ঐশীর আপিল হাইকোর্টে গৃহীত : জরিমানার আদেশ স্থগিত
ডেস্ক রিপোর্টঃ পুলিশ কর্মকর্তা মাহফুজুর রহমান ও তার স্ত্রী স্বপ্না রহমানকে হত্যার দায়ে মৃত্যুদণ্ডের রায়ের বিরুদ্ধে তাদের মেয়ে ঐশী রহমানের করা আপিল শুনানির জন্য গ্রহণ করেছেন হাইকোর্ট।সোমবার বিচারপতি এম মোয়াজ্জাম হোসেন ও বিচারপতি মো. বদরুজ্জামানের হাইকোর্ট বেঞ্চে এ আদেশ দেয়। আদালতে ঐশীর পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী সুজিত চ্যাটার্জী বাপ্পী; সঙ্গে ছিলেন মাহবুব হাসান রানা।
সুজিত বলেন, “আদালতকে বলেছি, তার বয়স নির্ধারণ ও ডিএনএ পরীক্ষা সঠিকভাবে হয়নি। আপিল গ্রহণ করে শুনানি না হওয়া পর্যন্ত ঐশীর বিরুদ্ধে দেওয়া ২০ হাজার টাকা জরিমানার আদেশ স্থগিত করা হয়েছে। মৃত্যুদণ্ডের রায়ের পেপারবুক তৈরি হওয়ার পর আপিল ও ডেথ রেফারেন্সের শুনানি একসঙ্গে হতে পারে বলে জানান তিনি।
বয়সের বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে মৃত্যুদণ্ডের রায় বাতিল করে খালাস চেয়ে করা এই আবেদনে বলা হয়, “ঐশীর বয়সটি সঠিক পদ্ধতিতে নির্ধারিত হয়নি। নিম্ন আদালতে রাষ্ট্রপক্ষ বলেছে, ঐশী প্রাপ্তবয়ষ্ক। আমরা বলেছি, ঐশী শিশু। রায়ে তাকে কিশোরী দেখানো হয়েছে।”
রোববার ঐশীর পক্ষে জমা দেয়া এই আপিল গ্রহণযোগ্যতার শুনানির জন্য সোমবারের তালিকায় আসে। ১২ নভেম্বর ঢাকার তিন নম্বর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক সাঈদ আহমেদ চাঞ্চল্যকর এই মামলার রায় ঘোষণা করেন। রায়ে ঐশীকে মৃত্যুদণ্ডের আদেশের পাশাপাশি তাকে আশ্রয় দেওয়ায় বন্ধু মিজানুর রহমান রনিকে দুই বছর সশ্রম কারাদণ্ড ও পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
আর হত্যাকাণ্ডে সহযোগিতার অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় বেকসুর খালাস পান ঐশীর আরেক বন্ধু আসাদুজ্জামান জনি। এর মধ্যেই ঐশী রহমানের ফাঁসির রায় ও মামলার নথিপত্র হাই কোর্টের ডেথ রেফারেন্স শাখায় জমা হয়েছে।
২৭ মাস আগে ওই হত্যাকাণ্ড এবং তাতে রহমান দম্পতির কিশোরী মেয়ের জড়িত থাকার অভিযোগ বাংলাদেশকে নাড়িয়ে দেয়। এ মামলায় ঐশীদের বাসার শিশু গৃহকর্মী খাদিজা আক্তার সুমি অপ্রাপ্তবয়স্ক হওয়ায় তার বিচার চলছে শিশু আদালতে।
স্ত্রী, দুই সন্তান ও শিশু গৃহকর্মীকে নিয়ে মালিবাগের চামেলীবাগের এক ফ্ল্যাটে থাকতেন পুলিশের বিশেষ শাখার (রাজনৈতিক) পরিদর্শক মাহফুজুর রহমান। ২০১৩ সালের ১৬ অগাস্ট ওই বাসা থেকেই তাদের ক্ষতবিক্ষত লাশ উদ্ধার করা হয়।
পুলিশের বক্তব্য অনুযায়ী, আগের রাতে কোনো এক সময়ে কফির সঙ্গে ঘুমের বড়ি খাইয়ে বাবা-মাকে কুপিয়ে হত্যা করেন ঐশী। পরদিন সকালে সাত বছর বয়সি ছোট ভাইকে নিয়ে বাড়ি থেকে তিনি বেরিয়ে যান। পরে ভাইকে এক প্রতিবেশীর বাসায় পাঠিয়ে একদিন পর গৃহকর্মী সুমিকে নিয়ে রমনা থানায় আত্মসমর্পণ করেন এই কিশোরী।