বিশ্বনাথে উপজেলা পরিষদের মাসিক সভায় হামলা : চেয়ারম্যানসহ আহত ৩০ : পুলিশের ১১ রাউন্ড গুলি
তজম্মুল আলী রাজু, বিশ্বনাথ: সিলেটের বিশ্বনাথে উপজেলা পরিষদের মাসিক সম্বনয় সভায় হামলায় উপজেলা চেয়ারম্যানসহ অন্তন ৫জন আহত হয়েছেন। বৃহস্পতিবার বেলা আড়াইটায় উপজেলা পরিষদের হল রুমে এঘটনা ঘটে। আহতরা হলেন-বিশ্বনাথ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সুহেল আহমদ চৌধুরী, অলংকারি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. লিলু মিয়া। অন্যান্য আহতদের নাম জানাযায়নি। গুরুতর আহত অবস্থায় উপজেলা চেয়ারম্যান সুহেল আহমদ চৌধুরীকে প্রাথমিক চিকিৎসা প্রদান করা হয়। এনিয়ে এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে। খবর পেয়ে বিপুল সংখ্যক পুলিশ উপজেলা পরিষদের অবস্থান নেয়। এঘটনায় উপজেলা পরিষদের পক্ষ থেকে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে বলে জানাগেছে।
এদিকে, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের ওপর হামলার প্রতিবাদে তাক্ষনিকভাবে এলাকাবাসী উপজেলা সদরের বিক্ষোভ মিছিল বের করে। মিছিল শেষে উপজেলা সদরের নতুনবাজারস্থ অটোরিকশা ষ্ট্যান্ডে সামনে প্রতিবাদ সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে এলাকার বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ বক্তব্য প্রদান করেন।
বক্তারা বলেছেন, উপজেলা পরিষদের ভাইস-চেয়ারম্যান আহমদ নূর উদ্দিনের সন্ত্রাসী বাহিনী পরিষদের চেয়ারম্যান সুহেল আহমদ চৌধুরীর ওপর হামলাকারীদের অভিলম্ভে গ্রেফতার করে দৃষ্ঠান্তমূলক শান্তির দাবি জানান।
অপরদিকে, গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেল সাড়ে ৪টায় উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সুহেল আহমদ চৌধুরী ও ভাইস চেয়ারম্যান ভাইস চেয়ারম্যান আহমদ নূরউদ্দিন পক্ষের লোকজনের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা-ধাওয়া ও সংর্ঘষের ঘটনা ঘটে। এতে উভয় পক্ষের অনন্ত ২৫জন আহত হয়েছেন বলে খবর পাওয়া গেছে। উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পক্ষের নিজামউদ্দিন গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। অন্যান্য আহতরা হলেন চেয়ারম্যান পক্ষের জয়নালসহ অন্তত ১০ জন। ভাইস-চেয়ারম্যান পক্ষের আহতরা হলেন শাহিন, ওয়াসিম, জুনাই, জুনাব আলী, রুবেল, সাজন, জিতু, লিটন, সমর অন্যান্য আহতদের নাম জানাযায়নি। এ ঘটনায় এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনতে পুলিশ ১১ রাউন্ড সটগানের গুলি নিক্ষোপ করে। এতে পরিস্থিতি শান্ত হয়।
জানাগেছে, গতকাল বৃহস্পতিবার বেলা ২টায় উপজেলা পরিষদের মাসিক সম্বনয় সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় উপজেলা নির্বাহী অফিসারসহ পরিষদের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। এসময় পরিষদের সদস্যদের মধ্যে এলাকার উন্নয়ন বন্টন নিয়ে আলাপ-আলোচনা শুরু হয়। এতে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সুহেল আহমদ চৌধুরী তার বক্তব্যে পেশ করেন। এতে উপজেলা পরিষদের ভাইস-চেয়ারম্যান আহমদ-নূর-উদ্দিন উপজেলা চেয়ারম্যানের বক্তব্যে ওপর আপত্তি তুলেন। এসময় হঠাৎ কয়েকজন যুবক পরিষদের হল রুমে এসে দেশীয় অস্ত্র-সস্ত্র নিয়ে হামলা চালায়। এতে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানসহ ৫জন আহত হন।
এব্যাপারে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সুহেল আহমদ চৌধুরী বলেন, পরিষদের সভা চলাকালিন সময়ে পরিষদের ভাইস-চেয়ারম্যান আহমদ নূর উদ্দিনের ইন্ধনে কয়েকজন সন্ত্রাসী অস্ত্র-সস্ত্র নিয়ে হামলা চালায়।
ভাইস-চেয়ারম্যান আহমদ নূরউদ্দিন বলেন, উপজেলার কোনো প্রকল্প আমাদের ভাইস চেয়ারম্যানদের দেয়া হয়নি। সকল প্রকল্প উপজেলা চেয়ারম্যান আত্বাসাৎ করেন। পরিষদের সভায় আমরা প্রতিবাদ জানাই। এতে চেয়ারম্যানের অনুসারীদের মধ্যে হটগুল শুরু হয়। তবে চেয়ারম্যানের ওপর হামলার বিষয়টি জানা নেই।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মুহাম্মদ আসাদুল হক বলেন, সম্বনয় সভায় অনাকাংখিত ঘটনা দুঃখজনক। এ ঘটনায় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে বলে তিনি জানান।
থানার অফিসার ইন-চার্জ মো. রফিকুল হোসেন বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে ১১ রাউন্ড টিয়ারসেল নিক্ষোপ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে। এলাকার পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে।
এদিকে বিশ্বনাথ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সুহেল আহমদ চৌধুরী উপর সমন্বয় সভায় সন্ত্রাসী হামলার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন বিশ্বনাথ সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জালালউদ্দিন, লামাকাজি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কবির হোসেন ধলা মিয়া, খাজাঞ্চি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নিজামউদ্দিন সিদ্দিকী, অলংকারী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. লিলু মিয়া, রামপাশা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আনোয়ার খান, দৌলতপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্বাস আলী, দেওকলস ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান তাহিদ মিয়া, দশঘর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান (ভারপ্রাপ্ত) হাবিবুর রহমান ছাতির।