বিশ্বনাথে নদী থেকে লাশের কংকাল উদ্ধার : ময়না তদন্তে প্রেরণ
তজম্মুল আলী রাজু, বিশ্বনাথ: বিশ্বনাথ উপজেলার খাজাঞ্চী ইউনিয়নের নদী (কাটা গাং) থেকে পাকা পিলারের সাথে বাঁধা অবস্থায় একটি লাশের কংকাল উদ্ধার করেছে জেলেরা। খবর পেয়ে গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেল ৩টায় থানা পুলিশ লাশটি উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য মর্গে প্রেরণ করেছে। এদিকে, এলাকাবাসী ধারণা করছেন কবর থেকে ‘নিখোঁজ’ হওয়া নিহত আব্দুল মনাফের লাশ হতে পারে।
জানা গেছে, গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে মাছ ধরতে জেলেরা নদীতে জাল ফেললে জালের মধ্যে একটি পাকা পিলারের সাথে বাঁধা অবস্থায় লাশের কংকাল দেখতে পান। এরপর লাশটি তারা নদীর তীরে রাখলে এ খবর ছড়িয়ে পড়ে এলাকায়। লাশটি দেখতে নদীর পাড়ে ভিড় জমান সাধারন মানুষ। কংকালটির অবস্থা দেখে মনে হয়েছে ময়না তদন্ত করা কোন মানুষের লাশ। তবে এলাকাবাসীর ধারনা নদীর পার্শ্ববর্তি হরিপুর গ্রামের নিহত আব্দুল মানাফের লাশ কবর থেকে গুম করে নদীতেই ফেলা হয়েছে। আর এই লাশটিও মনাফের হতে পারে। বিশ্বনাথ থানার এস.আই তোফাজ্জল হোসেন বলেন, লাশটি উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, বিশ্বনাথ উপজেলার খাজাঞ্চী ইউনিয়নের হরিপুর গ্রামের মৃত জবান আলীর পুত্র আব্দুল মনাফ (৫৫) চলতি বছরের ১৬ মে বিকেল থেকে ‘নিখোঁজ’ হন। এরপর ১৮ মে সন্ধ্যায় বাদীর বসত ঘরের সম্মুখের গোয়াল ঘর থেকে ঘরের পিলারের সাথে ঝুলানো অবস্থায় তার লাশ উদ্ধার করা হয়। ময়না তদন্ত শেষে ১৯ মে লাশ দাফন করা হয়। আব্দুল মনাফকে হত্যার অভিযোগে ৬ জনকে আসামী করে মনাফের ভাই আব্দুল হাশিম আদালতে মামলা দায়ের করেন। বাদি লাশটি পুনরায় ময়না তদন্তের জন্য আবেদন করলে লাশ দাফনের ২ মাস ১৩ দিন পর আদালতের নির্দেশে পুনরায় ময়না তদন্তে জন্য গত ৪ আগস্ট সকালে নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট ও বিশ্বনাথ উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) সুহেল মাহমুদ ও সিলেটের সিভিল সার্জন ডাঃ মো. হাবিবুর রহমানের উপস্থিতিতে নিহত মনাফের কবর খোঁড়া হয়। কবর খোঁড়ার পর কবরে লাশের কোন অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি। কবরে লাশের পরিবর্তে পাওয়া যায় কাফনের কাপড়, নীল রংয়ের পলিথিন ও প্লাস্টিকের সুতলি। গত ১০ আগস্ট সিলেট জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট-২ নজরুল ইসলাম আসামী উস্তার আলী ও তার ছেলে মিন্টু মিয়ার জামিন নামঞ্জুর করে জেলহাজতে প্রেরণ করেন। এরপর গত ২৫ সেপ্টেম্বর মামলার প্রধান আসামী টিটু মিয়াকে গ্রেফতার করে ডিবি পুলিশ। গ্রেফতারকৃত ৩ জন বর্তমানে জেলহাজতে রয়েছে। মামলাটি বর্তমানে সিআইডি’তে তদন্তাধিন রয়েছে।