ডেস্ক রিপোর্ট : চলছে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগ (বিপিএল)। জমকালো আয়োজনের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশে তৃতীয় বারের মতো বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগের (বিপিএল)পর্দা উঠার সাথে সাথেই সিলেটে সর্বত্র শুরু হয়েছে জমজমাট বাজি নামক জুয়া খেলা। এতে জড়িয়ে পড়েছে স্কুল কলেজের ছাত্রছাত্রীসহ নানা পেশার মানুষ। এই জন্য অনেকেই আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছেন। অনেকেই নিজের মোবাইল থেকে শুরু করে খুইয়েছেন নগদ টাকা ও স্বর্ণালঙ্কার। শুধু বিত্তশালীরা নয় এতে আসক্তি হয়ে পরেছেন স্কুল পড়ুয়া ছোট ছোট শিশুরাও । যার ফলে উদ্বিগ্ন হয়ে পরেছেন অভিভাবকবৃন্দরা। এভাবে চলতে থাকলে যুবসমাজ ধ্বংসেরমুখে পতিত হবে বলে মনে করেন অভিভাবক মহল।গত কয়েক বছর যাবত নগরীর চায়ের দোকান,রেস্টুরেন্ট’এ বিপিএল খেলা দেখানো সম্পুর্ন নিষিদ্ধ ঘোষনা করেছে সিলেট মহানগর পুলিশ । কিন্তু নগরীর ঘুরে দেখা যায় ভিন্ন চিত্র। যার ফলে বিপিএল খেলাকে ঘিরে বাজিকরদের সংখা দিনদিন বাড়ছে।সিলেট নগরীর জিন্দবাজার, শাহী ঈদগাহ, শেখঘাট, বালুচর, নেহারিপাড়া, তেররতন, ঝালোপাড়া, সোনারপাড়া, শাপলাবাগ, টিলাগড়, মজুমদারি, লামাপাড়া প্রভৃতি এলাকার বস্তি, চায়ের দোকান, চায়ের হোটেলে বিপিএলকে ঘিরে বাজি ধরার প্রবণতা বেশি দেখা যায়।
শুধু নগরী নয়, নগরীর বাইরে শহরতলী টুকের বাজার,সোনাতলা, লামাকাজী,গবিন্দগঞ্জ এলাকাগুলোতে বেশ জমজমাট হারে চলছে জুয়ার আসর।নাম প্রকাশ করতে অনিচ্ছুক একজন ব্যবসায়ী জানান তার ছেলে রবিন। দশম শ্রেনীর ছাত্র। গতবছর থেকে বিপিএল জুয়ায় আসক্তি হয়ে পরে। যার ফলে সে লেখপড়া বাদ দিয়ে প্রতিদিন খেলা নিয়ে ব্যস্ত থাকে। এ নিয়ে তার পরিবারে অশান্তি দিনদিন বেড়েই চলেছে। শুধু রবিন নয় রবিনের মত এমন হাজারও শিশু জুয়া নামক এমন খেলায় আসক্তি হয়ে পরেছে বলে জানা যায়। যার ফলে বেড়ে চলছে পারিবারিক কলহ,বাড়ছে সামাজিক সমস্যাও।বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়,
ক্রিকেটের এই বাজির খেলায় ১শ’ থেকে ১ লক্ষ টাকা পযর্ন্ত বাজী ধরা হচ্ছে। বিপিএল খেলা শুরুর পর থেকে প্রতিদিন লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে বাজিকররা। জুয়াড়িরা বিভিন্ন গ্রুপে ভাগ হয়ে অংশগ্রহণকারী দুদলের মোট রান, খেলোয়াড়ের ব্যক্তিগত রান-উইকেট, ম্যাচ চলাকালে ওভার প্রতি ছক্কা-চার, ওভার প্রতি কত রান উঠতে পারে বা কয়টা উইকেট পড়তে পারে, ওভারে কোনো নো বল বা ওয়াইড হবে কি না এসব নিয়ে তাৎক্ষণিক নির্ধারিত হারে অর্থ বাজি ধরা হয়। থাকছে কোনো দলের
জয়-পরাজয়ের ওপর বড় অংকের বাজি। বিশেষ করে রাস্তার মোড়ের দোকান গুলোতেই বসে বেশি হচ্ছে এই খেলা। আবার এ ধরনের খেলায় তৈরী হচ্ছে এক ধরনের দালাল পক্ষ। যার কাজ হচ্ছে বাজিকর সংগ্রহ করা। এ জুয়া খেলার টাকা ভাগ বাটোয়ারা নিয়ে অনেকস্থানে হাতাহাতি ও বন্ধুদের মাঝে মনোমালিন্যর খবরও পাওয়া গেছে। বিশেষ করে বন্ধু-বান্ধব,প্রতিবেশী ব্যবসায়ীদের মাঝেই বেশি বাজি ধরা হয়ে থাকে।সূত্রে থেকে জানা যায়,মহল্লার কিছু দোকান মালিকরা বাজিকরদের মাধ্যম হিসেবে টাকা
জমা,আদান প্রদানসহ বাজি ধরার জুয়াড়ি ব্যবস্থা করে দিচ্ছেন।এ ব্যাপারে সিলেট মহানগর পুলিশের উপকমিশনার রহমত উল্লাহ জানান,নগরীর চায়ের দোকান,রেষ্টুরেন্ট বিপিএল খেলা দেখানো সম্পুর্ন নিষিদ্ধ ঘোষনা করেছে সিলেট মহানগর পুলিশ । তারা এ ব্যাপারে কোন ধরনের তথ্য পেলে উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন বলে তিনি জানান।