বিশ্বনাথে চেয়ারম্যান-ভাইস চেয়ারম্যান পক্ষের সংঘর্ষ : দুই পক্ষের পৃথক প্রতিবাদ সভা : উত্তেজনা
তজম্মুল আলী রাজু, বিশ্বনাথ থেকেঃ সিলেটের বিশ্বনাথে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও জেলা বিএনপি নেতা সুহেল আহমদ চৌধুরী এবং ভাইস চেয়ারম্যান ও জেলা বিএনপি নেতা আহমেদ-নুর উদ্দিনের পক্ষের পাল্টাপাল্টি হামলার ঘটনায় গতকাল শুক্রবার উপজেলা সদরের সর্বত্র চরম উত্তেজনা বিরাজমান ছিল। অজানা আতংঙ্কে নতুন ও পুরাণবাজার এলাকার বেশির ভাগ ব্যবসা প্রতিষ্ঠানই বন্ধ ছিল। এতে ব্যবসা-বাণিজ্যে পড়েছে ভাটা ও যানবাহন চলাচলও ছিল কম। সকাল থেকে উপজেলা সদরের গুরত্বপূর্ণ পয়েন্টে থানা পুলিশের অবস্থান ছিল লক্ষণীয়।
উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সুহেল আহমদ চৌধুরীর উপর হামলার প্রতিবাদে পুরাণবাজারের কলেজ রোড় এলাকায় ‘উপজেলাবাসী’র ব্যানারে এবং জানাইয়া গ্রামবাসীকে কটুক্তি করার প্রতিবাদে নুতনবাজার লাইটেস ষ্ট্যান্ডে জানাইয়া গ্রামবাসীর উদ্যোগে পৃথক প্রতিবাদ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
জানাইয়া গ্রামকে নিয়ে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সুহেল আহমদ চৌধুরীর গ্রাম কারিকোনাসহ তাঁর পক্ষের অনুসারীদের করা কুটুক্তির প্রতিবাদে আয়োজিত প্রতিবাদ সভায় সভাপতিত্ব করেন গ্রামের প্রবীন মুরব্বী নোয়াব আলী মেম্বার। স্থানীয় ইউপি মেম্বার নূরুল হকের পরিচালনায় বক্তব্য রাখেন উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান ও জানাইয়া গ্রামের বাসিন্দা আহমেদ-নুরউদ্দিন, গ্রামের মুরব্বী মবশ্বির আলী, আয়না মিয়া, জমসেদ আলী, ময়না মিয়া, মকদ্দছ আলী।
সভায় বক্তারা বলেন, ভবিষ্যতে জানাইয়া গ্রামকে নিয়ে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বা তাঁর অনুসারীরা কোন কটুক্তি করলে সাথে সাথে এর উচিত জবাব দেওয়া হবে বলে হুসিয়ারী উল্লেখ করে এব্যাপারে তাঁদের সতর্ক থাকার আহবান করেন। পাশাপাশি উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান আহমেদ-নুরউদ্দিন বলেন উপজেলা চেয়ারম্যান আমাকে (নুর) হত্যা করার জন্য কোটি টাকার বাজেট করেছেন। আমি বিশ্বনাথবাসীকে বিষয়টি জানিয়ে রাখলাম। উপজেলাবাসীর সম্পদ আমি (নুর) তাঁকে (লুটপাঠ) করে খেতে দিব না। প্রয়োজনে মৃত্যুবরণ করতে আমি রাজি আছি।
উপজেলাবাসীর ব্যানারে বীরমুক্তিযোদ্ধা তৈয়ব আলীর সভাপতিত্বে ও উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক সহ-সভাপতি মোতাহের আলীর পরিচালনায় আয়োজিত প্রতিবাদ সভায় বক্তব্য রাখেন উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ও অলংকারী ইউপি চেয়ারম্যান লিলু মিয়া, উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি শাহ আসাদুজ্জামান আসাদ, উপজেলা বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক আবদুল হাই, উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা দলের আহবায়ক সৈয়দ রাজ্জাক আলী, বৃক্ষপ্রেমিক আব্দুল গফ্ফার উমরা মিয়া, পুরানবাজার বণিক কল্যাণ সমিতির সভাপতি মনির হোসেন, প্রবাসী তসিল খান, আব্দুর রব, মাসিক বিশ্বনাথ ডাইজেস্ট সম্পাদক রফিকুল ইসলাম জুবায়ের, বিএনপি নেতা আসাদুজামান নূর আসাদ, ইউপি সদস্য ডাক্তার আছাবউদ্দিন আছকির, উপজেলা যুবদলের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল মোমিন মামুন, উপজেলা ছাত্রলীগের আহবায়ক ফয়জুল ইসলাম জয়, উপজেলা ছাত্রনেতা আলাল আহমদ, জামাল হোসেন, লিটন শিকদার, ফজলুর রহমান।
সভায় বক্তারা বলেছেন, শক্তহাতে এখন থেকে সন্ত্রাসীদের দমন করতে হবে। এভাবে বসে থাকা যাবেনা। ৭দিনের মধ্যে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন না করলে আগামী শুক্রবার রামসুন্দর অগ্রগামী উচ্চ বিদ্যালয় মাঠ থেকে কটোর কর্মসূচি ঘোষনা করা হবে।
প্রসঙ্গত, ‘টিআর-কাবিখা-এডিপি’ প্রকল্প রেজুলেশনে ‘অন্তর্ভূক্তি ও বাতিল’ করা নিয়ে উপজেলা পরিষদের সম্বন্বয় কমিটির সভায় উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও জেলা বিএনপি নেতা সুহেল আহমদ চৌধুরী এবং ভাইস চেয়ারম্যান ও জেলা বিএনপি নেতা আহমেদ-নুর উদ্দিনের মধ্যে বাগবিতন্ডা ও হাতাহাতির ঘটনার জের ধরে পরবর্তি সময়ে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সুহেল আহমদ চৌধুরীর উপর হামলা এবং জানাইয়া গ্রামবাসীকে নিয়ে কটুক্তির জের ধরে বৃহস্পতিবার বিকেলে দুই পক্ষের মধ্যে একাধিক বার ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে।