‘বাংলা ভাষায় দু-একটা রায় লেখার চিন্তা করছি’
ডেস্ক রিপোর্টঃ বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতি এসকে সিনহা বলেছেন আমাদের আদালত সমুহে বাংলা ভাষায় রায় লেখার চিন্তা করা হচ্ছে। নিম্ন আদালতের বিচারকরা বাংলায় রায় লিখছেন, উচ্চ আদালতের কিছু বিচাপতিরা বাংলা ভাষায় রায় লেখার চেষ্টা করছেন, আমি চিন্তা করছি দু একটি রায় বাংলায় লেখার জন্য। বৃহস্পতিবার বিকেলে সুপ্রিমকোর্টের শহিদ শফিউর রহমান মিলনায়তনে দেশিয় সাংস্কৃতিক আইনজীবী পরিষদ আয়োজিত মাতৃভাষা ও দেশিয় সংষ্কৃতি শীর্ষক এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, আমরাই একমাত্র জাতি যারা ভাষার জন্য যুদ্ধ করেছি, ৫২ ভাষা আন্দোলন যে প্রেরণা দেয় তা্ অবশ্যাই গুরুত্বপুর্ন। তিনি আব্দুল গাফফার ও আব্দুল আলীমের গান আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙ্গানো গানটি, মুক্তিকামী মানুষদের অনেক উৎসাহ যুগিয়েছেন।
তিনি বলেন, মাতৃভাষার অধিকার আদায়ের নিমিত্বে ৫২ আন্দোলন হয়েছে। ৫৯ গনঅব্যুস্থান হয়েছে, স্বাধীনতাযুদ্ধের অন্যতম ফসল। সংস্কৃতি এগিয়ে চলার ধর্ম। তিনি বলেন, সংস্কৃতি মানুষকে এগিয়ে নিয়ে যায়। সংস্কৃতি হলো মানুষের জীবন প্রনালী মানুষের জ্ঞান ও কর্মের ভাবনার বাহক হলো সংস্কৃতি, এর বহু উদাহরণ জড়িয়ে আছে আমাদের নাটক কবিতা ও গানে। প্রধান বিচারপতি বলেন, আমাদের ইতিহাস পর্যালোচনা করে দেখা যায় আমাতের সংষ্কৃতি অনেক উ]সাহ যুগিয়েছে। তিনি বলেন, বাঙ্গালী সংষ্কৃতি প্রচলন করতে আমাদের দেশের সংষ্কৃতি ধরে রাখতে হবে।
তিনি বলেন, আফ্রিকার বৃহত্তর জাগরণ করেছিলো সংস্কৃতি দিয়ে। আফ্রিকার মানুষ সব হারালেও সংস্কৃতি হারায়নি। সেখানে মাদলের ধ্বনি তাদেকে ঐক্যবদ্ধ করেছে। সংস্কৃতি মানষের অধিকার আদায়ে ভুমিকা রাখে। তিনি বলেন, আমাদের বাংলাভাষা ও সংষ্কৃতি ধরে রাখা উচিত, অপসংস্কৃতি দেশকে ধ্বংস করে। পশ্চিমা সংস্কৃতি কারণে আমরা ভুলে বসেছি দেশিয় সংষ্কৃতি। দেশিয় সংস্কৃতি রক্ষায় এই সংগঠন প্রসংশার দাবীদার।
অনুষ্ঠানে অ্যাটর্নি জেনারেল অ্যাডভোকেট মাহবুবে আলম বলেন, আমাদের আগের দিনে সংষ্কৃতি ছিলো কউ কারো বিরুদ্ধে ধর্মীয় ব্যাপারে ভেদাভেদ দেখাবে না। ধর্মীয় ভেদাভেদ না দেখানেই ছিলো আমাদের বাংলা সংস্কৃতি।
তিনি বলেন, আমাদের লালন, হাসনরাজা, রাধারমনের সাংস্কৃতি ছিলেন সবার জন্য, কউ কারো বিরুদ্ধে ভেদাভেদ দেখাতো না। তিনি বলেন, আমাদের উত্তরবঙ্গের ভাটিয়া, ভাওয়াইয়া গানের সংস্কিৃতি অনেক ভালো ছিলো। আমাদের সংস্কুতি বিদেশের মাটিতে পরিচিত করা উচিত।
অনুষ্ঠানে সুপ্রিমকোর্ট বারের সাবেক সম্পাদক অ্যাডভোকেট শ ম রেজাউল করিম বলেন,যুদ্ধাপরাধের বিচারের রায় কার্যকর নিয়ে পাকিস্তান সম্প্রতি যে বিবৃতি প্রদান করেছে সেটি একটি বর্বর, জঙ্গিপনার মতো মনে হচ্ছে। তিনি বলেন, দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষা করতে হলে দেশিয় সংষ্কৃতি রক্ষা করতে হবে। তিনি বলেন, যুদ্ধাপরাধী সাকা মুজাহিদের ফাঁসি কার্যকরের পর পাকিস্তানের পক্ষ থেকে যে বিবৃতি দেয়া হচ্ছে তা বর্বর, জঙ্গিপনার মতো বিবৃতি। আলোচনা সভায় সভাপত্বি করেন সুপ্রিমকোর্টের আইনজীবী ও সংগঠনের সভাপতি অ্যাডভোকেট গৌরাঙ্গ চন্দ্র কর। এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন, বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট আব্দুল বাসেত মজুমদার, অ্যাটর্নি জেনারেল অ্যাডভোকেট মাহবুবে আলম, সিনিয়র আইনজীবী অ্যাডভোকেট ইউসুফ হোসেন হুমায়ূন, বঙ্গবন্ধু আইনজীবী পরিষদের সেক্রেটারী লায়েকুজ্জামান মোল্লা, সুপ্রিমকোর্ট বারের সাবেক সম্পাদক অ্যাডভোকেট শ ম রেজাউল করিম প্রমুখ। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন সুপ্রিমকোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট শফউদ্দিন ভূইয়া।