বিশ্বনাথে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বিদেশী শিক্ষক
তজম্মুল আলী রাজু বিশ্বনাথ: ব্রিটিশ স্কুল শিক্ষক পউলা জোনস বৃহস্পতিবার কানেকটিং প্রোগ্রামের অংশ হিসেবে কাস নিতে এসেছিলেন সিলেটের বিশ্বনাথের পল্লী গ্রাম বল্লভপুরে। বল্লভপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে কাস নিয়েছেন মাত্র ৩ ঘন্টা, এতে মুগ্ধ ওই বিদ্যালয়ের প্রায় শতাধিক শিক্ষার্থী। জীবনে এই প্রথম কোনো ভিনদেশি মানুষের সঙ্গে ভিন্ন ভাষায় কাস করে দারুন উৎপুল্ল শিক্ষার্থীরা। ভবিষ্যত জীবনে লেখাপড়ার প্রতি আরও মনযোগী করতে এ অভিজ্ঞতা খুবই অনুপ্রেরণা যোগাবে তাদের। এর সঙ্গে কোনো বিদেশী নাগরিকের কাছ থেকে পুরস্কার পাওয়া তাদের অনেকের কাছে চির স্মরণীয় হয়ে থাকবে বহুকাল এ কথা অনেকেই জানিয়েছে।
বল্লভপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও ব্রিটেনের সাউথ ওয়ালসের পেনীরেনগ্লীন কমিউনিটি প্রাইমারি স্কুলের মধ্যে কানেকটিং কাসরুম পার্টনারশীপ প্রোগ্রামের অংশ হিসেবে গত মঙ্গরবার বল্লভপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে আসে ২৭ সদস্যের ব্রিটিশ শিক্ষক ও ব্যবসায়ী প্রতিনিধিদল। ঐ দিন সফরকারীদের দলকে বিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে অভ্যর্থনা জানানো হয়। বৃহস্পতিবার কানেকটিং স্কুলের শিক্ষক পউলা জোনস বিদ্যালয়ে আসেন কাস নিতে। এইদিন তার সফর সঙ্গী হিসেবে আসেন কার্ডিফ সিটি কাউন্সিলের সাবেক ডেপুটি লর্ড মেয়র ও বতর্মান কাউন্সিলর আলী আহমদ। এসময় তাদেরকে স্বাগত জানান স্থানীয় কো-অর্ডিনেটর রফিকুল ইসলাম জুবায়ের,বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি দিলু মিয়া, বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকা রাহেলা আক্তার।
ব্রিটিশ এই শিক্ষিকা বিদ্যালয়ের সবকটি কাসে ছাত্র-ছাত্রীদের সঙ্গে আন্তরিক পরিবেশে সকাল ১১টা থেকে ২টা পর্যন্ত একনাগাড়ে তিন ঘন্টা সময় কাটান। তিনি আই প্যাড ও বই দিয়ে ছবিসহ তার স্কুলের পরিচিতি, সেখানকার স্কুলে লেখাপড়া প্রদানের দরন ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় তথ্য যেমন জানান, এর পাশাপাশি এখানকার লেখাপড়ার দরন জেনে যান এবং কিছু কিছু ক্ষেত্রে তিনি শিক্ষকদের কিছু পরামর্শও প্রদান করেন। কাসের ফাঁকে ফাঁকে প্রতিটি কাস রুমের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে হাসি মুখে ছবি আই প্যাড ও ক্যামেরার সাহায্যে তুলেন। শুধু তাই নয় সূদূর ওয়ালস থেকে এ বিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য নানান জাতের কলম, পেন্সিল ও কালারিং পেন্সিল তিনি নিজে প্রত্যেকের হাতে উপহার তুলে দেন।
পউলা জোনস প্রতিটি কাসে প্রায় ৩০ মিনিট সময় দিয়েছেন আর তাতেই দারুন মুগ্ধ ঐ স্কুলের প্রায় শতাধিক শিক্ষার্থী। ব্রিটিশ শিক্ষিকা পউলা জোনস প্রত্যেক শিক্ষার্থীদের কেবল একটি করে উপহার দিয়ে থেমে থাকেননি। উপহার দিয়েছেন বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষিকাদেরও। আর বিদায় বেলায় স্মৃতির নিদর্শন হিসেবে দিয়ে গেছেন তার নিজ দেশের পতাকা, তার স্কুলের ইউনিফর্ম এবং আসন্ন বার্ষিক পরীক্ষা উপলক্ষে ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য ব্যাগভর্তি কলম, পেন্সিল এবং নানান জাতের গল্পের বই। আর স্মৃতির অংশ হিসেবে নিয়ে গেছেন বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা।
বিদ্যালয়ের ছাত্র আবুল হোসেন বলেন, ব্রিটিশ শিক্ষক আমাদের কাস নিয়েছে। এতে আমরা শিক্ষার্থীরা অনেক আনন্দিত। বিদেশী নাগরিকের কাছ থেকে পুরস্কার পাওয়া চির স্মরণীয় হয়ে থাকবে বলে জানায়।
বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত শিক্ষিকা রাহেলা আক্তার বলেন, শিক্ষার্থীরা বিদেশি শিক্ষক কে কাছে পেয়ে খুব খুশি হয়। বিদেশি শিক্ষক কলম, পেন্সিল তিনি নিজে প্রত্যেক শিক্ষার্থীর হাতে তুলে দেন।