শোষণহীন সমাজ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে দূর্বার আন্দোলন গড়ে তোলার আহবান
মৌলভীবাজারে মহান রুশ বিপ্লবের ৯৮-তম বার্ষিকীতে ট্রেড ইউনিয়ন সংঘের বক্তারা
মহান রুশ বিপ্লবের ৯৮-তম বার্ষিকী উপলক্ষে বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন সংঘ মৌলভীবাজার জেলা শাখা আয়োজিত এক আলোচনা সভায় বক্তারা বলেন ১৯১৭ সালের ৭ নভেম্বর কমরেড লেনিনের নেতৃত্বে বলশেভিক পার্টি রাশিয়ায় সমাজতান্ত্রিক বিপ্লব সম্পন্ন করে মানুষ কর্তৃক মানুষকে শোষণের শোষণমূলক সমাজ উচ্ছেদ করে শোষণহীন সমাজতান্ত্রিক সমাজ ব্যবস্থা কায়েম করে। পৃথিবীতে দাস সমাজ থেকে পুঁজিবাদী সমাজ পর্যন্ত সমাজ বিকাশের ক্রমধারায় বিভিন্ন স্তরে শ্রেণী শোষণের রূপের পরিবর্তন ঘটলওে মানুষ কর্ত্বক মানুষের উপর শোষণ অব্যাহত ছিল। রুশ বিপ্লবের মধ্যে দিয়েই পুজিঁবাদী সাম্রাজ্যবাদী শোষণমূলক ব্যবস্থার বিপরীতে শোষণহীন সমাজতান্ত্রিক সমাজ প্রতিষ্ঠিত হয়। একারণেই রুশ বিপ্লবের তাৎপর্য বিশ্ব শ্রমিকশ্রেণীর নিকট মহিমান্বিত। গতকাল ৭ নভেম্বর সন্ধ্যায় বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন সংঘ মৌলভীবাজার জেলা কমিটির অন্যতম নেতা ও জেলা রিকশা শ্রমিক সংঘের সভাপতি সোহেল আহমেদের সভাপতিত্বে চৌমুহনাস্থ কার্যালয়ে আয়োজিত সভায় বক্তারা উপরোক্ত বক্তব্য রাখেন। ট্রেড ইউনিয়ন সংঘের জেলা সম্পাদক রজত বিশ্বাসের পরিচালনায় আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য ধ্রুবতারা সাংস্কৃতিক সংসদ মৌলভীবাজার জেলা সভাপতি কবি শহীদ সাগ্নিক। এছাড়াও আলোচনা সভায় অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন জাতীয় গণতান্ত্রিক ফ্রন্ট-এনডিএফ কমলগঞ্জ উপজেলা কমিটির অন্যতম নেতা মৃগেন চক্রবর্তী, জেলা হোটেল শ্রমিক ইউনিয়নের জেলা সভাপতি মোঃ মোস্তফা কামাল ও সহ-সভাপতি মোঃ আব্দুল আজিজ প্রধান, রিক্সা শ্রমিক সংঘের জেলা সাংগঠনিক সম্পাদক কিসমত মিয়া, চা-শ্রমিক সংঘের নেতা শিশুলাল লোহার, ট্রেড ইউনিয়ন সংঘের জেলা কমিটির সাংস্কৃতিক সম্পাদক অমলেশ শর্ম্মা, প্রচার সম্পাদক তারেশ বিশ্বাস সুমন, প্রচার সম্পাদক শাহিন মিয়া, সদস্য মোঃ জসিমউদ্দিন, জালাল মিয়া, জয়নাল আবেদীন প্রমুখ। দেশের বর্তমান অস্থির অবস্থায় বক্তারা গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন সাম্রাজ্যবাদ ও তার দালালদের শোষণ-শাসনে শৃঙ্খলিত জনগণ গভীর উদ্বেগ ও উৎকন্ঠায় দিনাতিপাত করছেন। তারা এই দুঃসহ শোষণ-লুন্ঠন ও নৈরাজ্যিক অবস্থা থেকে মুক্তি চায়। জনগণের মুক্তির পথ হল জনগণের তিন শত্রু সাম্রাজ্যবাদ, সামন্তবাদ ও আমলা-দালাল পুঁিজ ও তাদের স্বার্থরক্ষাকারী স্বৈরাচারী সরকার ও রাষ্ট্রকে জাতীয় গণতান্ত্রিক বিপ্লবের মাধ্যমে পরিবর্তন সাধন করে শ্রমিক-কৃষক-জনগণের সংবিধান সভা, সরকার ও রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করা। এ ভিন্ন মুক্তি আর কোন পথ নেই। তাই আসুন রুশ বিপ্লবের চেতনায় সাম্রাজ্যবাদ ও তার দালাল সরকার বিরোধী সকল সংগঠন, শক্তি ও ব্যক্তি ঐক্যবদ্ধ হয়ে দূর্বার আন্দোলন-সংগ্রাম গড়ে তুলি ।
সভা থেকে সম্প্রতি ঢাকায় হোটেল শ্রমিক রিয়াদকে গুলি করে হত্যা করায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানানো হয় এবং অবিলম্বে খুনী হোটেল মালিক আরিফুল ইসলাম সোহেলকে গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদানের দাবি জানানো হয়।
সভা থেকে আর দাবি করা হয় বর্তমান বাজারদরের সাথে সংগতিপূর্ণভাবে শ্রমিক-কর্মচারীদের জন্য ন্যূনতম মূল মজুরি ১০ হাজার টাকা ঘোষণা, আইএলও কনভেনশন অনুযায়ী শ্রম আইন প্রণয়ন, ৮ ঘন্টা কাজ, শ্রম আইন কার্যকর, শ্রীমঙ্গলে স্থায়ী শ্রম আদালত ও যুগ্ম শ্রম পরিচালকের কার্যালয় স্থাপন, সমকাজে সমমজুরি, হোটেল ও স’মিলসহ বিভিন্ন সেক্টরে সরকার ঘোষিত নি¤œতম কার্যকর করার।