বিয়ের চারদিনের মধ্যেই স্ত্রী’র চুল কেটে হাত ভেঙে দিলো যৌতুকলোভী স্বামী
সুরমা টাইমস ডেস্কঃ সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার নারায়ণপুর গ্রামে যৌতুক না পেয়ে বিয়ের ৪দিনের মাথায় তাসলিমা বেগম কলি নামের এক নববধুর চুল কেটে, হাত ভেঙে দিয়েছে স্বামী আব্দুর রহীমসহ শ্বশুর বাড়ির লোকজন। সোমবার রাতে এ ঘটনা ঘটে। মঙ্গলবার সকালে তাকে সিলেট ওসমানী হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
স্বজনেরা জানান, সতের বছরের এই তরুণিটির বাবা নেই, মা মানসিক ভারসাম্যহীন। মামার বাড়িতে বড় হয়েছে সে। অনেক স্বপ্ন নিয়ে শুক্রবার বিয়ের পিড়িতে বসেছিল তরুণি তাসলিমা। কিন্ত হাতের মেহেদির রং ধুয়ে যাবার আগেই সোমবার রাতে স্বামী নামের পশুটি হামলে পড়ে তার ওপর।
যৌতুক হিসেবে মোটর সাইকেল ও পাঁচ লক্ষ টাকা দাবি করে সে। মেয়েটি অপরাগতা জানালে বেধড়ক মারপিট করা হয় তাকে। কেটে দেওয়া হয় তার চুল। স্বামীর সাথে যোগ দেয় মুরব্বী গোছের আরো দুজন। হাতে মেহেদির রং আর চোখে নতুন দিনের স্বপ্ন নিয়ে এমন নির্যাতনের শিকার মেয়েটি হারিয়ে ফেলেছে কিছু বলার ভাষাও।
নির্যাতনের শিকার তাসলিমা ভোলাগঞ্জের মাহমুদ আলীর মেয়ে। ৬ মাস আগে তার বিয়ে ঠিক হয় একই উপজেলার নারায়ণপুর গ্রামের শাহবুদ্দিনের ছেলে আব্দুর রহীমের সাথে। শুক্রবার তাদের বিয়ে হয়। সোমবার রাতেই যৌতুকের দাবিতে তার ওপর চলে নির্যাতন। মংগলবার ভোরে প্রতিবেশির মাধ্যমে খবর পেয়ে তাকে উদ্ধার করে স্বজনরা।
হাসপাতালে উপস্থিত কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার ভাইস চেয়ারম্যান নাসরিন জাহান ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, প্রশাসনের উচিত এ ধরনের নির্যাতন রোধে নিজে থেকে এগিয়ে আসা। তাসলিমার চিকিৎসার সহায়তার পাশাপশি তিনি আইন শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রতি জড়িতদের গ্রেফতারের দাবী জানান।
এদিকে সিওমেক এর অর্থপেডিক্স ইউনিট-২ এর ডা. ফয়সাল আহমেদ মুহিন জানান, তাসলিমার শরীরে বেশ কিছু আঘাতের চিহ্ন আছে। তবে তার সুস্থতার জন্য সব ধরনের চেষ্টাই চালানো হচ্ছে।
সন্ধ্যায় সিলেট এমএজি ওসমানী হাসপাতালের ওসিসি’তে (ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টার) স্থানান্তর করা হয়েছে তাসলিমাকে।
কোম্পানীগঞ্জ থানার পুলিশ কর্মকর্তরা জানিয়েছেন ঘটনার পর থেকে নির্যাতনকারী স্বামী রহীম পলাতক রয়েছে। ঘটনায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে। আব্দুর রহীমকে আটকে অভিযান চলছে।