সুনামগঞ্জে রাতের আঁধারে সড়কের পাশের গাছ সাবাড়!
সুরমা টাইমস ডেস্কঃ সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর-পাগলা সড়কের পাশ থেকে রাতের আঁধারে গাছ কেটে নিয়ে যাচ্ছে স্থানীয় লোকজন। গত দুই মাসে শতাধিক গাছ কেটে নেওয়া হয়েছে। তবে গাছ কাটার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের শনাক্ত করতে পারেনি প্রশাসন। তদারকি না থাকায় গাছগুলো অবাধে কেটে নেওয়া হচ্ছে বলে এলাকাবাসী অভিযোগ করেছেন।
স্থানীয় কয়েক ব্যক্তি বলেন, জগন্নাথপুর-পাগলা সড়কের দৈর্ঘ্য ২১ কিলোমিটার। সড়ক ও জনপথ বিভাগের সুনামগঞ্জ কার্যালয় ২০০০ সালে জগন্নাথপুর-পাগলা সড়কের দুই পাশে মেহগনি, রেইনট্রি, আম, বরইসহ বিভিন্ন প্রজাতির গাছের চারা লাগিয়েছিল। এখন গাছগুলো বেশ বড় হয়েছে। কিছুদিন ধরে সড়কের গয়াসপুর, ধারাখাই, কোনাখালী, মজিদপুর এলাকা থেকে গাছ কেটে নেওয়া হচ্ছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, সড়কের গয়াসপুর এলাকার দুই পাশ থেকেই বেশ কিছু গাছ কেটে নেওয়া হয়েছে। এখানে কাটা গাছের ৩১টি গোড়া দেখা গেছে। জ্বালানির জন্য এসব গাছের গোড়া কাটছিলেন গ্রামের বৃদ্ধ আজিজুর রহমান ও সুফিয়া খাতুন। তাঁরা বলেন, এসব গাছ কারা কেটে নিয়েছে তাঁরা তা জানেন না। কাউকে গাছ কাটতেও দেখেননি। গোড়া পড়ে আছে তাই লাকড়ির জন্য এসব তুলে নিচ্ছেন।
আজিজুর রহমান আরও বলেন, রাতে এসব গাছ কাটা হয়। শুধু গয়াসপুর নয়, সড়কের আরও কয়েকটি এলাকা থেকে এভাবে গাছ কেটে নেওয়া হয়েছে। মজিদপুর গ্রামের গোপী বৈদ্য বলেন, ‘রাস্তার পাশ থেকে গাছ না কাটার লাগি একবার অফিসাররা আইয়া কইয়া গেছইন। মানুষে তখন কইছ লা কেউ গাছ কাটলে তারারে খবর দিবা। এরপরও দেখছি গাছ কাটা অর।’
গয়াসপুর গ্রামের কলেজছাত্র সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘যেভাবে গাছ কাটা হচ্ছে তাতে একসময় দেখা যাবে সড়কের পাশে আর গাছ নেই। গাছ কাটা বন্ধে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের এখনই উদ্যোগ নেওয়া উচিত।’ ধারাখাই, কোনাখালী, মজিদপুর, দরগা পাশা এলাকায় গিয়েও একইভাবে সড়কের দুই পাশ থেকে কেটে নেওয়া গাছের বেশ কিছু গোড়া দেখা যায়।
গয়াসপুর এলাকায় দেখা হয় সুনামগঞ্জ সড়ক ও জনপথ বিভাগের কর্মচারী ফরিদ আহমদের সঙ্গে। তিনি বলেন, রাতের আঁধারে এসব গাছ কেটে নেওয়া হচ্ছে। স্থানীয় লোকজন এসব গাছ কাটার সঙ্গে জড়িত। কিন্তু কাউকে হাতেনাতে না ধরতে পারলে তো আর কিছু বলা যায় না।
জগন্নাথপুর উপজেলা নাগরিক ফোরামের সভাপতি নুরুল হক বলেন, ‘গত দুই মাসে এই সড়কের পাশ থেকে শতাধিক গাছ কেটে নেওয়া হয়েছে। কিন্তু গাছ কাটা বন্ধে সওজ বিভাগের কোনো উদ্যোগ দেখছি না।’ সওজের সুনামগঞ্জ কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী আনোয়ারুল আমিন বলেছেন, তিনি বিষয়টি জানেন না। খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন।