নূর হোসেনের হাসি কিসের ইঙ্গিত?
সুরমা টাইমস ডেস্কঃ নারায়ণগঞ্জের বহুল আলোচিত সাত খুন মামলার প্রধান আসামি নূর হোসেনকে বাংলাদেশে আনার পর সকালে উত্তরা র্যাব হেডকোয়ার্টারে আয়োজিত প্রেস ব্রিফিংয়ে এবং নারায়ণগঞ্জ আদালতে তোলার সময় তিনি ছিলেন অনেকটা হাস্যোজ্জল ও স্বাভাবিক। তার মুখমণ্ডল ছিল ক্লিন সেভ, চেহারায় ছিল জৌলুস। মাথার চুল ছিল সাজানো-গোছানো। পরনে ছিল পরিপাটি জামাকাপড়।
নূর হোসেনের এই হাস্যেজ্জোল চেহারা নিয়ে জনমনে রহস্যের সৃষ্টি হয়েছে। নূর হোসেনকে নারায়ণগঞ্জ পুলিশ লাইন থেকে কঠোর নিরাপত্তাব্যবস্থায় আদালতে নিয়ে এসেছেন নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশের একজন উপ-পরিদর্শক। নাম প্রকাশ না করার শর্তে তিনি জানান, নারায়ণগঞ্জ পুলিশ লাইন থেকে হাতকড়া পরিয়ে তাকে আদালতপাড়ায় নিয়ে আসা এবং মামলার শুনানিকালে আদালতের কাঠগড়ায় প্রায় ১০/১২ মিনিট দাঁড়িয়ে থাকার সময় নূর হোসেন ছিলেন অনেকটা স্বাভাবিক ও সাবলীল। সাত খুনসহ একাধিক অপকর্মের নায়ক নূর হোসেনের মধ্যে কোনো অপরাধবোধের ছাপ লক্ষ্য করা যায়নি।
ওই পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, নূর হোসেনকে যখন আদালতে তোলা হয় তখন চারদিকে তার ফাঁসির দাবিতে স্লোগান চলছি। কিন্তু এতে তার চোখে-মুখে কোনো ভীতির ছাপ লক্ষ্য করা যায়নি। উল্টো তিনি সবখানেই ছিলেন হাস্যোজ্জল।
গত বৃহস্পতিবার রাত ১১টায় যশোরের পেট্রাপোল সীমান্ত এলাকা দিয়ে পুশব্যাকের মাধ্যমে নূর হোসেনকে র্যাবের কাছে হস্তান্তর করে ভারতীয় বিএসএফ। পরে তাকে র্যাব, পুলিশের কড়া নিরাপত্তাব্যবস্থার মধ্য দিয়ে বেনাপোল থেকে সরাসরি ঢাকা উত্তরা র্যাব-১ হেডকোয়াটারে নিয়ে আসা হয় ভোর ৬টা ৪৫ মিনিটে। পরে র্যাবের মিডিয়া উইংয়ের প্রধান মুফতি মাহমুদ উপস্থিত সাংবাদিকদের জানান, সাত খুন মামলার প্রধান আসামি নূর হোসেনকে ভারত থেকে নিয়ে আসা হয়েছে। র্যাব কার্যালয়ে তার স্বাস্থ্য পরীক্ষা শেষে তাকে নারায়ণগঞ্জে নিয়ে যাওয়া হবে। এ সময় উপস্থিত সাংবাদিকদের সামনে নূর হোসেনকে হাজির করা হলে নূর হোসেনকে হাসিমুখে দেখা যায়। পরে সেখান থেকে র্যাব পুলিশের ১২ জিপ ও মাইক্রোবাসের কড়া প্রহরায় নূর হোসেনকে সকাল ৮টা ২০ মিনিটে নারায়ণগঞ্জ পুলিশ লাইনে নিয়ে আসা হয়। নারায়ণগঞ্জ পুলিশ লাইন থেকে দুপুর ২টা ৩০ মিনিটে রওনা হয়ে কঠোর নিরাপত্তাব্যবস্থা মধ্য দিয়ে ২টা ৩৬ মিনিটে নারায়ণগঞ্জ চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শহীদুল ইসলামের আদালতে তোলা হয়। প্রায় ১০/ ১২ মিনিটে আদালতে শুনানি চলার সময় নূর হোসেন ছিলেন হাস্যোজ্জল ও স্বাভাবিক।
এ ব্যাপারে সাত খুন মামলার আইনজীবী অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খান ঢাকাটাইমসকে বলেন, ইলেকট্রনিক্স মিডিয়া ও ফেসবুকে নূর হোসেনের হাস্যোজ্জল ছবি ছড়িয়ে পড়েছে। তার এই ছবিই বলে দেয় নূর হোসেনের পেছনে প্রভাবশালী ছায়া রয়েছে। সাত খুন মামলার সুষ্ঠু বিচার নিয়েও সন্দীহান এই আইনজীবী নেতা।