বউ পিটিয়ে বাংলাদেশ পালিয়ে গেলেন স্থায়ী মিশনের কর্মকর্তা

nari nirjatonনিউইয়র্ক থেকে এনা: নিউইয়র্কস্থ বাংলাদেশ কন্স্যুলেটের এক সময়ের কন্স্যাল জেনারেল মনিরুল ইসলাম কাজের ছেলের উপর নির্যাতন করে সংবাদপত্রের শিরোনাম হয়েছিলেন। গৃহকর্মীর উপর নির্যাতন করায় তার উপর মামলা দায়ের করে ঐ গৃহকর্মী। মামলাকে এড়ানোর কৌশল হিসাবে এক সময় তিনি পালিয়ে চলে গিয়েছিলেন মরক্কো। সেখানে তিনি বর্তমানের রাষ্ট্রদূতের দায়িত্ব পালন করছেন। সেই ঘটনার নিষ্পত্তি হতে না হতেই জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশ স্থায়ী মিশনের আরেক কর্মকর্তা বউ পিটিয়ে পালিয়ে বাংলাদেশে চলে গিয়েছেন। বউ নির্যাতনকারী এই কর্মকর্তার নাম হচ্ছে আইনুজ্জামান।
একটি সূত্রে জানা গেছে, বাংলাদেশ স্থায়ী মিশনে কর্মকর্তারা আইনুজ্জামান প্রায় ৪ বছর আগে স্থায়ী মিশনের যোগদান করেন। চার চাকরির মেয়াদ শেষ হলেও তিনি এক্সটেনশন নিয়ে স্থায়ী মিশনে প্রটোকল অফিসার পদে কাজ করছিলেন। এই কর্মকর্তা তার পরিবার পরিজন নিয়ে ফøাশিং এর একটি বাসায় থাকতেন। বাসায় তিনি স্ত্রী, ১ ছেলে এবং ১ মেয়ে নিয়ে থাকতেন। সূত্র জানায়, কয়েক মাস ধরেই তাদের সংসারে অশান্তি চলছিলো। সেই পারিবারিক অশান্তিকে কেন্দ্র করে আইনুজ্জামান তার স্ত্রীর সাথে খারাপ ব্যবহার করতেন। মাসখানি আগে তিনি তার স্ত্রীকে বেড়দকভাবে পিটিয়েছেন। এ ব্যাপারে তার স্ত্রী পুলিশকে বিষয়টি জানায় এবং তার স্বামীর বিরুদ্ধে নির্যাতনের মামলা দায়ের করেন। মামলা করার পর পুলিশ কূটনীতিক আইন অনুযায়ী তাকে সাথে সাথে গ্রেফতার করতে পারে না। পুলিশ গ্রেফতার করতে না পারলেও স্থায়ী মিশনে গিয়ে কোর্টে হাজির হবার জন্য কোর্ট নোটিশ সার্ব করার চেষ্টা করেন। একবার নয় পুলিশ দুইবার সেই নোটিশ দেয়ার চেষ্টা করেন। কিন্তু আইনুজ্জামান সেই নোটিশ গ্রহণ করেননি। নোটিশ গ্রহণ না করেই তিনি প্রায় ১০ দিন আগে পালিয়ে বাংলাদেশে চলে যান। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মিশনের একজন কর্মকর্তা বউ পিটানোর ব্যাপারে কোন কিছু না জানাতে অপারগা প্রকাশ করে বলেন, বাংলাদেশে তার অসুস্থ মা দেখার জন্য তিনি বাংলাদেশে চলে গিয়েছেন।
এদিকে মামলা করার পাশাপাশি আইনুজ্জামানের স্ত্রী ও আত্মীয়- স্বজনরা স্থায়ী মিশনে যান বিচার প্রার্থনার জন্য। এই সময় স্থায়ী মিশনের স্থায়ী প্রতিনিধি কেউ ছিলেন না। স্থায়ী প্রতিনিধি ড. এ কে মোমেন চাকরি শেষে বাংলাদেশে চলে গিয়েছিলেন এবং নতুন স্থায় প্রতিনিধি মাসুদ ইবনে মোমেন তখনো কাজে যোগদান করেননি। ঐ সময় স্থায়ী মিশনের অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। তাদের কাছেই স্বামীর নির্যাতনের কথা জানান আইনুজ্জামানের স্ত্রী। এ ব্যাপারে জানার জন্য নতুন স্থায়ী প্রতিনিধিকে ফোন করলেও তাকে পাওয়া যায়নি। তিনি বৈঠকে ব্যস্ত ছিলেন।
স্থায়ী মিশনের কর্মকর্তা আইনুজ্জামানের বউ পিটানোর ব্যাপারে স্থায়ী মিশনের কোন কর্মকর্তাই মুখ খুলতে রাজি নন। তবে আইনুজ্জানের বউ পিটানোর ঘটনা এখন বাংলাদেশী কম্যুনিটিতে টক অব দা টাউনে পরিণত হয়েছে।