ওসমানীতে রোগী মৃত্যুর ঘটনায় তুলকালাম, ধর্মঘটে ইন্টার্ণ চিকিৎসকরা
সুরমা টাইমস ডেস্কঃ সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এক রোগীর মৃত্যু ও ডাক্তারকে মারধোরের ঘটনায় কেন্দ্র করে তুলকালাম ঘটনা ঘটেছে। রাত সোয়া ১০ টায় রোগীর আটকে রাখো লাশ ফেরত দিলেও মৃতের বড় ছেলেকে আটকে রেখেছেন ইন্টার্নি চিকিৎসকরা। পাশাপাশি অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘটের ডাক দিয়েছেন ইন্টার্ণ চিকিৎসকরা। এ নিয়ে সিলেট এমএজি ওসমানী হাসপাতালে উত্তেজনা বিরাজ করছে।
বুধবার রাতে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় দরগাহ গেইট এলাকার আবদুর রশিদের (৭০) মৃত্যু হয়। তিনি হৃদরোগ বিভাগে চিকিৎসাধীন ছিলেন। রাত ৮ টার দিকে তার শরীর বেশি অসুস্থ হলে স্বজনরা ডাক্তারদের কাছে গিয়ে বিষয়টি জানান। এসময় ডাক্তাররা তাদের সাথে খারাপ আচরণ করেন। এদিকে অসুস্থ আবদুর রশিদ ঢলে পড়েন মৃত্যুর কোলে। পরে নিহতের স্বজনরা আরোও রাগান্বিত হয়ে পড়েন। তারা কর্তব্যরত চিকিৎসককে মারধোর করেন।
এ ঘটনার প্রতিবাদে ইন্টার্নি ডাক্তাররা সাথে সাথেই ক্ষুব্দ হয়ে পড়েন। তার নিহতের লাশ ও তার বড় ছেলে জহুরুল ইসলামকে আটকে রাখেন। বন্ধ করে নেন হৃদরোগ বিভাগসহ সকল বিভাগের চিকিৎসা কার্যক্রম। তবে জরুরি বিভাগের চিকিৎসা কার্যক্রম চালু ছিল। মিছিল শ্লোগানে ডাক্তাররা নিহতের ছেলের বিচার দাবি করেন।
কোতোয়ালি থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে অবস্থান করছে। রাত সোয়া দশটার দিকে পুলিশ প্রহরায় আটকে রাখা লাশ ফেরত দিয়েছেন ডাক্তাররা। তবে নিহতের ছেলেকে এখনো আটকে রাখা হয়েছে।
ইন্টার্ণ চিকিৎসক পরিষদের সভাপতি মো. মাজহারুল হক অমিত জানান, সিসিইউ ইউনিটে নগরীর দরগা মহল্লার আব্দুর রশিদ নামের এক রোগী মৃত্যুবরণ করেন। এই রোগীর মৃত্যুর পর তার স্বজনরা কর্তব্যরত চিকিৎসক শোয়েব আহমদ ও ইন্টার্ণ চিকিৎসক সুবায়ের আহমদের উপর হামলা চালায়। পরে ইন্টার্ণ চিকিৎসকরা চিকিৎসা সেবা বন্ধ করে হাসপাতালের জরুরী বিভাগের সামনে বিক্ষোভ করেন। বিক্ষোভকালে হামলাকারীদের গ্রেপ্তার ও তাদের দৃষ্টান্তমুলক শাস্তির দাবিতে অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘটের ঘোষনা দেন ইন্টার্ণ চিকিৎসকরা ।
মাজহারুল হক অমিত বলেন, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ হামলাকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিলে এবং ঘটনার সুষ্ঠু বিচার না হলে ধর্মঘট চলবে। তবে জরুরী বিভাগ এ কর্মসূচীর আওতামুক্ত থাকবে বলে জানান তিনি। ওসমানী হাসপাতালের উপ-পরিচালক ডা. আব্দুস সালাম জানান, আন্দোলনকারীদের সাথে আলোচনা করে ঘটনার সুষ্ঠু সমাধানের চেষ্টা চলছে।
চিকিৎসককে লাঞ্ছনাকারী এক ছাত্রলীগ নেতাকে পুলিশ আটক করার পর কাজে মনোনিবেশ করেন তারা। বুধবার রাত ১০ টার দিকে হাসপাতালের পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে আসে। হাসপাতাল সূত্র জানায়, সন্ধ্যার দিকে নগরীর রাজার গলির পায়রা ৭৫ বাসার আব্দুর রশীদ (৭০) নামের এক বৃদ্ধ হাসপাতালে মারা যান। এ ঘটনায় তার ছেলে স্থানীয় ছাত্রলীগ নেতা জহুরুল ইসলাম (২৬) কর্তব্যরত চিকিৎসককে মারধর করে। পরে অন্যান্য চিকিৎসকরা জহুরুলকে আটক করে হাসপাতালের দরজায় তালা মেরে দেন। ফলে এক প্রকার অঘোষিত ধর্মঘট শুরু হয়। খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে জহুরুলকে আটক করলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। হাসপাতালের দরজায় লাগানো তালা খুলে ফেলা হয়।