নিয়ে যতটুকু সম্ভব সেবার কাজ চালিয়ে যাচ্ছি।