রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালে অচেতন রোগীকে যৌন হেনস্থা
ডেস্ক রিপোর্টঃ রাজধানীর ইউনাইটেড হসপিটালে অস্ত্রোপচারের পর অচেতন থাকা রোগীকে যৌনহেনস্থার অভিযোগে নার্সকে (ব্রাদার) গ্রেপ্তার করে আগামী সোমবার আদালতে হাজির করার নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। গুলশান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) এ নির্দেশ বাস্তবায়ন করতে বলা হয়েছে।
একই সঙ্গে ইউনাইটেড হসপিটাল কর্তৃপক্ষ, ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও জড়িত স্টাফ নার্সের বিরুদ্ধে কেন শাস্তিমূলক ব্যবস্থার নির্দেশ দেওয়া হবে না এ মর্মে রুল জারি করেছেন আদালত। অভিযুক্ত ওই নার্সের নাম সাইফুল ইসলাম।
আজ বৃহস্পতিবার একটি দৈনিকে ‘ইউনাইটেড হাসপাতালে যৌন হয়রানি’ শীর্ষক প্রতিবেদন আমলে নিয়ে বিচারপতি কাজী রেজাউল হক ও বিচারপতি আবু তাহের মো. সাইফুর রহমানের বেঞ্চ স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে এ আদেশ দেন।
রুলে স্বরাষ্ট্রসচিব, স্বাস্থ্যসচিব, পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি), স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার, পুলিশের গুলশান জোনের উপকমিশনার (ডিসি), সহকারী কমিশনার (এসি) ও ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) জবাব দিতে বলা হয়েছে।
এ বিষয়ে রাষ্ট্রপক্ষের ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল তাপস কুমার বিশ্বাস বলেন, ‘একটি পত্রিকার সংবাদ আমলে নিয়ে আদালত স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে যৌন হয়রানির অভিযোগে সাইফুলকে গ্রেপ্তার করে আদালতে হাজির করার নির্দেশ দিয়েছেন।’
ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, রাজধানীর অভিজাত আবাসিক এলাকা গুলশানের ইউনাইটেড হসপিটালের নিবিড় পরিচর্যাকেন্দ্রে (আইসিইউ) এক নারী রোগীকে যৌন হয়রানির অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ জন্য হাসপাতালের নার্সকে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে। গত ৩০ নভেম্বর ঘটনাটি ঘটে। ২ ডিসেম্বর বিষয়টি জানাজানি হয়। তবে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ সাইফুলের বিরুদ্ধে কোনো আইনি ব্যবস্থা নেয়নি। কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে।
ওই রোগী সাংবাদিকদের বলেন, তিনি অজ্ঞান ছিলেন। হঠাৎ জ্ঞান ফিরে দেখেন, তার বুকের ওপর একটি হাত। একই সঙ্গে তাঁর শরীরের কাপড় (চাদর) সরানো হচ্ছে। তিনি তাকিয়ে দেখেন ওই হাত একটা ছেলের। তিনি নার্সদের ডাকার চেষ্টা করেন। প্রায় আধা ঘণ্টা পর নার্স আসেন। নার্স এসে এ ঘটনার জন্য দুঃখ প্রকাশ করেন এবং তাঁর স্বামীকে না জানাতে অনুরোধ করেন। একপর্যায়ে ওই নারী তার স্বামীর সঙ্গে দেখা করতে চাইলেও দেখা করতে দেওয়া হয়নি।
১৬ ঘণ্টা পর তাঁর স্বামীর সঙ্গে দেখা হওয়ার পর বিষয়টি জানাজানি হয়। তিনি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে সাইফুল ইসলামকে পুলিশে সোপর্দ করতে বলেন। কিন্তু তারা তাঁকে পুলিশে দিতে রাজি হয়নি।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বারবার তাঁকে মামলা করার জন্য বলেছে। কিন্তু তিনি মামলা না করেই সাইফুলকে পুলিশে দেওয়ার কথা বলেছেন। গতকাল বুধবার ওই রোগী হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র নিয়ে বাসায় ফিরেছেন।