খালেদা জিয়া গ্রেফতার হচ্ছেন!
মহসীন উদ্দিন: আগামীকাল বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া নাইকো দুর্নীতি মামলায় আত্মসমর্পণ করছেন। বিষয়টি তার আইনজীবী মাহবুব উদ্দিন খোকন রোববার নিশ্চিত করে বলেন, ‘বেগম খালেদা জিয়া আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। আদালতের আদেশ অনুযায়ী সোমবার দুপুরে তিনি জজ আদালতে হাজির হবেন এবং জামিনের আবেদন করবেন।’
নাইকো দুর্নীতি মামলার বৈধতা নিয়ে খালেদার করা আবেদন গত ১৮ জুন খারিজ করে দেয় হাই কোর্ট। সেই সঙ্গে মামলার ওপর থেকে স্থগিতাদেশ তুলে নিয়ে সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীকে বিচারিক আদালতে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দেওয়া হয়। সেনা নিয়ন্ত্রিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় খালেদা গ্রেপ্তার হওয়ার পর ২০০৭ সালের ৯ ডিসেম্বর তার বিরুদ্ধে তেজগাঁও থানায় নাইকো দুর্নীতি মামলা দায়ের করে দুদক। পরের বছর ৫ মে খালেদাসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেওয়া হয়।
এতে অভিযোগ করা হয়, ক্ষমতার অপব্যবহার করে তিনটি গ্যাসক্ষেত্র পরিত্যক্ত দেখিয়ে কানাডীয় কোম্পানি নাইকোর হাতে ‘তুলে দেওয়ার’ মাধ্যমে আসামিরা রাষ্ট্রের প্রায় ১৩ হাজার ৭৭৭ কোটি টাকার ক্ষতি করেছেন।
এদিকে আগামীকাল সোমবার খালেদা জিয়ার আদালতে আত্মসমর্পণের খবরের পর গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে, এদিনই গ্রেফতার হতে পারেন বিএনপি চেয়ারপারসন। দলটির একটি সূত্রের আশঙ্কা, সরকার বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের ওপর যেভাবে গ্রেফতার-নির্যাতন করছে তাতে চেয়ারপারসনকেও তারা গ্রেফতার হতে পারেন।
দলের শীর্ষ নেতাসহ ১১ হাজার নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করে জেলে রেখেছে সরকার। চেয়ারপারসনের লন্ডন সফরের সময় আওয়ামী লীগের একাধিক নেতা-মন্ত্রী বলেছিলেন খালেদা জিয়া দেশে ফিরলেই গ্রেফতার হবেন। যে অনুযায়ী সরকার নাইকো মামলায় আত্মসমর্পণের দিনই তাকে গ্রেফতার করতে পারে বলে একাধিক সূত্র জানায়।
এর আগে ২০০৭ সালের ৯ ডিসেম্বর তার বিরুদ্ধে তেজগাঁও থানায় নাইকো দুর্নীতি মামলা দায়ের করে দুদক। পরের বছর ৫ মে খালেদাসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেওয়া হয়।
২০০৮ সালের ৯ সেপ্টেম্বর এ মামলায় জামিন পান খালেদা। প্রায় সাত বছর পর চলতি বছর শুরুতে রুল নিষ্পত্তির মাধ্যমে মামলাটি সচল করার উদ্যোগ নেয় দুদক। খালেদার আবেদনে রুলের ওপর শুনানি করে জুনে রায় দেয় হাইকোর্ট। এর আগে এ বছরের ২৫ ফেব্রুয়ারি খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট ও জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছিল আদালত। এ দুই মামলায় তাঁর হাজির হওয়ার কথা থাকলেও তিনি হাজির না হওয়ায় এ পরোয়ানা জারি করা হয়।
একই সঙ্গে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় মাগুরার সাবেক সাংসদ সালিমুল হক কামাল ও ব্যবসায়ী শরফুদ্দিন আহমেদের বিরুদ্ধেও গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছিল।
খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা রাজধানীর ক্যান্টনমেন্ট ও গুলশান থানায় এবং অন্য দুজনের পরোয়ানা রমনা থানায় পাঠানোর আদেশ দিয়েছিল ালত।
জিয়া অরফানেজ ট্রাস্টের অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে ২০০৮ সালের ৩ জুলাই রমনা থানায় মামলা করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। মামলায় ২ কোটি ১০ লাখ ৭১ হাজার ৬৪৩ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ আনা হয়। ২০০৯ সালের ৫ আগস্ট খালেদা জিয়া, তাঁর ছেলে তারেক রহমানসহ ছয়জনের বিরুভিযোগপত্র দেয় দুদক। গত বছরের ১৯ মার্চ খালেদা জিয়াসহ নয়জনের বিরু মামলায় অভিযোগ গঠন করেন আদালত।
বিচারক বাসুদেব রায়ের বিশেষ জজ আদালত-৩-এ এই মামলার বিচার কার্যক্রম চলছিল। তবে খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা আদালতের প্রতি অনাস্থা জানালে পরবর্তী সময়ে বিচারক বাসুদেব রায়ের পরিবর্তে এ আদালত পরিচালনার দায়িত্ব পান আবু আহমেদ জমাদার। এ মামলার অন্য আসামিরা হলেন হারিছ চৌধুরী, হারিছ চৌধুরীর সহকারী একান্ত জয়াউল ইসলাম এবং সাবেক মেয়র সাদেক হোসেন খোকার একান্ত মনিরুল ইসলাম খান। তথ্যসূত্রঃ আমাদের সময়