সাকা ও মুজাহিদের ফাঁসিতে টরন্টোতে মিষ্টি উৎসব
সদেরা সুজন (সিবিএনএ) কানাডা থেকে।। নভেম্বরের শেষ সপ্তাহ । টরন্টোতে শীতের আগমনী বার্তা বেশ কয়েক সপ্তাহ আগেই চলে এসেছে । এখন বেশ অনেক ঠান্ডা পড়েছে । তারপরও টরন্টো অধিবাসী বাংলাদেশীদের জন্য সুদূর বাংলাদেশ থেকে নিয়ে এসেছে এক উষ্ণ বার্তা । দীর্ঘ ৪৪ বছরের অপেক্ষার অবসান ঘটিয়ে একই সঙ্গে ’৭১ এর দুই নর-ঘাতক, বুদ্ধিজীবী হত্যার নীলনক্সা পরিকল্পনাকারী, পাকিস্তানের দোসর সাকা চৌধুরী ও মুজাহিদের মৃত্যুদন্ড ফাঁসির মাধ্যমে কার্যকর করা পর যে উষ্ণ বার্তা টরন্টোতে এসে পৌছেছে এই শীতের আবহাওয়াও কাউকে ঘরে আটকিয়ে রাখতে পারেনি । তাই তো টরন্টো শহরের বিভিন প্রান্ত থেকে মিষ্টির প্যাকেট হাতে নিয়ে সতস্ফুর্ত ভাবে ছুটে এসেছিল বাঙ্গালী অধ্যুষিত ড্যানফোর্থ রোডস্থ মিজান কমপ্লেক্সের অডিটোরিয়ামে তাদের আবেগময় অনুভুতি ব্যক্ত করতে, আনন্দ প্রকাশ করতে ।
এরই মাঝে জনপ্রিয় ছড়াকার লুতফর রহমান রিটন রচনা করেন তাৎক্ষনিক অনুষ্ঠানের ছন্দোময় আনুষ্ঠানিক নাম “দুই ঘাতকের ফাঁসি, মিষ্টি উৎসবে মাতোয়ারা টরন্টোবাসী” আর সঙ্গে সঙ্গে মনির বাবু বাংলা কাগজ থেকে প্রিন্ট করে নিয়ে আসে ব্যানারটি ।
প্রখ্যাত কবি আসাদ চৌধুরী, অটোয়া থেকে আগত জনপ্রিয় ছড়াকার লুৎফর রহমান রিটন, বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ও কলামিস্ট ড. মোজাম্মেল খান, কবি দেলওয়ার এলাহী, কবি মৌ-মধুবন্তি, দেশে–বিদেশের সম্পাদক নজরুল ইসলাম মিন্টো, সাপ্তাহিক আজকালের সম্পাদকমন্ডলীর সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার গফফার চৌধুরী, বাংলা কাগজের প্রকাশক জাহাঙ্গী আলম, টরন্টো’র বিশিষ্ট সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব, নাট্য-নির্দেশক ও আবৃত্তিকার আহমেদ হোসেন, চলচ্চিত্র ব্যক্তিত্ব মনিস রফিক, চলচ্চিত্র নির্মাতা এনায়েত করিম বাবুল, লেখক সুব্রত কুমার দাস, লেখক তাসরীনা শিখা, কৃষিবিদ আবুল বাশার, সঙ্গীতশিল্পী তপন সাঈয়িদ, ফারহানা শান্তা, পারভীন হোসেন, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব দীনা সাঈয়িদ, মামুনুর রশীদ সহ আরো অনেক বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গের উপস্থিতিতে মিষ্টি উৎসবের আগে বিজওয়ান আহমেদের সঞ্চালনা ও মনির বাবু’র ব্যবস্থাপনায় এক সংক্ষিপ্ত আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয় ।
কবি আসাদ চৌধুরী সহ সকল বক্তারাই তাদের বক্তব্যে বাংলাদেশে চলমান মানবতাবিরোধী আন্তর্জাতিক ট্রাইবুনালের সকল বিচার কার্যে সন্তোষ প্রকাশ করেন, অন্যান্য মানবতাবিরোধী অপরাধীদের বিচারকাজ দ্রুত সম্পাদনের আহবান জানান । বক্তাদের সকলেই বাংলাদেশের বর্তমান সরকার তথা জননেত্রী শেখ হাসিনা’র মানবতাবিরোধী অপরাধীদের বিচারকাজ সম্পন্ন করার দৃঢ়তার প্রশংসা করেন এবং তাঁর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন । আলোচনা শেষে দর্শকদের অনুরোধে ছড়াকার লুতফর রহমান রিটন রাজাকারদের নিয়ে ১৯৭৯ রচিত তাঁর সেই বিখ্যাত ছড়া “কন ত দেহি দেশে সবচেয়ে বেশী শরীর তাজাকার, যেই শালারা রাজাকার………”। তারপর সবাই মিষ্টি উৎসবে যোগ দেয়।কানাডার প্রবাসী অধ্যুষিত অন্যান্য শহরেও যুদ্ধাপরাধীদের ফাঁসির খুশিতে মিষ্ঠি বিতরনের খবর পাওয়া গেছে।
ছবিঃ মনির বাবু’র সৌজন্যে